হারতে হারতে ড্র করেও ভারতীয় কোচের গলায় উল্টো সুর
বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের ৮৮তম মিনিট পর্যন্ত ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল ভারত। ঘরের মাঠে হারটা তাদের জন্য তখন কেবল সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। ঠিক সে সময়ে কর্নার থেকে দুর্দান্ত এক হেড করেন আদিল খান। বল জড়ায় বাংলাদেশের জালে। সমতা ফেরে লড়াইয়ে। ওই স্কোরলাইনে শেষ হয় ম্যাচ। কিন্তু অন্তিম সময়ের লক্ষ্যভেদে কোনোক্রমে হার এড়ালেও ভারতের ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্তিমাচের দাবি, জয়টা তাদেরই প্রাপ্য ছিল।
২০২২ বিশ্বকাপ ও ২০২৩ এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাই পর্বের ম্যাচে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামে (যুব ভারতী ক্রীড়াঙ্গন) স্বাগতিক ভারতের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বাংলাদেশ। তাতে ‘ই’ গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে পয়েন্টের খাতা খুলেছে জেমি ডের শিষ্যরা। তবে এদিন ভাগ্যটা সঙ্গ দেয়নি বাংলাদেশকে। নইলে কী আর সেরা সুযোগগুলো তৈরি করেও পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়!
শক্তি, সামর্থ্য, অতীত রেকর্ড আর ফিফা র্যাঙ্কিং- সবখানেই ঢের ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের ৪২তম মিনিটে ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। পাল্টা আক্রমণ নির্ভর কৌশল বেছে নিয়ে গোটা ম্যাচে দুর্দান্ত খেলে লিড তারা ধরেও রেখেছিল ম্যাচের প্রায় শেষ সময় পর্যন্ত। কিন্তু শেষ দিকে ডিফেন্ডার আদিল গোল পাওয়ায় বাংলাদেশকে হতাশ করে স্বস্তির ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত। মাঝে লাল-সবুজের ফরোয়ার্ডরা দিতে পারেননি নিখুঁত ফিনিশিং। ভারতীয় গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুকে তিনবার একা পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি নাবীব নেওয়াজ জীবন-মাহবুবুর রহমান সুফিলরা!
ম্যাচের ৫১তম মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ ইব্রাহিমের বাড়ানো বলে ডি-বক্সের ভেতরে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন জীবন। কিন্তু গুরপ্রীত বরাবর সোজা শট নিয়ে আক্ষেপ বাড়ান এ ফরোয়ার্ড। চার মিনিট পর আবার দুর্ভাগা বাংলাদেশ। উইঙ্গার ইব্রাহিমের দূরপাল্লার শট গোলরক্ষক গুরপ্রীতকে পরাস্ত করলেও জালের ঠিকানা খুঁজে পায়নি। বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৮৪তম মিনিটে ভারতীয় ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন বদলি ফরোয়ার্ড সুফিল। কিন্তু বল নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে হাতে লাগান তিনি। আবার নষ্ট হয় সুযোগ।
ম্যাচ জুড়ে এভাবে চাপে থাকার পরও স্তিমাচের মত, বাংলাদেশের নয়, পূর্ণ তিন পয়েন্ট প্রাপ্য ছিল তার দলেরই, ‘ম্যাচের ফলে আমরা খুশি নই। জয়টা আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমরা শেষ পর্যন্ত দাপট দেখিয়েছি। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি। কিন্তু স্কোর করতে পারিনি। আমরা একটা বাজে গোল হজম করেছি। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তবে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে দুই প্রতিবেশী দেশের দ্বৈরথটা প্রাণবন্ত ও রোমাঞ্চকর ছিল বলে জানাতে দ্বিধা করেননি স্তিমাচ। তিনি উল্লেখ করেন, লড়াইটা তার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানার পারফরম্যান্সের দারুণ প্রশংসা করেন এই ক্রোয়াট।
Comments