নাগরিকপঞ্জি ইস্যুতে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল-বিজেপির পাল্টাপাল্টি অবস্থান

mamata banerjee
১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, কলকাতায় নাগরিকপঞ্জির প্রতিবাদে পদযাত্রায় অংশ নেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: স্টার

জাতীয় নাগরিকপুঞ্জি বা এনআরসি ইস্যুতে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এনআরসির বিরুদ্ধে পথে নেমেছে।

অন্যদিকে, বিজেপির পাল্টা হুংকার- বাংলাদেশ থেকে মুসলিম রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারী এনে ভোটবাক্সে প্রভাব ফেলেছেন মমতা। তাই, এনআরসি করে তাদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে নেওয়া হবে।

এনআরসির বিরুদ্ধে সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিধানসভা একটি বিল পাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই বিলকেও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে বিরোধী বিজেপি শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব।

আজ (১২ সেপ্টেম্বর) কলকাতার অদূরে সিঁথির মোড় থেকে এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে পদযাত্রায় অংশ নেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় চার কিলোমিটার পথে পায়ে হেঁটে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে সংক্ষিপ্ত একটি পথসভাতেও বক্তব্য রাখেন তৃণমূল সভানেত্রী।

সেসময় মমতা ব্যানার্জি বলেন, “দেশজুড়ে তীব্র অর্থনৈতিক মন্দা। সেদিক থেকে নজর সরাতে এনআরসির মতো বিভাজনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে বিজেপি।”

“আসামের এনআরসি থেকে ১১ লাখ হিন্দু নাগরিককেও বাদ দেওয়া হয়েছে” উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “স্বাধীনতার পরও দেশের মানুষকে কতোবার নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে?”

পশ্চিমবঙ্গ থেকে একজন মানুষকেও তাড়ানোর চেষ্টা করা হলে তার ফল ভালো হবে না বলেও হুঁশিয়ারি করে দেন মমতা।

মমতা বলেন, “আমি বেঁচে থাকতে এনআরসি করতে দেবো না। আর আমি মরে গেলেও এখানে চারটা প্রজন্ম আছে। আমি সেই প্রজন্ম তৈরি করে গেছি।”

এক ঘণ্টার সেই পদযাত্রা ভারতীয় সময় বিকাল ৩টা থেকে এই পদযাত্রা শুরু হয়। শ্যামবাজারে পদযাত্রা শেষেই মমতা তার সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন। সেসময় কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, কলকাতা করপোরেশনের চেয়ারপার্সন সাংসদ মালা রায়, ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পান্ডে ছাড়াও বেশ কয়েকজন শীর্ষ তৃণমূল নেতাকেও প্রতিবাদ মঞ্চে দেখা গিয়েছে।

এদিকে মমতার এই প্রতিবাদের তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি সন্ধ্যায় রাজ্য বিজেপি সদর দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আসামের মতোই এই রাজ্যে এনআরসি হবে। তবে মমতা ক্ষমতা থাকতে নয়, ক্ষমতা থেকে গেলেই হবে।”

তিনি আরো বলেন, “মমতা ব্যানার্জি সংসদের তিন তালাক ইস্যুতেও বিরোধিতা করেছিলেন কিন্তু, তা ঠেকাতে পারেননি। আসামের এনআরসি নিয়েও বিরোধিতা করেছিলেন পারেননি। এবার পশ্চিমবঙ্গে করা হবে সেটাও তিনি করতে পারবেন না।”

তার মতে, বাংলাদেশ থেকে ২ কোটি অনুপ্রবেশকারী ভারতের প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ১ কোটি বাকিরা অন্য রাজ্যে চলে গেছেন।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে হিন্দুরা আসলে ভারতের জায়গা দেওয়া হলেও মুসলিমদের তাড়ানো হবে বলে জানান ওই শীর্ষ বিজেপি নেতা। দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমরা অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়াবো।”

Comments

The Daily Star  | English

First day of tariff talks ends without major decision

A high-level meeting between Bangladesh and the Office of the United States Trade Representative (USTR) ended in Washington yesterday without a major decision, despite the looming expiry of a 90-day negotiation window on July 9.

2h ago