নাভাসের দ্বিগুণ গোল হজম করেছেন কর্তোয়া

গেল মৌসুমের শুরুর দিকের ঘটনা। হাঁকডাক দিয়ে চেলসি থেকে থিবো কর্তোয়াকে দলে টেনেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। স্কোয়াডে কেইলর নাভাসের মতো তারকা গোলরক্ষক থাকার পরও বেলজিয়ান শট স্টপারকে কেনার কারণ ছিল একটাই- নিজেদের গোলপোস্ট দুর্ভেদ্য বানানো। কিন্তু রিয়ালের সে পরিকল্পনা একেবারে মাঠে মারা গিয়েছে। ফর্ম হারিয়ে একাদশে নিজের জায়গাটাকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন কর্তোয়া।
courtois and navas
নাভাস (বামে) ও কর্তোয়া। ছবি: এএফপি

গেল মৌসুমের শুরুর দিকের ঘটনা। হাঁকডাক দিয়ে চেলসি থেকে থিবো কর্তোয়াকে দলে টেনেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। স্কোয়াডে কেইলর নাভাসের মতো তারকা গোলরক্ষক থাকার পরও বেলজিয়ান শট স্টপারকে কেনার কারণ ছিল একটাই- নিজেদের গোলপোস্ট দুর্ভেদ্য বানানো। কিন্তু রিয়ালের সে পরিকল্পনা একেবারে মাঠে মারা গিয়েছে। ফর্ম হারিয়ে একাদশে নিজের জায়গাটাকেই অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন কর্তোয়া।

২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লোভ জিতেছিলেন কর্তোয়া। আসর শেষে নাম লেখান রিয়াল শিবিরে। তাকে ঘিরে স্পেনের ইতিহাসের সফলতম ক্লাবটির প্রত্যাশার মাত্রা ছিল উঁচুতে। অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে লা লিগায় আগে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় লিগের পরিবেশ-পরিস্থিতিও ছিল কর্তোয়ার জানাশোনার মধ্যে। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্সে একের পর এক হতাশ করে চলেছেন ২৭ বছর বয়সী তারকা।

রিয়ালের এক নম্বর গোলরক্ষক তিনিই হবেন- এটা জানিয়েই কর্তোয়াকে দলে নিয়েছিল রিয়াল। ফলে দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য সেনানী নাভাসকে বেঞ্চে গরম করেই কাটাতে হয়েছে গেল মৌসুম। চলতি মৌসুমেও নিয়মিত সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বুঝে নিয়ে এই কোস্টারিকান গোলরক্ষক দল ছাড়ার জন্য উঠেপড়ে লাগেন। অবশ্য জিনেদিন জিদানের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে ছিলেন নাভাস। কিন্তু নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই তাকে প্যারিস সেন্ট জার্মেইতে (পিএসজি) নাম লেখাতে দেন রিয়াল কোচ।

লস ব্লাঙ্কোসদের জার্সিতে এখন পর্যন্ত ৪৩ ম্যাচ খেলছেন কর্তোয়া। গোল যা হজম করেছেন , তা তার নামের সঙ্গে মোটেও মানানসই নয়- ৫৯টি! অন্যদিকে, রিয়ালের জার্সিতে প্রথম ৪৩ ম্যাচে নাভাসের হাত গলে বল জালে ঢুকতে পেরেছিল মাত্র ৩১ বার! অর্থাৎ কর্তোয়া প্রায় দ্বিগুণ গোল হজম করেছেন তার পূর্বসূরির চেয়ে।

শুধু এই পরিসংখ্যানে নয়, অন্যান্য সবখানেই নাভাস ও কর্তোয়ার মধ্যে যোজন যোজন ব্যবধান। প্রতি ৬৫ মিনিটে একবার করে পরাস্ত হয়েছেন কর্তোয়া। অথচ নাভাসকে ফাঁকি দিয়ে একবার রিয়ালের জালে বল পাঠাতে প্রতিপক্ষের ফুটবলারদের গড়ে ৯০ মিনিট লেগেছে। প্রথম ৪৩ ম্যাচে তিনি যেখানে ২০টি ক্লিনশিট রেখেছিলেন, সেখানে কর্তোয়া গোলপোস্ট অক্ষত রাখতে পেরেছেন মোটে ১২ বার।

সর্বোচ্চ টানা তিন ম্যাচ গোল হজম না করে থাকতে পেরেছেন কর্তোয়া। অথচ নাভাসের রেকর্ডের ভাণ্ডার কত সমৃদ্ধ! টানা ৫৩৪ মিনিট গোল না খাওয়ার কীর্তি রয়েছে তার। আর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তো একবার বনে গিয়েছিলেন চীনের প্রাচীর। টানা ৭৩৭ মিনিট বল জালে প্রবেশ করতে দেননি তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়ালের হয়ে তার চেয়ে বেশি সময় গোলপোস্ট অক্ষত রাখতে পেরেছেন কেবল একজন, জার্মানির ইয়ান্স লেহম্যান (৮৫৩ মিনিট)।

চলতি মৌসুমেও কর্তোয়ার ফর্মের উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই। লিগের ৬ ম্যাচে ক্লিনশিট ২টি। আর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সবশেষ ম্যাচের প্রথমার্ধে তো করেন হাস্যকর ভুল। তাতে সমর্থকদের দুয়োও জুটেছে তার কপালে। বিরতির পর তার বদলি হিসেবে নেমে দারুণ খেলেন আরেক গোলরক্ষক আলফোনসো আরেওলা। ফলে একদিকে রিয়াল একাদশে কর্তোয়ার থাকাটা যেমন হুমকিতে পড়েছে, অন্যদিকে নাভাসকে পিএসজিতে যেতে দেওয়ার সিদ্ধান্তটাও কি আক্ষেপে রূপ নিতে শুরু করেছে?

Comments

The Daily Star  | English
interim government struggles with decision-making

Interim govt struggling on many fronts

The government on around a dozen occasions has backtracked on its decisions during its two months in office, casting doubts about its resolve.

13h ago