ফিরে পাওয়া ছন্দই দিচ্ছে আশা, হুমকি দিচ্ছে আকাশ
র্যাঙ্কিং, ফর্ম ও স্কিল, টি-টোয়েন্টিতে সব কিছুতেই বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আফগানিস্তান। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তো রশিদ খানদের বড় দলই বলছেন। সে হিসেবে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে ওদেরই ফেভারিট থাকার কথা। কিন্তু টুর্নামেন্টের শুরুর মলিন দশা কাটিয়ে বাংলাদেশও যে পেয়ে গেছে ছন্দ। আসরের উত্থান পতনের পর ফাইনালের আগে দুদলই তাই সমান পাল্লায়, ইঙ্গিত মিলছে জম্পেশ লড়াইয়ের। তবে সে লড়াইয়ে জল ঢেলে দিতে ঢাকার আকাশ দিচ্ছে বৃষ্টির হুমকি।
লিগ পর্বের ছয় ম্যাচ শেষে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনালে নামবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। লিগ পর্বে তিন ম্যাচ জিতে অবশ্য আফগানদের চেয়ে বেশি পয়েন্ট নিয়েই ফাইনালে উঠেছে সাকিব আল হাসানের দল।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারতে হারতে জেতার পরের ম্যাচেই আফগানদের কাছে উড়ে যায় বাংলাদেশ। সাকিবরা পড়েন তুমুল সমালোচনার মধ্যে। তবে চট্টগ্রাম পর্ব বদলে দিয়েছে টুর্নামেন্টের গতিপথ। চট্টগ্রামে গিয়ে আফগানরা যেখানে বাকি দুই ম্যাচই হেরেছে, সেখানে বাংলাদেশ জিতেছে দুটিতেই। অর্থাৎ সবশেষ দুই ম্যাচেই হেরেছে আফগানরা, আর জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
রশিদদের পারফরম্যান্সের গ্রাফ পড়তির মাঝে রেখা উর্ধ্বগামী সাকিবদের। ঠিক এই জায়গাতেই শিরোপা জেতার আশা বাংলাদেশের। কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর মতে খুব মাঝারি মানের ক্রিকেট খেলেই এতদূর এসেছেন তারা। সেরাটা দিতে না পারার খচখচানি পীড়া দিচ্ছে গোটা দলকেই। তবে তার একটা ইতিবাচক দিকও আছে, ক্ষিদেটা জমে থাকায় ফাইনাল মঞ্চে সবটা পুষিয়ে দেওয়ার আশা বাংলাদেশ কোচের, ‘আমরা এখনও নিখুঁত ক্রিকেট খেলতে পারিনি। কিছু কিছু জায়গায় আমরা ভালো ছিলাম, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গড়পড়তা। আমরা এখনও সেরাটা খেলাটা দেখানোর পথ খুঁজছি। যেমন, আমরা কেবল ২ উইকেট হারিয়ে শেষ ৫-৬ ওভারে যেতে পারিনি। প্রথম ১০ ওভারে আমরা অনেক বেশি উইকেট হারিয়ে ফেলেছি। আমাদের চাওয়া, ২ উইকেটে হারিয়ে ১৫ ওভার শেষ করা। তাতে শেষ দিকে ঝড় তোলার ভিত গড়ে উঠবে। এটায় মনোযোগ দিতে হবে। আশা করি ফাইনালে সেটি পারব।’
দুর্বার মেজাজে টুর্নামেন্ট শুরু করে মাঝপথে খেই হারানো আফগানরা অবশ্য তেতো অভিজ্ঞতা ঝেড়ে ভুলত্রুটি শুধরে ফাইনাল নিজেদের করে নিতে চায় বলে জানিয়েছেন রশিদ, ‘আমরা প্রথম দুই ম্যাচ জেতার পর, পরের দুই ম্যাচ হেরেছি। এর থেকে ইতিবাচকটা নিতে হবে। যা গেছে গেছে। ফাইনালেই সব মনোযোগ দিতে হবে। মূল জায়গায় ফোকাস ঠিক রাখতে হবে এবং ভুলগুলো আবার করা যাবে না। ঢাকা পর্বে আমরা যেমন খেলেছিলাম তেমন খেলতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো আমরা ফাইনালে আছি।’
দুদলই উত্তেজনার পারদ চড়াচ্ছে, দিচ্ছে আগ্রাসী ঝাঁজের আভাস। কিন্তু সব আগুনে জল ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ঢাকার আকাশ। আবহাওয়া সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি ফাইনাল মঞ্চও ভিজিয়ে দিতে পারে। শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির জন্য খেলা না হলে অতৃপ্তি থেকে যাবে দুদলেরই। কারণ বাইলজ অনুযায়ী, এই টুর্নামেন্টে নেই কোনো রিজার্ভ ডে। বিবেচিত হবে না লিগ পর্বে জেতার হিসাবও। অর্থাৎ খেলা না হলে শিরোপা ভাগাভাগি করতে হবে সাকিব-রশিদদের। নিশ্চিতভাবে তারা কেউই এমনটা চাইছেন না।
Comments