আমাদের লিজেন্ডারি শিল্পীরা কখনোই সমিতির নির্বাচন নিয়ে এমনটি করেননি: শাকিব খান
শাকিব খান ঢাকার সিনেমার সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ব্যস্ত নায়ক। প্রায় ২০ বছর ধরে ঢাকাই সিনেমার নায়ক তিনি। এখনো তার সিনেমা মানেই দর্শকদের হলে আসা। তার হাতে সব সময়েই নতুন সিনেমা দেখা যায়। অভিনয় ছাড়াও তিনি প্রযোজনা করছেন নতুন নতুন সিনেমা। এক সময় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচিত সভাপতিও ছিলেন তিনি। নতুন সিনেমা, বর্তমান চলচ্চিত্রের অবস্থাসহ নানা বিষয় নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন ‘শিকারি’-খ্যাত শাকিব খান।
দ্য ডেইলি স্টার: নতুন সিনেমা ‘আগুন’ এর জন্য সমুদ্র সৈকতে কাটালেন বেশ কিছুদিন, কেমন হলো শুটিং?
শাকিব খান: ‘আগুন’ সিনেমার লোকেশনের প্রয়োজনেই দশদিন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে থাকতে হয়েছে। টানা দশদিন শুটিং করেছি। পরিচালক বদিউল আলম খোকন যত্নসহকারে কাজটি করেছেন। আমিও কাজটি ভালোবাসা ও সততা নিয়ে করেছি। ‘আগুন’ সিনেমায় নতুন শাকিব খানকে পাবেন দর্শকরা। আমি সব সময় বলি, কোনো সিনেমার সঙ্গে কোনোটার মিল থাকবে না। ‘আগুন’ সিনেমাও সেরকমই।
দ্য ডেইলি স্টার: ‘বীর’ শিরোনামের নতুন একটি সিনেমার শুটিংও তো করছেন?
শাকিব খান: আসলে ‘বীর’ আমার এসকে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সিনেমা। আমি তো ঘোষণা দিয়েছি- একসঙ্গে চারটি সিনেমা করবো আমার প্রতিষ্ঠান থেকে। সেটিরই একটি হচ্ছে ‘বীর’। যখন যে কাজটি করি ভালোবাসা নিয়েই করি। অভিনয় যেমন আমার ভালোবাসা, একইভাবে সিনেমা প্রযোজনাও আমার আরেকটি ভালোবাসার কাজ। কেননা, সিনেমার জন্যই আজকের শাকিব খান। ‘বীর’ শেষ হলে আরেকটি নতুন কাজ শুরু করবো আমার প্রতিষ্ঠান থেকে।
দ্য ডেইলি স্টার: বলিউডের নায়িকা নারগিস ফাখরির সঙ্গে একটি সিনেমা করার সংবাদের সত্যতা কতোটুকু?
শাকিব খান: নারগিস ফাখরির সঙ্গে সিনেমাটি করবো। তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী বছর সিনেমাটির শুটিং হবে। এটুকুই কেবল বলবো- কাজটি হবে। আমাদের দুজনকে দর্শকরা এক সঙ্গে দেখবেন একটি সিনেমায়।
দ্য ডেইলি স্টার: ‘লন্ডন’ নামের একটি নতুন সিনেমার কথা শোনা যাচ্ছে, কবে শুরু হচ্ছে কাজটি?
শাকিব খান: ‘লন্ডন’ নামের সিনেমাটি পরিচালনা করবেন ইফতেখার চৌধুরী। সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। ওটার শুটিং করবো লন্ডনে। ওখানকার আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখে শুটিং হবে। ধরে নিয়েছি আগামী জানুয়ারিতে আমরা শুটিং করবো। সেভাবেই শিডিউল তৈরি করছি।
দ্য ডেইলি স্টার: এই যে একটার পর একটা সিনেমা করছেন, ক্লান্তি আসে না?
শাকিব খান: শিল্পীরই কাজই তো অভিনয় করা। অভিনয় আমাকে কখনো ক্লান্ত করে না। অভিনয় আমাকে নতুন কিছু দেয়। এই নতুন কিছু নিয়েই নতুন স্বপ্নে পথ চলি। তবে, হ্যাঁ- এতো বেশি কাজ আমি করতে চাই না। আরেকটু কম কাজ করতে চাই। আরও ভালো কাজ করতে চাই। ভালোর তো শেষ নেই। তাই শিল্পীর তৃপ্তিরও শেষ নেই। সেজন্য সবচেয়ে ভালো যে কাজটি, তা করতে চাই।
দ্য ডেইলি স্টার: আপনি একাই ঢাকার সিনেমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, বিষয়টি কেমন লাগে?
শাকিব খান: দেখুন, চলচ্চিত্র অনেক বড় একটি শিল্প। আমি এই পরিবারের একজন। আমার হাতে হয়তো কাজ বেশি, আমার সিনেমার জন্য হয়তো প্রেক্ষাগৃহে বেশি দর্শক যান। কিন্তু, সব শিল্পীরই কিছু না কিছু ভূমিকা আছে। আমি একা কতোদিন টেনে নেবো? আরও নতুন শিল্পী দরকার। তাহলে আমার কাজের চাপটা কম হবে। সবাই মিলে আমাদের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নেবো।
দ্য ডেইলি স্টার: অনেকেই মনে করেন, আপনার ওপর লোড বেশি হয়ে যাচ্ছে, আপনি কি বলেন?
শাকিব খান: ভালো কাজ হলে কষ্ট করতে খারাপ লাগে না। একটি ভালো কাজের জন্য লোড নিতেই পারি। কিন্তু, গতানুগতিক কাজ হলে তখন লোড মনে হয়। যদিও গেলো কয়েক বছর ধরে গল্প ও চরিত্র পছন্দ না হলে কাজ করি না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- আমি কাজ ভালোবাসি। ভালোবাসার শক্তি দিয়ে শুটিং করি।
দ্য ডেইলি স্টার: বাংলাদেশের বাইরে কলকাতায় আপনি অনেক জনপ্রিয়, বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
শাকিব খান: অবশ্যই বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখি। এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। সেই সঙ্গে একজন বাংলাদেশি নায়ক হিসেবে বিষয়টি আমার জন্য অনেক গর্বের। শিল্পী সব দেশের। শিল্পী সব মানুষের। কাজেই ভারতের মতো একটি দেশের একটি রাজ্যে আমার সিনেমা যখন দর্শকরা বেশ আগ্রহ নিয়ে দেখেন, তখন মনটা খুশিতে ভরে যায়।
দ্য ডেইলি স্টার: শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে এফডিসিতে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাকে কিভাবে নিচ্ছেন?
শাকিব খান: দেখুন, প্রকৃত শিল্পী কি চান? প্রকৃত শিল্পী চান কাজ। আমাদের লিজেন্ডারি শিল্পীরা কখনোই সমিতির নির্বাচন নিয়ে এমনটি করেননি। আমি শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলাম। শিল্পীদের জন্য কাজ করেছি। শিল্পীদের পাশে থেকেছি। ধরুন, কারো হাতে সিনেমা নেই, তাই সমিতি নিয়ে থাকতে হবে। এর চেয়ে কাজ করাটাই তো বেটার। সারা পৃথিবীর বড় বড় তারকাদের দিকে যদি তাকাই, তাহলে দেখি তারা কাজ নিয়ে আছেন, সমিতির নির্বাচন নিয়ে নয়। জাতীয় পর্যায়ে এই সমিতির কি গুরুত্ব আছে?
দ্য ডেইলি স্টার: এতো ব্যস্ত থাকেন, অবসর পান?
শাকিব খান: সত্যি কথা বলতে কাজের মধ্যেই অবসর খুঁজে পাই। বড় অবসর কখনোই পাই না। কাজ করতে করতেই অবসর কাটাই।
Comments