শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে চোখ রাখবেন যাদের ওপর

তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত হচ্ছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ। প্রথম আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৫ সালে। প্রতি দুই বছর পর পর আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার শেষ আসরটি মাঠে গড়িয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস। প্রথম আসরে অবশ্য শিরোপা রেখে দিয়েছিল ঘরের দল চট্টগ্রাম আবাহনী।
Jamal Bhuiyan
জামাল ভূঁইয়া। ছবি: স্টার (ফাইল)

তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত হচ্ছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ। প্রথম আসরটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৫ সালে। প্রতি দুই বছর পর পর আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার শেষ আসরটি মাঠে গড়িয়েছিল ২০১৭ সালে। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস। প্রথম আসরে অবশ্য শিরোপা রেখে দিয়েছিল ঘরের দল চট্টগ্রাম আবাহনী।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে আজ শনিবার (১৯ অক্টোবর) পর্দা উঠছে শেখ কামাল ক্লাব কাপের। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে আগের দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী ও টিসি স্পোর্টস। এবার আরও অংশ নিচ্ছে বসুন্ধরা কিংস (বাংলাদেশ), মোহন বাগান (ভারত), ইয়ং এলিফ্যান্টস (লাওস), চেন্নাই সিটি (ভারত), টেরেঙ্গানু (মালয়েশিয়া) ও গোকুলাম কেরালা (ভারত, ছাড়পত্র পাওয়া সাপেক্ষে)।

প্রতিযোগিতার ফাইনাল মাঠে গড়াবে আগামী ৩০ অক্টোবর। ১২ দিনব্যাপী এই আসরে ফুটবল জাদুতে যারা ভক্ত-সমর্থকদের মাতিয়ে রাখতে পারেন, তাদের নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের এই আয়োজন।

জামাল ভূঁইয়া (চট্টগ্রাম আবাহনী)

এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকাদের একজন জামাল ভূঁইয়া। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক সাইফ স্পোর্টিংয়ের খেলোয়াড় হলেও তাকে ধারে দলে টেনেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। তার দক্ষতা ও সামর্থ্য নিয়ে আলাদা করে বলার কিছু নেই। গেল সাত বছর ধরে তিনি লাল-সবুজদের মাঝমাঠের কাণ্ডারি। ডেনমার্কে জন্ম নেওয়া ২৯ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার তার ক্যারিয়ারের সেরা সময়টাই উপভোগ করছেন বর্তমানে। বাংলাদেশ দলের জার্সিতে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের যৌথ বাছাই পর্বের ম্যাচে কাতার ও ভারতের বিপক্ষে তার চোখ জুড়ানো পারফরম্যান্স সেই সাক্ষ্য দেয়। আন্তর্জাতিক এই আসরে নিশ্চিতভাবেই সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন জামাল।

prince tagoe
প্রিন্স টাগো। ছবি: স্টার

প্রিন্স টাগো (চট্টগ্রাম আবাহনী)

নামটা কি চেনা চেনা লাগছে? না লাগলেও ক্ষতি নেই। জেনে নিন। এই ৩২ বছর বয়সী স্ট্রাইকার ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে খেলেছিলেন ঘানার জার্সিতে। আফ্রিকান পরাশক্তিদের হয়ে ৩৬ ম্যাচে ৭ গোল করেছেন তিনি। আক্রমণভাগকে শক্তিশালী করতে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ এই ফুটবলারকে দলে যোগ করেছে চট্টগ্রাম আবাহনী। ২০০৯-১১ সাল পর্যন্ত জার্মান ক্লাব হফেনহেইমে খেলেছেন টাগো। এরপর সার্বিয়ার বিখ্যাত ক্লাব পার্টিজান বেলগ্রেড ও তুরস্কের বুরসাসপোরের হয়েও মাঠে নেমেছেন তিনি।

দানিয়েল কলিন্দ্রেস (বসুন্ধরা কিংস)

বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবলের সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রথমবার খেলতে নেমেই মাত করেছে বসুন্ধরা কিংস। সবশেষ মৌসুমে দাপট দেখিয়ে লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারা, জিতেছে স্বাধীনতা কাপের শিরোপাও। কিংসের সাফল্যের পেছনে যার ভূমিকাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক, তার নাম দানিয়েল কলিন্দ্রেস। এবারের আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন যে দুজন ফুটবলার খেলছেন, তাদের একজন এই কোস্টারিকান। ৩৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে খেলেছিলেন। গেল মৌসুমের লিগে ১১ গোল করেছিলেন কলিন্দ্রেস। সতীর্থদের দিয়ে গোল করাতেও তার জুড়ি মেলা ভার। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বসুন্ধরাকে তিনি যদি আরেকটি শিরোপা জেতান, তাতে অবাক হওয়ার থাকবে না কিছুই!

পেদ্রো মানজি (চেন্নাই সিটি)

নামকরা স্প্যানিশ ফুটবল ক্লাব এস্পানিওলের যুব একাডেমিতে বেড়ে উঠেছেন পেদ্রো মানজি। তবে স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলের নিচের দিকের স্তরেই তার ক্যারিয়ারের অধিকাংশ সময়টা কেটেছে। সেই মানজি ভারতের চেন্নাই সিটির হয়ে গেল মৌসুমে ছিলেন দুর্দান্ত। নিজের অভিষেক মৌসুমে ২৫ ম্যাচে ২১ গোল করেন এই স্ট্রাইকার। দলকে জেতান আই লিগের শিরোপা। লিগের প্রথম ম্যাচেই ইন্ডিয়ান অ্যারোসের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ৩০ বছর বয়সী ফুটবলার। এরপর আরও তিনটি হ্যাটট্রিক করার কৃতিত্ব দেখান তিনি।

Lee Tuck
লি টাক। ছবি: স্টার

অ্যান্ড্রু লি টাক (টেরেঙ্গানু)

দেশের ফুটবলের নিয়মিত খোঁজ-খবর যারা রাখেন, তাদের কাছে এই নামটা বেশ পরিচিত। হ্যাঁ, ঢাকা আবাহনীর হয়ে ২০১৫-১৬ মৌসুম মাতিয়ে গিয়েছিলেন অ্যান্ড্রু লি টাক। ওই এক মৌসুমেই এই ইংলিশ মিডফিল্ডার জয় করেছিলেন ফুটবল প্রেমীদের মন। সেবার আবাহনী অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ লিগে, গড়েছিল ইতিহাস। লি টাক করেছিলেন ১০ গোল। সতীর্থদের দিয়েও করিয়েছিলেন আরও বেশ কয়েকটি। এরপর তিনি পাড়ি জমান মালয়েশিয়ায়। টেরেঙ্গানুর হয়ে এবার নতুন অভিযানে তিন বছর পর ফের বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছেন লি টাক।

দানিয়েল সাইরাস (মোহন বাগান)

কলকাতার ক্লাব ফুটবল অঙ্গনের সেরা দুটি নামের একটি মোহন বাগান। তবে সোনালি সময়টা পেছনে ফেলে এসেছে তারা, নেই আগের সেই জৌলুস। তবে এখনও আই লিগে মর্যাদার সঙ্গে পারফর্ম করে যাচ্ছে তারা। সবশেষ ২০১৮-১৯ মৌসুমে পঞ্চম স্থান অর্জন করেছিল তারা। আসন্ন ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (আইএসএল) খেলার সম্ভাবনাও রয়েছে তাদের। তাই মোহন বাগান কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে দলকে শক্তিশালী করতে। তারা দলে টেনেছে ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর দানিয়েল সাইরাসকে। এই বর্ষীয়ান ডিফেন্ডার জাতীয় দলের হয়ে ৯৩ ম্যাচ খেলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারেও খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।

Comments