খুশিতে সারারাত ঘুমাতে পারেননি আমিনুল
একটি ফোন কলই যেন পাল্টে দিয়েছে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের সবকিছু! এই কদিন আগেও তিনি ছিলেন অচেনা-অজানা কেউ। জাতীয় দলে প্রথমবার ডাক পেয়ে চলে আসেন আলোচনায়। আর অভিষেকে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সঙ্গে উইকেট শিকার করায় এই তরুণ লেগ স্পিনার এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের বাংলাদেশ দলে তার অন্তর্ভুক্তিতে চমকে গিয়েছিলেন প্রায় সবাই, আমিনুল জানালেন, তিনি নিজেও কতটা রোমাঞ্চিত হয়েছিলেন খবরটি জেনে। বিস্ময়ের ঘোর যেন তার কাটছিলই না। খুশির তোড়ে সারারাত তার গিয়েছিল নির্ঘুম।
আগের দিন চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে আমিনুলের। লেগ স্পিনার হিসেবে জায়গা পাওয়া এই ১৯ বছর বয়সী তরুণ নজর কেড়েছেন প্রথম ম্যাচেই। ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৮ রান খরচায় উইকেট নিয়েছেন ২টি। ডট দিয়েছেন নয়টি। তাতে আমিনুলকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বাড়তি আগ্রহ। কেননা একজন লেগ স্পিনারের হাহাকার বাংলাদেশের বহুদিনের। ক্যারিয়ারের শুরুর ম্যাচেই ঝলক দেখানোর পর তাই বৃহস্পতিবার তাকে মুখোমুখি হতে হয় সাংবাদিকদের।
প্রথমবার দলে ডাক পাওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে আমিনুল বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ শেষে সোহেল স্যার (বিসিবির কোচ) আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। ফোন দিয়ে বলেন, “তুই কি কিছু জানিস?” আমি বললাম, “না স্যার, কিছু তো জানি না।” এরপর তিনি বললেন যে, “আচ্ছা ঠিক আছে। অপেক্ষা কর। ভালো একটি সংবাদ পাবি।” এরপর সাব্বির ভাই (লজিস্টিকস ম্যানেজার) আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, “কংগ্র্যাচুলেশনস, তোমাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়েছে।” এরপর সারা রাত ঘুমাতে পারিনি খুশিতে। প্রথমবারের মতো তো, সেই কারণে।’
জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর অভিষেকের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি আমিনুলকে। তাতে স্বপ্ন পূরণের অপার্থিব আনন্দ পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে স্বপ্নের নায়কদের সতীর্থ হিসেবে পাওয়াটাও নিজের জন্য বিশাল প্রাপ্তি মনে করছেন তিনি, ‘এটি আসলে সবার স্বপ্ন থাকে যে, আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে। আমার অনেক ভালো লাগছিল যে, ছোটবেলা থেকে যাদের খেলা দেখে আসছিলাম, তাদের সঙ্গে খেলতে পারছি। তাদের সঙ্গে খেলা একটি স্বপ্ন এবং একসঙ্গে খেলতে পারা অনেক গর্বের ব্যাপার।’
প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামলেও মাঠে আমিনুলকে নড়বড়ে দেখায়নি। বরং তিনি ছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসী। আগ্রাসী মনোভাবও দেখা গেছে। মানসিক চাপ জয় করার পেছনে তিনি কৃতিত্ব দিচ্ছেন দলের অভিজ্ঞ তারকাদের, ‘ম্যাচের শুরুর দিকে আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। তবে এত অভিজ্ঞ মানুষরা (সাকিব আল হাসান-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ) যখন সাপোর্ট করে এবং বলে যে, চিন্তার কিছু নেই, তুই তোর স্বাভাবিক খেলা খেলে যা, তখন আসলে আপনাআপনি আত্মবিশ্বাস চলে আসে। আমি শুধু এটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি।’
Comments