পাকিস্তান সফরের কথা ভাবছে বিসিবি!
২০০৯ সালে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের উপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পাকিস্তানে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ হয় না। সীমিত পরিসরে কয়েকবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হলেও দশ বছরেও সে দেশে হয়নি টেস্ট খেলা। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড কিংবা ইংল্যান্ড সবার সঙ্গেই নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টেস্ট খেলে আসছে পাকিস্তান। কিন্তু আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচসহ ওই দেশে দল পাঠানোর কথা ভাবছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
রোববার বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন তা জানতে খোঁজ খবর নিতে শুরু করেছেন তারা। শীঘ্রই সরকারের একটি পর্যবেক্ষক দল নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে পাকিস্তান সফর করবে বলেও জানান তিনি।
আইসিসির ফিউচার ট্যুর প্লান (এফটিপি) অনুযায়ী ২০২০ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওদের হোম সিরিজ হিসেবে দুই টেস্ট ও তিনটি টি-টোয়ন্টি খেলার কথা বাংলাদেশের। টেস্ট দুটি আবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপেরও অংশ। তবে নিরাপত্তাজনিত কারণে যেহেতু পাকিস্তানে নিয়মিত খেলা হয় না, সিরিজটি কোথায় হবে তা নিয়ে আছে সংশয়।
অন্য যেকোনো দলের বিপক্ষে পূর্নাঙ্গ সিরিজ থাকলে চলমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ ভেন্যু ছাড়া আর কিছুই থাকে না আলোচনায়। তবে বিসিবি সিইও জানালেন, পাকিস্তানের হোম সিরিজ পাকিস্তানে গিয়ে খেলা যাবে কিনা সেটাই তলিয়ে দেখছেন তারা, ‘আপনারা জানেন যে এফটিপি কমিটমেন্ট অনুযায়ী আমাদের ট্যুর আছে ওখানে (পাকিস্তানে)। দুইটা টেস্ট ম্যাচ এবং তিনটা টি-টোয়েন্টি সম্ভবত। পাকিস্তান তাদের ভেন্যু হিসেবে দুবাই বা অন্য দুএকটা জায়গা বেছে নিয়েছে। এছাড়া শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল পাকিস্তান সফর করছে।’
সম্প্রতি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে লঙ্কান মূল দলের অনেক ক্রিকেটারই নিরাপত্তার কারণে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এই সফর থেকে।
সবচেয়ে বড় কথা বিশেষ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি আয়োজিত হলেও ২০০৯ সালের হামলার পর পাকিস্তানে এখনো পর্যন্ত টেস্ট ম্যাচ আয়োজিত হয়নি। এসব সীমিত পরিসরের সিরিজে ক্রিকেটারদের চলাফেরাতেও ছিল ভীষণ কড়াকড়ি। এরকম দমবন্ধ পরিবেশে টেস্ট খেলা সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও, নিজামউদ্দিন আভাস দিলেন, নিরাপত্তার ব্যাপারটা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারাও কিন্তু পাকিস্তানকে শুরুতেই ‘না’ করে দিচ্ছেন না তারা, ‘আমাদের দলগুলোর বিদেশ সফরের ব্যাপারে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তারমধ্যে একটা হচ্ছে নিরাপত্তা ছাড়পত্র। সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর হাইকমিশনের সঙ্গে। তাদের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে একটা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিসিবি চাইছে শ্রীলঙ্কার পাকিস্তান সফর চলার মাঝেই সেদেশের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে। সেজন্য কাজ অনেকটাই এগিয়ে এনেছেন তারা, ‘আমরা বাংলাদেশ হাইকমিশনের (পাকিস্তানে নিযুক্ত) সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা একটা প্রতিবেদন দিয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে (স্বরাষ্ট্র) সেটা পাঠিয়েছি। আমরা আশা করছি হয়ত খুব শীঘ্রই একটা পর্যবেক্ষক দল পাকিস্তান সফরে যাবে। এখন শ্রীলঙ্কা দল পাকিস্তান সফর করছে, এই সময়ে যদি পর্যবেক্ষণ করতে যাওয়া যায় তাহলে নিরাপত্তার ব্যাপারটা বোঝা যাবে।’
২০১৫ সালে একবার পাকিস্তান সফরে মেয়েদের দল পাঠিয়েছিল বিসিবি। কড়া নিরাপত্তায় সীমিত পরিসরের সেই সফরের পর চলতি বছরের অক্টোবরে আবারও বাংলাদেশের মেয়েরা পাকিস্তান সফর করবে। তবে ছেলেদের জাতীয় দল পাঠানো এবং পাকিস্তানে বড় পরিসরে ক্রিকেট খেলাতে এখনো রয়ে গেছে বড় ধরণের প্রশ্ন।
Comments