প্রতিহিংসার বশে গাছ কাটা, নারীকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলছে পুলিশ

প্রতিহিংসা থেকে সাভারে ছাদবাগানের গাছ কেটে সাবাড় করা খালেদা আক্তার লাকি (৪৫) নামের সেই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আটক নারী মানসিক ভারসাম্যহীন।
Lucky-1.jpg
পুলিশের হাতে আটক খালেদা আক্তার লাকি। ছবি: স্টার

প্রতিহিংসা থেকে সাভারে ছাদবাগানের গাছ কেটে সাবাড় করা খালেদা আক্তার লাকি (৪৫) নামের সেই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আটক নারী মানসিক ভারসাম্যহীন।

আজ (২৩ অক্টোবর) সকালে সাভারের ডগরমোড়া এলাকার নিজ ফ্লাট থেকে সাভার থানা পুলিশ ওই নারীকে তুলে নিয়ে যায়।

এর আগে, গতকাল সাভারের ডগরমোড়া এলাকায় নক্ষত্রবাড়ি নামক আটতলা ভবনের ছাদবাগানের গাছ কেটে ফেলেন লাকি। গাছ কাটার ভিডিও ধারণ করে সুমাইয়া হাবিব নামে অপর এক নারী তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোষ্ট করেন। যা পরে ভাইরাল হয় এবং নেট দুনিয়ায় এ ঘটনার প্রতিবাদ শুরু হয়।

আজ সকালে সরেজমিনে পরিদর্শন করে গাছগুলোর মালিক রত্না হাবিবের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আটতলা বাড়িটিতে মোট ২৭টি ফ্লাট রয়েছে। যার আটটি ফ্লাটে মালিকরা বসবাস শুরু করেছেন। তার স্বামী ওই ভবনের ছয়তলার একটি ফ্লাটের মালিক। লাকির স্বামী সেলিম আল দ্বীন পেশায় একজন আইনজীবী এবং তিনিও একই তলার দুটি ফ্লাটের মালিক।

রত্না হাবিব জানান, গত কোরবানির ঈদের পর তিনি ছাদের এক কোনায় ছোট একটি বাগান গড়ে তোলেন। যেখানে মোট ৩২টি টবে বিভিন্ন ধরনের প্রায় শতাধিক গাছ ছিলো। বাগানটি সাজানোর পর থেকেই লাকি ও তার পরিবারের সদস্যরা পরিবেশ নষ্টের অজুহাত তুলে বাগানটি সরানোর কথা বলে আসছিলেন। একমাসের মধ্যে বাগান না সরালে গাছগুলো কেটে ফেলারও হুমকি দেন তারা।

রত্না হাবিব বলেন, “আমরা গাছ ভালোবাসি বলেই বাগানটি সরাইনি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে লাকি ও লাকির ছেলে ১০-১২ জন যুবককে নিয়ে ছাদে আসেন। এরপরই লাকি ধারালো দা দিয়ে এক এক করে গাছগুলো কাটতে থাকেন। আমরা প্রতিবাদ করলেও কোনো কাজ হয়নি।

রত্না হাবিবের মেয়ে সুমাইয়া হাবিব বলেন, “আমি গাছ কাটার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে ভিডিওসহ পোস্ট করেছিলাম, যাতে আমরা বিচার পাই।”

গাছ পেলো ভুক্তভোগী পরিবার

এদিকে ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন ওই বাড়ি পরিদর্শন করে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রিন সেভার্স এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আহসান রনি বলেন, “যেভাবে গাছগুলোকে কাটা হয়েছে, সত্যি আমরা মর্মাহত। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা মামলা করারও প্রস্তুতি নিচ্ছি।”

রনি বলেন, “যাদের গাছগুলো কাটা হয়েছে তাদের দুঃখ লাঘবে আমরা কিছু গাছ তাদের হাতে তুলে দিয়েছি। তাদেরকে সুন্দর একটি বাগান সাজিয়ে দিতে চাই।”

থানায় নেওয়ার আগে অভিযুক্ত নারী যা বললেন

থানায় নেওয়ার আগে ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, “আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। আমার সন্তানকে ওই নারী (রত্না হাবিব) অভিশাপ দেয়। আমার সন্তানের চেয়ে তো আর গাছ বড় নয়। তাই আমি গাছ কেটে ফেলেছি।”

পুলিশ বলছে খালেদা আক্তার লাকি মানসিক ভারসাম্যহীন

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, “গাছ কেটে ফেলার অভিযোগে সকালে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেছেন, ওই নারী মানসিক ভারসাম্যহীন। এ ঘটনায় কোনো মামলা হবে না।”

তবে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, ওই নারী কোনোভাবেই মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। তিনি প্রতিহিংসা বশে ও ক্ষমতার জোরেই গাছগুলো কেটেছেন।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus meets Malaysian PM Anwar Ibrahim

Anwar Ibrahim to consider issue of Bangladeshi workers

Malaysian Prime Minister Anwar Ibrahim today promised to consider the issue of 18,000 Bangladeshi workers who missed a deadline to enter Malaysia saying that they need workers, but not "modern slaves"

2h ago