সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাস্তানদের খুঁজে বের করা হবে: প্রধানমন্ত্রী

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন যে জনগণের টাকায় চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকে কারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা বের করার জন্য নির্দেশ দেবেন। এক্ষেত্রে কোনো দলীয় পরিচয় বিবেচনায় আনা হবে না বলেও স্পষ্ট করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা আজ বুধবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী তার সফর ও সম্পাদিত চুক্তি নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তবে সাংবাদিকদের দিক থেকে ঘুরে ফিরে আবরার হত্যা নিয়েই প্রশ্ন এসেছে সবচেয়ে বেশি। সরকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ চাইলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু একটি ঘটনার প্রেক্ষিতে সার্বিকভাবে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত সরকার নিবে না।

ছাত্রদের দলীয় রাজনীতি বন্ধ করার ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনীতি নিষিদ্ধ করা সামরিক স্বৈরাচারদের মানসিকতা। নেতৃত্ব তৈরিতে ছাত্র রাজনীতির গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও ছাত্র রাজনীতি করে এসেছি। তবে বুয়েটের সিন্ডিকেট চাইলে এরকম কোনো সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল থেকে মাস্তানদের ধরার নির্দেশ দেওয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জনগণের টাকায় হলে থাকবে আর মাস্তানি করবে তা হতে পারে না।”

আবরার হত্যার বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঘটনা জানার পর সঙ্গে সঙ্গে আমি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি আলামত সংগ্রহ ও অপরাধীদের আটক করতে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দিক থেকে সিসিটিভি ফুটেজ আনতে বাধা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। তিন ঘণ্টা সময় নষ্ট করা হয়েছে। এটা খোঁজ করতে হবে কেন ফুটেজ আনতে বাধা দেওয়া হলো। আর আন্দোলনই বা কী জন্য? বিচার তো হবে। হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।

ফেনী নদীর পানি নিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফেনী নদী মূলত একটি সীমান্ত নদী। ত্রিপুরার একটি ইউনিয়নের পানীয় জলের জন্য যে সামান্য পানি দেওয়ার চুক্তি হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ মানবিক কারণে। কেউ খাবার জন্য পানি চাইলে তো না করা যায় না।

এক্ষেত্রে সীমান্তবর্তী নদীগুলো থেকে দুই দেশ সুফল পেতে যৌথভাবে ড্রেজিংয়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

দেশের বন্দর বিদেশিদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পোর্ট কেউ একা ব্যবহারের জন্য তৈরি করে না। নেপাল, ভারত, ভুটান আমাদের বন্দর ব্যবহার করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের শুল্ক আয় হবে। সে কারণেই ঠাকুরগাঁও বিমানবন্দর নেপাল ও ভুটানকে ব্যবহারের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা না বাড়ালে উন্নতি হবে কীভাবে। কেউ তো আর একা একা উন্নতি করতে পারে না।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর দিল্লি সফরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে বলেছিলেন, ফারাক্কা চুক্তির কথা ভুলে গিয়েছিলাম। যারা গঙ্গার মতো পানির কথা ভুলে যায়, তারা আবার ফেনী নদীর পানি নিয়ে কথা বলে।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

9h ago