ইয়াবা ‘চোরাকারবারী’ গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ৩ কিমি জুড়ে ব্যারিকেড
মুন্সীগঞ্জের চরাঞ্চলের আলোচিত অবৈধ অস্ত্র ও মাদক ‘চোরাকারবারী’ হিসেবে অভিযুক্ত ইউসুফ হাসান ওরফে ইউসুফ ফকিরকে (৪০) মাদকসহ গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১। গ্রেপ্তারের পর তার সহযোগীরা গাছ, সিমেন্টের খুঁটিসহ নানা কিছু ফেলে এবং পাটখড়ির স্তূপে আগুন ধরিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার সড়ক জুড়ে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে।
গতকাল রাত পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আজ (৪ সেপ্টেম্বর) ভোররাত ১টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখার সময় ইউসুফ ফকিরকে শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুলে র্যাব-১১ ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদ এবং তার দেওয়া তথ্য মতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের প্রস্তুতিও চলছিলো বলে জানা যায়।
সূত্র জানায়, সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুরে গ্রামের অভিযান চালিয়ে অন্তত ৫ মামলার আসামি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রার্থী ইউসুফ হাসানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। তার কাছ থেকে ৪০৫ পিস ইয়াবা, দুই বোতল বিয়ার, মাদক বিক্রির ৬ লাখ ৮ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেসময় তার সহযোগী মিল্টন মল্লিক, জাহাঙ্গীর সরকারসহ ৭/৮ জন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
ইউসুফ হাসান মহেশপুর গ্রামের মৃত লাল মিয়া ফকিরের ছেলে।
র্যাব-১১ এর কমান্ডার পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, চরাঞ্চলের মাদক ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী কয়েকটি মামলার আসামি ইউসুফ ফকিরের মহেশপুরের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেসময় তাকে মাদক ও মাদক বিক্রির টাকাসহ আটক করা হয়।
তবে তার সহযোগী তাকে ছাড়িয়ে নিতে দীর্ঘ পথ জুড়ে নানা তাণ্ডব চালায়। প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কে অন্তত ২০টি পয়েন্টে গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে রাখে। আগে কাটা গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দেয়। সিমেন্টের খুঁটিসহ নানান কিছু ফেলে রাস্তা বন্ধ করার অপচেষ্টা চালায়। জায়গায় জায়গায় পাটখড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে র্যাবের পথ রোধ করার চেষ্টা করে।
এমনকী, নারীরা র্যাব সদস্যদের ঘেরাও করার চেষ্টা করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বলেও জানান তিনি। বলেন, এখন তার (ইউসুফ ফকির) দেওয়া তথ্য মতে অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চলছে।
খবর পেয়ে রাতেই সদর থানা পুলিশের একাধিক দল মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর ও আশপাশের গ্রামে অবস্থান নেয়।
গ্রামবাসীর সূত্রে জানা যায়, ইউসুফ হাসানকে গ্রেপ্তার করার পরপরই তার সহযোগীরা একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। র্যাব এলাকায় অবস্থান করার সময় পুরুষরা নিরাপদ দূরত্বে থাকলেও নারীদের আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) খন্দকার আশফাকুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে রাতেই সদর থানা পুলিশের একাধিক দল ঘটনাস্থলে যায়। মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মহেশপুর ও আশপাশের গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিচুর রহমান জানান, ইউসুফ ফকিরের বিরুদ্ধে বিস্ফোরকসহ অন্তত পাঁচটি মামলা রয়েছে।
“ইউসুফ ফকিরের গ্রেপ্তারের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি,” উল্লেখ করে তিনি জানান আজ সকাল ১১টায় জানান, “আসামি র্যাবের কাছেই আছে।” তিনি বলেন, “এলাকার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। র্যাবের অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Comments