মেসির সামনে আরও ১০ চ্যালেঞ্জ, জানিয়েছে বার্সেলোনা
বাঁ পায়ের জাদুতে গোটা বিশ্বকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে মাতিয়ে রেখেছেন লিওনেল মেসি। ফুটবল থেকে যা কিছু অর্জন সম্ভব, তার প্রায় সবই পেয়ে গেছেন বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। একের পর রেকর্ড ভাঙছেন-গড়ছেন। এই যেমন, আগের দিনই রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতার (২০১৮-১৯ মৌসুমের) পুরস্কার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শ্যু হাতে তুলে নিয়েছেন তিনি। এরকম আরও অনেক দারুণ অর্জনের হাতছানি আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের সামনে।
সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার মেসির সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্য থেকে দশটি বাছাই করেছে তার ক্লাব বার্সেলোনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। সেসব তুলে ধরা হলো দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্য।
আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে টপকে গেল মৌসুমে বার্সার হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়েছেন মেসি। এখন পর্যন্ত তিনি মাঠে নেমেছেন ৬৯২ ম্যাচে। শিগগিরই ক্লাবের জার্সিতে ৭০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করবেন তিনি। মেসি সামনে আছেন কেবল একজনই। জাভি হার্নান্দেজ কাতালানদের হয়ে ৭৬৭ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন।
সবশেষ টানা তিনবারসহ সবমিলিয়ে মোট ছয়বার ইউরোপিয়ান গোল্ডেন শ্যু জিতেছেন ৩২ বছর বয়সী মেসি। এর প্রতিবারই আবার স্প্যানিশ লা লিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পিচিচি ট্রফিও জিতেছেন তিনি। তার সামনে সপ্তম পিচিচি ও সপ্তম গোল্ডেন শ্যু জেতার হাতছানি।
বার্সেলোনার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৪টি বড় শিরোপা জিতেছেন মেসি। চলতি মৌসুমে দলটি ট্রেবল জিতলে তিনি ছাড়িয়ে যাবেন রায়ান গিগস ও ভিক্তর বাইয়াকে। সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা গিগস ৩৬টি বড় শিরোপা জিতেছিলেন। সাবেক বার্সা ও পোর্তো গোলরক্ষক বাইয়া জিতেছিলেন ৩৫টি বড় শিরোপা।
ক্যারিয়ারের পুরো সময়টা ন্যু ক্যাম্পে কাটিয়ে দেওয়া মেসি উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে চারবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ নিয়েছেন। তার সামনে পঞ্চম শিরোপার হাতছানি। এবারের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন লিগের ফাইনাল হবে ইস্তানবুলে। সেই পর্যন্ত পৌঁছে শেষ হাসি হাসতে পারলে অধিনায়ক হিসেবে প্রথমবারের মতো এই শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখাবেন তিনি।
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে বার্সার হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড জাভির দখলে। ৪১ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। অন্যদিকে, আর একটি এল ক্লাসিকোতে খেললেই তাকে ছুঁয়ে ফেলবেন মেসি। যৌথভাবে শীর্ষে উঠে যাবেন তিনি।
ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৯টি ফ্রি-কিক গোল রয়েছে মেসির। এর মধ্যে বার্সার হয়ে করেছেন ৪৩টি, আর্জেন্টিনার হয়ে ছয়টি। পঞ্চাশ পূরণ করতে আর মাত্র একটি ফ্রি-কিক গোল চাই তার।
একই ম্যাচে ফ্রি-কিক থেকে জোড়া গোল করার কীর্তি আছে রেকর্ড ছয়বার ফিফা বর্ষসেরার পুরস্কার পাওয়া মেসির। একাধিকবার এমন নজির স্থাপন করেছেন তিনি। তবে ফ্রি-কিকের হ্যাটট্রিকের মতো অনবদ্য কিছু কি তিনি করে দেখাতে পারবেন? উত্তর জানতে থাকতে হচ্ছে অপেক্ষায়।
গেল মৌসুমে লা লিগায় ৪০০ গোলের মাইলফলক ছুঁয়েছেন মেসি। তার লিগ গোলসংখ্যা এখন ৪২০টি। সবই বার্সার হয়ে। কোনো নির্দিষ্ট লিগে সবচেয়ে বেশি গোল করার কীর্তি জোসেফ বিকানের দখলে। সাবেক চেকোস্লোভাকিয়ার লিগে ৪৪৭ গোল করেছিলেন তিনি। জার্মান লিগে ৪৪৪ গোল করে দ্বিতীয় স্থানে উয়ে সিলার। তাদেরকে পেছনে ফেলার পথে এগিয়ে যাচ্ছেন বার্সা দলনেতা।
মেসির সামনে একটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে ব্রাজিলের কিংবদন্তি পেলেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার। দাবি করা হয়ে থাকে, সান্তোসের হয়ে সর্বনিম্ন ৫১০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৪৩টি গোল করেছিলেন তিনবারের বিশ্বকাপজয়ী তারকা। নিউইয়র্ক কসমসের হয়ে আরও ৩১ গোল রয়েছে পেলের নামের পাশে। অন্যদিকে, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সেলোনার হয়ে মেসির গোল ৬০৪টি।
বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনার জার্সি মিলিয়ে মেসির গোল সংখ্যা মোট ৬৭২টি। ক্লাবের হয়ে লক্ষ্যভেদ করেছেন ৬৮ বার, দেশের হয়ে প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে নিয়েছেন ৬০৪ বার। অর্থাৎ ৭০০ গোলের মাইলফলক হাতছানি দিচ্ছে তাকে। কদিন আগেই ৭০০ ক্যারিয়ার গোল পূর্ণ করেছেন সময়ের আরেক সেরা তারকা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। এখন পর্যন্ত ৭০০ গোলের ক্লাবে নাম লেখাতে পেরেছেন মাত্র ছয় ফুটবলার।
Comments