নারায়ণগঞ্জে আ লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১০
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
গতকাল (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গাবতলী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আওয়ামী লীগের নেতারা জানায়, সন্ধ্যা ৬টায় গাবতলী এলাকায় লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনে বের হন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপের) সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু।
সেসময় তার সঙ্গে উপজেলা যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা ছিলেন। অভিযোগ উঠে, পূজা মণ্ডপে যাওয়া পথে পশ্চিম পাকুন্ডা এলাকায় গাড়ি বহরে বাধা দেন জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি হুমাযুন কবির, তার ছেলে রুবেল মিয়া, রোমান মিয়া ওরফে টারজান, শ্যালক রিপন মিয়া ওরফে শিপনসহ ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল।
তারা আরো অভিযোগ করেন যে সেসময় হকিস্টিক, লোহার রডসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে যুবলীগ নেতা মোখলেছুর রহমান, ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হোসেন, নাফি মিয়া ও জাহিদ হোসেনসহ অন্তত ১০ জনকে পিটিয়ে আহত করে। তাদের কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হামলায় ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর গাড়ি বহরে তিনটি গাড়ি ভাংচুর করা হলে তিনি তার লোকজন নিয়ে পূজা মণ্ডপে না গিয়ে ফিরে যান।
পরে সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টায় ক্ষিপ্ত হয়ে জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির ও তার লোকজন লক্ষ্মী পূজা মণ্ডপে হামলা চালিয়ে ছয়টি প্রতিমা ভাংচুর করেন বলেও অভিযোগ উঠে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের উপস্থিতিতে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু বলেন, “পূজা মণ্ডপে পরিদর্শনে যাওয়ার পথে আমার গাড়ি বহরে হামলা ভাংচুর করে হুমায়ুন মেম্বারের লোকজন। সেসময় হামলায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের অন্তত ১০জন আহত হয়।”
“হুমায়ুন মেম্বারের সঙ্গে আমার কোনো পূর্বের বিরোধ নেই। কেনো তিনি বাধা দিলো সেটা জানি না,” যোগ করেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা।
জামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি হুমায়ুন কবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর সমর্থিত লোকজনই আমার লোকজনদের ওপর হামলা চালিয়েছে। হামলায় আমাদের চারজন আহত হয়েছে।”
“বিরুর লোকজন প্রতিমা ভাংচুর করে আমাদের লোকজনকে ফাঁসাতে চাইছে,” বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাওয়া সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অঞ্জন কুমার সরকার জানান, “স্থানীয়রা জানিয়েছে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে ছয়টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, “সংঘর্ষ ও প্রতিমা ভাংচুরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে মামলা দায়ের করা হবে।”
Comments