আবরার হত্যাকাণ্ড বাকস্বাধীনতার ওপর নির্মম আঘাত: ২৪ বিশিষ্টজন

বলপূর্বক ভিন্নমত দমন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির যে অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তার ফলাফল হচ্ছে আবরারের নৃশংস ‘নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড’, যার দায় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের জড়িত ছাত্ররা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃত্ব কোনভাবেই এড়াতে পারে না।
Abrar-Fahad-1.jpg
বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী নিহত আবরার ফাহাদ। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

বলপূর্বক ভিন্নমত দমন, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, বিচারহীনতা ও দায়মুক্তির যে অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে তার ফলাফল হচ্ছে আবরারের নৃশংস ‘নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ড’, যার দায় ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের জড়িত ছাত্ররা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃত্ব কোনভাবেই এড়াতে পারে না।

‘মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি’র এক বিবৃতিতে আজ এই কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে দেশের ২৪ বিশিষ্টজন স্বাক্ষর করেছেন।

স্বাক্ষরকারী বিশিষ্টজনেরা হলেন: ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. শাহদীন মালিক, ড. বদিউল আলম মজুমদার,  অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সি আর আবরার, অধ্যাপক পারউইন হাসান, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, সারা হোসেন, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক ফেরদাউস আজিম, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরি, অধ্যাপক স্বপন আদনান, শিরিন হক, ফরিদা আখতার, ড. ফসটিনা পেরেরা, ড. শহিদুল আলম, নূর খান লিটন, রেজাউর রহমান লেনিন, অরূপ রাহী, জিয়াউর রহমান, সিনথিয়া ফরিদ, হানা শামস আহমেদ।

মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি মনে করে, “দেশের মানুষের বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমত প্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার ক্রমাগত বাধাগ্রস্ত ও সংকুচিত হচ্ছে। পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক অধিকাংশ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও যথাযথ বিচার না হওয়ায় আমরা আবরার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার প্রাপ্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা চাই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন সকল প্রকার প্রভাব ও প্রতিপত্তির ঊর্ধ্বে থেকে যথাযথ ভাবে তদন্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন এবং প্রকৃত অভিযুক্ত আসামীদের নামে দ্রুততম সময়ে অভিযোগপত্র প্রদান করেন। বিচারকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্র পক্ষের গাফিলতির কারণে বিচার বিলম্ব ও প্রকৃত আসামীরা যাতে ছাড়া পেয়ে না যায় সে ব্যাপারে প্রশাসন এবং বিচারবিভাগকে দৃঢ়ভাবে সচেষ্ট থাকতে হবে।”

তারা আরও বলেন, “বিগত কয়েক বছরে সাংবিধানিক স্বীকৃত চিন্তা, বিবেক এবং বাকস্বাধীনতা চর্চার জন্য নির্বিচারে মামলা-হামলা হয়েছে। ভাবমূর্তির দোহাই দিয়ে সমালোচক ও ভিন্ন মতাবলম্বীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। সামান্য বিরূপ বক্তব্যের জন্য দেশের প্রথিতযশা সম্পাদকদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বহু মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং সর্বশেষ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাসীনদের ব্যাপারে পর্যালোচনা-সমালোচনা বা ভিন্নমত উপস্থাপনের স্বাধীনতা প্রায় বিলুপ্ত করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের বাকস্বাধীনতার বিরুদ্ধে এই ক্রমাগতভাবে অসাংবিধানিক অবস্থানের পরিণামে আবরার নৃশংস “নির্যাতনের মাধ্যমে খুন” হয়েছেন বলে আমরা মনে করি। এই প্রেক্ষিতে বাকস্বাধীনতার চর্চা করার কারণে তথাকথিত আইনি ও অপরাধসুলভ অবৈধ-বেআইনি- সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা থেকে নিবৃত থাকার জন্য ক্ষমতাসীনদের প্রতি মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আহ্বান জানাচ্ছে।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago