রহমত-আসগরের ব্যাটে আফগানিস্তানের দিন

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শুরুর দুই ঘণ্টায় টার্ন আর অসমান বাউন্সে আফগানিস্তানকে অস্থির করে ফেলেছিলেন স্পিনাররা।  কিন্তু পরের দুই সেশনে বাংলাদেশের স্পিনারদের অস্থির বানিয়ে ছেড়েছেন রহমত শাহ আর আসগর আফগান। দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রথম দিনটা নিজেদের করে নিয়েছে সফরকারীরা। 

বৃহস্পতিবার একমাত্র টেস্টে প্রথম দিন শেষে   ৫ উইকেটে ২৭১ করে ফেলেছে আফগানিস্তান। দেশের ইতিহাসে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে রহমত শাহ করেন ১০২, আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান আসগর আফগানও আছেন সে পথে। দিনশেষে ৮৮ রানে অপরাজিত তিনি। ৩৫ রানে অপরাজিত সঙ্গী আসার জাজাইকে নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন তিনি। টার্নে ভরা উইকেট হওয়ায় প্রথম দিন শেষে এত রান হয়ে যাওয়ায় বেশ শক্ত অবস্থানে চলে গেছে আফগানরা।

পেসার ছাড়া বাংলাদেশের একাদশ নামানোয় আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল উইকেটের ধরনের। প্রথম সেশনে বাস্তবেও দেখা মিলল তা। বাংলাদেশের স্পিনারদের ঘূর্ণিতে শুরুতেই কাবু হয়ে পড়েছিল আফগানিস্তান। অথচ দিনের বাকি দুই সেশন দেখে কে মনে রাখবে প্রথম দুই ঘণ্টার কথা!

কৃতিত্ব দিতে হবে আফগানিস্তানকেই। উইকেটের বাও বুঝে নিয়ে ব্যাট চালিয়ে তারা। তাইজুল ইসলাম, সাকিব আল হাসানদের হতদম্য করে দিয়ে টিকে থেকেছে তারা, বাড়িয়েছে রান। 

ইনিংসের ত্রয়োদশ ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেক থ্রো এনে দেন তাইজুল ইসলাম। দুই আফগান ওপেনারের অতি সাবধানি শুরুর পর তাইজুল হানেন আঘাত। তার মিডল স্টাম্প বরাবর পড়া বল টার্ন করে খানিকটা বেরিয়ে গেলে তাতে পরাস্ত হয়ে স্টাম্প খোয়ান ইসহানুল্লাহ জানাত।

প্রথম ২০ ওভারে অতি রক্ষণাত্মক খেলতে গিয়ে মাত্র ৩০ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। সেই জড়তা থেকে বেরুতে আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান অ্যাপ্রোচ বদলে হয়ে যান আগ্রাসী। কিন্তু শট নির্বাচনে ভুল করে তাইজুলকেই মিড অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরত যান তিনি।

তিনে নামা রহমত শাহ শুরু থেকেই ছিলেন ইতিবাচক। প্রতিটি স্কোরিং শটের সুযোগ কাজে লাগানোর তাগিদ নিয়ে নেমেছিলেন। হাসমুতুল্লাহ শহিদির সঙ্গে জুটি জমে উঠতেই পারত। এই সময়ে দুই অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ আর নাঈম হাসানও ছিলেন বেশ মলিন। সাকিব তাই অনিয়মিত মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে আসেন আক্রমণে। তাতেই হয় কাজ। হাসমতুল্লাহ মাহমুদউল্লাহর বলে স্লিপে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দিলে প্রথম সেশনটা বাংলাদেশেরই হয়ে যায়।

আসগরকে নিয়ে দ্বিতীয় সেশনে নেমে সেই হিসেব পুরো ঘুরিয়ে দেন রহমত। বাংলাদেশের স্পিনারদের ধারহীন করে দিয়ে এই জুটি বাড়াতে থাকে রান। তাইজুল শুরু থেকেই ছিলেন লাইন-লেন্থে নিখুঁত। কিন্তু সাকিব রাখতে পারেননি তাল। বেশ কিছু আলগা বল বেরিয়ে যায় তার হাত থেকে। আলগা বল দেন নাঈমও। মিরাজ অতটা খরুচে না থাকলেও ব্যাটসম্যানদের সমস্যা ফেলবার মতো বল করতে পারেননি। সুযোগে থিতু হতে সময় লাগেনি আসগরের।

দ্বিতীয় সেশনের পুরোটাই ব্যাট করে এই সময়ে ১১৪ রান তুলে নেন তারা। চা বিরতির পর এসে রহমত আফগান ইতিহাসের প্রথম সেঞ্চুরিও করে ফেলেন অনায়াসে। কিন্তু সেঞ্চুরির পরের বলেই হয়েছেন কুপোকাত। নাঈমের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে দেন ক্যাচ। খানিক পর নাইম পান আরেক উইকেট। প্রথম দুই সেশনের বিবর্ণ হাল কাটিয়ে স্কিড করা বলে বোল্ড করে দেন মোহাম্মদ নবিকে।

কিন্তু এরপর ফের ঘুরে দাঁড়ায় আফগানিস্তান। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে আসার জাজাইকে নিয়ে ৭৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দিন পার করেন অভিজ্ঞ আসগর। এই জুটিতে শেষ সেশনও নিজেদের করে নেয় আফগানিস্তান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

(প্রথম দিন শেষে)

আফগানিস্তান:  ৯৬ ওভারে ২৭১/৫ (ইব্রাহিম ২১, ইসহানুল্লাহ ৯, রহমত ব্যাটিং ১০২, শহিদি ১৪, আসগর ব্যাটিং ৮৮*, নবি ০, আসার ব্যাটিং ৩৫* ; তাইজুল ২/৭৩  , সাকিব ০/৫০, মিরাজ ০/৫৯, নাঈম ২/৪৩, মাহমুদউল্লাহ ১/৯ , সৌম্য ০/২৬, মুমিনুল ০/৯, মোসাদ্দেক ০/১)

Comments

The Daily Star  | English

50% of bank directors to be independent

The interim government is set to amend the Bank Company Act by reducing the board members from a single family, the BB governor tells The Daily Star

12h ago