অমীমাংসিত ইস্যুতে ভারত থেকে ইতিবাচক সাড়া প্রত্যাশা করছি: প্রধানমন্ত্রী

PM
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, একাদশ জাতীয় সংসদ অধিবেশনের প্রশ্নোত্তর পর্বে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

ভারত সফরের আগে প্রতিবেশী দেশটির কাছ থেকে তিস্তার পানি বণ্টনসহ বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যুতে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ (১১ সেপ্টেম্বর) সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের (কিশোরগঞ্জ-৩) তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী যে দুদেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যাগুলো শিগগিরই সমাধান করা হবে। আমার ভারত সফরের আগে আমরা পূর্বোক্ত বিষয়গুলিতে ইতিবাচক ফল পাবো বলে আশা করছি।”

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ভারতীয় চ্যাপ্টার আয়োজিত ইন্ডিয়া ইকোনমিক ফোরামে যোগ দিতে ৩-৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর করার কথা রয়েছে। ৩-৪ অক্টোবর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

শেখ হাসিনা এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৫ অক্টোবর দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, “ভারত সফরকালে তিনি তিস্তাসহ সাধারণ নদ-নদীর পানি ভাগাভাগির বিষয়টি নিয়েও নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলবেন।”

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের খুবই সুসম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পারস্পরিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের নতুন ক্ষেত্রে নতুন দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ভারতের সঙ্গে নিরাপত্তা, ব্যবসা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, পরিবেশ, শিক্ষা, অবকাঠামো উন্নয়ন, সংস্কৃতি এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।”

“এছাড়াও ব্লু ইকোনমিসহ পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার, মহাকাশ গবেষণা এবং সাইবার সুরক্ষাসহ অন্য বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে”, যোগ করেন তিনি।

তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তির বিষয়ে হাসিনা বলেন, “চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য তার সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বিষয়টি দুই দেশের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ের সামনে রাখা হচ্ছে।”

“ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এ চুক্তি সম্পাদন এখনও সম্ভব হয়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরকালে তাদের সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় তিস্তা পানিবণ্টন সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন,” যোগ করেন তিনি।

জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার (সংরক্ষিত আসন-৫০) এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ হত্যার রাজনীতি করে না। আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। যদি আমরা তা করতাম তাহলে এ দেশে বিএনপির অস্তিত্ব থাকতো না। কারণ, আমাদের চেয়ে কেউ বেশি বিএনপির হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়নি।”

বিএনপির নারী সংসদ সদস্য তার প্রশ্নে বলেন যে, এখন দেশে মানুষ হত্যা থেকে মশা মারা পর্যন্ত সব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রয়োজন হয়। যা রাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ভেঙে পড়া ও অকার্যকর হওয়ার ইঙ্গিত।

রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর সফলতা একটি কার্যকর রাষ্ট্রের পূর্বশর্ত উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন রাখেন যে, অকার্যকর প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের সার্বিক ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরে কী না।

জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, “তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা, যিনি এ দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।”

“তার কন্যা হিসেবে জনগণের প্রতি আমার আলাদা দায়বদ্ধতা রয়েছে। যে কারণে আমি দিনরাত পরিশ্রম করি। অকার্যকর নয়, সব প্রতিষ্ঠানকে আরও সক্রিয় রাখার জন্য আমি সর্বদা সচেষ্ট থাকি,” যোগ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি তুলে ধরেন, যা আওয়ামী লীগ সরকারের নিরলস প্রচেষ্টা ও মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে অর্জিত হয়েছে।

এসব অর্জন আপনা-আপনি হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর থাকলে এমন সফলতা অর্জন সম্ভব হত না।”

শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ, রাষ্ট্রযন্ত্র ভালোভাবে কাজ করছে। কাজ করার বদলে তার (রুমিন) নেত্রী খালেদা জিয়ার মতো দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালে কি প্রশ্নকারী খুশি হতেন?”

বিএনপি অকার্যকর রাষ্ট্রের উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল উল্লেখ করে তিনি খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানকে ইঙ্গিত করে বলেন, “রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এমন ব্যক্তির কাছ থেকে আসতো, যিনি রাষ্ট্রযন্ত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী ঘুমিয়ে থাকতেন এবং তার ছেলে হাওয়া ভবন থেকে সিদ্ধান্ত দিতো। মন্ত্রী ও সচিবরা হাওয়া ভবন থেকে নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকতেন।”

রুমিন তার প্রশ্নে মানুষ ও মশা মারাকে একই সমতলে নিয়ে আসায় প্রধানমন্ত্রী সমালোচনা করে বলেন, “তার প্রশ্ন অনাকাঙ্ক্ষিত, অসংসদীয় ও অবান্তর।”

Comments

The Daily Star  | English

Trump says not yet made decision on whether to attack Iran

Israel army says struck Iran centrifuge production, weapons manufacturing sites

1d ago