লাল বলে খেলতেই চান না পেসাররা!
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের সময় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আক্ষেপ করে বলছিলেন, ‘পেসারদের একাদশে জায়গাটা তো আগে ডিজার্ভ করতে হবে’। টেস্টে সেই জায়গা পেতে ঘরোয়া পর্যায়ে চাই নিয়মিত পারফর্ম। দেখানো চাই এমন কিছু যাতে স্পিনারদের উপরই কেবল ভরসা করতে হয় না দলের। কিন্তু বাস্তবতা যে অনেক দূরে। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট খেলতেই নাকি বেশিরভাগ পেসারের আছে অনাগ্রহ। খোদ এক পেসারই জানাচ্ছেন এমন কথা।
ক’দিন পরেই ভারত সফর। যেখানে স্পিনারদের দিয়ে বাজিমাত করার সুযোগ সামান্য। জুতসই পারফর্মার করতেও দলে দরকার কার্যকর পেসার। কিন্তু ‘এ’ দল, ‘এইচপি দল’ কোথাও কোন পেসারই দলে থাকার জোর দাবি জানাতে পারছেন না।
এই পরিস্থিতিতে ১০ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ। ভারত সফরের আগে যেখানে হবে পেসারদের বড় পরীক্ষা। সে পরীক্ষায় নিজেরা কতটা কি করতে পারেন তা নিয়ে সংশয় এইচপি দলের হয়ে ভারত সফর করে আসা আবু হায়দার রনির।
জাতীয় লিগে এমনিতেই উইকেট থেকে পেসারদের সুবিধা থাকে সামান্যই। গত বছর থেকে সেই ধারায় অবশ্য এসেছে কিছুটা বদল। গত মৌসুমে কিছু উইকেটে ঘাস থাকার সুবিধা নিয়েছিলেন কয়েকজন। কিন্তু বলের গতি, ধারাবাহিকতার অভাব, ম্যাচ ফিটনেসের ঘাটতি আর খেলার প্রতি তীব্র প্যাশন তাদের হুটহাট এসব ঝলক স্থায়ী কোন সমাধান হয়ে আসেনি।
এবারের জাতীয় লিগে নামার আগে আবু হায়দার রনির কথা থেকে জানা গেল পেসারদের হালচালে বড় কোন আশার খবর নেই, ‘আসলে আমাদের পেস বোলারদের জন্য এটি একটি চিন্তার বিষয়, কারণ দেখা যাচ্ছে হয়তো উইকেটটি একটু স্পিনিং বানায় এই কারণে পেস বোলাররা কম খেলে। তবে এখানে আমাদেরও ঘাটতি রয়েছে। আমরা যারা পেস বোলার আছি আমরা হয়তো তেমন গতির বোলার না যে আমরা ১৪০ এর বেশি গতিতে বোলিং করি। আমরা দেখা যায় যারা আছি সবাই ১৩০ কিংবা ১৩৫ এমন গতিতে বোলিং করি।’
দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া নাকি কেউ এমনকি খেলতেই আগ্রহী না, ‘আমাদের কাজ হবে যত বেশি ম্যাচ খেলা যায় চারদিনের। আর আমরা দেখা যাচ্ছে পেস বোলাররা হাতে গোনা তিন চারজন বাদ দিলে অনেকেই লাল বলে খেলতে চায় না। আমরা যারা টেস্ট নিয়ে চিন্তা করি আমাদের উচিত বেশি বেশি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা।’
পেসারদের বড় সংকটের আরেক নাম ম্যাচ ফিটনেস। বেশিরভাগ পেসারই পাঁচ-সাত ওভার বল করার পর হাঁপিয়ে উঠেন। শুরুতে কিছুটা ঝাঁজ দেখালেও পুরো দিন তা ধরে রাখতে পারেন না। চাপের সময় দুর্বার কোন স্পেল দেশের ক্রিকেটে দেখতে পাওয়া দুর্লভই। এজন্য শারীরিক ফিটনেসের পাশাপাশি ম্যাচ ফিটনেসের ভীষণ প্রয়োজন অনুভব করছেন রনি, ‘বিপ টেস্টে ১২ পাচ্ছেন কিন্তু চার, পাঁচ ওভার টানা বোলিং করতে পারেন না। এই বোলিং ফিটনেসটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ যে টানা আট, নয় ওভার কিভাবে বোলিং করা যায়। এটার জন্য বেশি বেশি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা উচিত বলে আমার মনে হয়।’
তবে রনির আশা এবারও উইকেটে থাকবে ঘাসের ছোঁয়া, থাকবে পেস বোলারদের জন্য বাড়তি রসদ। তা থেকে যদি কোন আলোর দিশা পাওয়া যায়।
Comments