লালমনিরহাটে চাতালে বিষ দিয়ে পাখি হত্যা, এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ

বিষ প্রয়োগে মারা গেছে ঘুঘু, কবুতর, চড়ুইসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। ছবি: এস দিলীপ রায়

বিষ প্রয়োগ করে বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক পাখি হত্যার অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের এক ধান চাতাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।

আজ শনিবার সকালে জেলা শহরের আপন পাড়া এলাকায় সিটি অটো রাইস মিলে এ ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পাখি হত্যার ঘটনায় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী দোষী ব্যক্তির বিচার দাবি করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, ওই এলাকার আবুল কাশেমের চালকল ‘সিটি রাইস মিল’ কিছুদিন আগে মহেন্দ্রনগর এলাকার মানিক মিয়া নামের এক ধান-চাল ব্যবসায়ী ধান শুকানোর জন্য ভাড়া নেন। গতকাল শুক্রবার ওই চাতালের পাশে কয়েকটি ঘুঘু ও কবুতর মরে পড়ে থাকেন স্থানীয়রা। প্রথমে তারা এটিকে এড়িয়ে গেলেও আজ শনিবার সকালে শতাধিক ঘুঘু, কবুতর, চড়ুই পাখি মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

আপন পাড়া এলাকার কোহিনুর বেগম (৪৬) বলেন, আমার তিনটি কবুতর মারা গেছে। আমার মতো অনেক প্রতিবেশীর কবুতর মারা গেছে।

ওই এলাকার মোতালেব হোসেন (৫২) জানান, মানিক মিয়া খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে চাতালে ছিটিয়ে দিয়ে পাখিগুলো হত্যা করেছেন। এভাবে পাখি হত্যা করে অপরাধ করেছেন তিনি। আমরা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তি দাবি করছি।

ওই চাতাল থেকে শতাধিক মৃত পাখি পাওয়া গেছে জানিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দা আজিজার রহমান বলেন, “আমরা প্রণিসম্পদ বিভাগ ও পুলিশকে খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে এনেছি। কিন্তু চাতাল ব্যবসায়ী পালিয়ে গেছেন।”

চাতাল মালিক মানিক মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন তিনি সবসময় চাতালে যান না। শ্রমিকরাই সেখানে ধান শুকানোর কাজ করেন আর তারাই দেখভাল করেন। মরা পাখির ব্যাপারে তিনি শুনেছেন কিন্তু কী কারণে পাখিগুলো মারা গেছে সেটা জানা নেই বলে তিনি দাবি করেন।

তবে ওই চাতালের শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম (৪২) বলেন, ধান শুকানোর সময় প্রতিদিনই পাখিগুলো ধান খেয়ে ফেলে। পাখির অত্যাচার থেকে ধান রক্ষা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। বৃষ্টি থেকে ধান রক্ষার্থে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হলে ভোর থেকেই পাখিগুলো পলিথিন ফুটো করে ফেলে। সে কারণে খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে পাখিগুলোকে হত্যা করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনা জানার পর পরই সদর থানা পুলিশ প্রাণিসম্পদ বিভাগের লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এর পরপরই সেখানে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাও আসেন।

এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মকবুল হোসেন জানান, বিষয়টি পরিবেশ অধিদপ্তরের অধীনে। তবে আমরা আহত কয়েকটি পাখিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য মৃত কয়েকটি পাখির নমুনা সংগ্রহ করেছি।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুইচিং মারমা জানান,  বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে এভাবে পাখি হত্যা দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এই অপরাধের জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা এবং এক বছর কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। ধান চাতালে পাখি হত্যার ঘটনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে মামলা দায়ের করা হবে বলে তিনি জানান।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

7h ago