ভারতের কাছে বাংলাদেশের আরও একটি হার
অনেক দিন থেকেই ভারতের বিপক্ষে হার যেন অবধারিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের। তা সে যে কোন পর্যায়েই হোক। এবার আরও একবার ভারতের কাছে হারল দলটি। লাখনৌতে প্রথম ওয়ানডেতে ভারত অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে ৩৪ রানের বড় ব্যবধানের হারের স্বাদ পেয়েছে অতিথিরা। আগের দিন ম্যাচটি বৃষ্টি হওয়ায় রিজার্ভ ডে'তে গড়িয়েছিল ম্যাচটি।
কদিন আগেই ভারত যুব এশিয়া কাপের ফাইনালে তীরে এসে তরী ডোবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। এর আগেও একই পরিণতি হয়েছিল জুবাদের। আর জাতীয় দল তো সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবারই জয়ের খুব কাছে গিয়েও হেরেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিশ্চিত জয় হাতছাড়া করেছে। হেরেছেন এশিয়া কাপ ও নিদাহাস ট্রফিতেও। সবগুলো হারই ছিল খুব কাছে গিয়ে। এর আগেও এমনটা বহুবারই হয়েছে। সে ধারাবাহিকতা রইল লাখনৌতেও।
অথচ বোলারদের সৌজন্যে লক্ষ্যটা সাধ্যের মধ্যেই ছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় তা আর করতে পারেনি দলটি। ১৯৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় শুরু থেকেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে দলীয় ৪৬ রানেই টপ অর্ডারের ৫টি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দলটি। এরপর আরিফুল হককে নিয়ে দলের হাল ধরেন জাকির হাসান। পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি গড়ে চাপ সামলে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
কিন্তু অতিথিরা বড় ধাক্কাটাটি খায় জাকির হাসানের ইনজুরিতে। দারুণ খেলতে থাকা এ ব্যাটসম্যান চোটে পড়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। এরপর মেহেদী হাসানকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন আরিফুল। কিন্তু এ জুটি ভাঙতেই ফের নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। ২৪ রানে শেষ চার উইকেট হারালে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। ৮ বল বাকী থাকতে ১৫৮ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রান করেছিলেন জাকির। ৬৭ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ৭২ বলে ৩টি চারে ৩৮ রান করেন আরিফুল। ভারতের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন শুভাং হেজ, ঋত্বিক শোকিন ও ইয়াশাসভি জইসওয়াল।
তবে দিনের শুরুটা ছিল বেশ ভালো ছিল বাংলাদেশের। শুরুতেই শূন্য হাতে ওপেনার ইয়াশাসভিকে ফেরান অবু হায়দার। এরপরই অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। দ্বিতীয় উইকেটে মাধব কৌশিককে সঙ্গে নিয়ে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান শারাথের ৬৪ রানের জুটি। ফের ভারতীয় শিবিরে আক্রমণ চালায় বাংলাদেশ। দ্রুত ৩ উইকেট তুলে নেয়।
এরপরও নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নিয়েছে সফরকারীরা। কিন্তু এক প্রান্তে আরিয়ান জুয়াল টিকে থেকে ছোট ছোট জুটিতে ইনিংস লম্বা করেন। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯২ রান তোলে ভারত।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ রান করেন আরিয়ান। ৮৬ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় এ রান করেন তিনি। শারাথের ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। বাংলাদেশের পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন মেহেদী হাসান। ২৯ রানের খরচায় পেয়েছেন ৩টি উইকেট। ২টি উইকেট নিয়েছেন আবু হায়দার রনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ৫০ ওভারে ১৯২/৯ (ইয়াশাসভি০, মাধব ২০, শারাথ ৪২, প্রিয়াম ৪, ঋত্বিক ১৮, আরিয়ান ৬৯, আতিত ১২, শুভাং ৯, শোকিন ৪, আর্শদিপ ৬, সৌরভ ০; হায়দার ২/৩৭, শফিকুল ১/২৬, রবিউল ১/৩৭, আরিফুল ০/২৩, মেহেদী ৩/২৯, আল-আমিন ০/১৩, সাইফ ২/২৩)।
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল: ৪৮.৪ ওভারে ১৫৮/৯ (সাইফ ১২, সাব্বির ০, ইয়াসির ৬, জাকির ৪৮*, আল-আমিন ৪, জাকের ৩, আরিফুল ৩৮, মেহেদী ২০, হায়দার ০, রবিউল ২১, শফিকুল ১*; আর্শদিপ ১/২৫, সৌরভ ১/২৭, আতিত ১/১১, শুভাং ২/৩২, ঋত্বিক ২/৩২, ইয়াশাসভি ২/৩১)।
ফলাফল: ভারত ৩৪ রানে জয়ী।
Comments