ইরাকি গোয়েন্দাদের ভাষ্য, যেভাবে নিহত হলো বাগদাদি
তন্ন তন্ন করে দীর্ঘদিন খোঁজার পর অবশেষে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইএস প্রধান আবু বকর আল-বাগদাদিকে ধরার একটি সম্ভাবনা দেখতে পায় ইরাকের গোয়েন্দা দল।
বাগদাদির এক শীর্ষ সহযোগীকে ধরার পর তার দেওয়া তথ্য ধরে এগোতে থাকে গোয়েন্দারা।
গতকাল (২৭ অক্টোবর) প্রকাশিত রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় বাগদাদির নিহত হওয়ার কাহিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরাকের প্রতিবেশী তুরস্কের হাতে বাগদাদির এক ঘনিষ্ঠ সহচর ইসমাইল আল-ইথাবি ধরা পরার পর তাকে তুলে দেওয়া হয় ইরাকি কর্তৃপক্ষের হাতে।
ইরাকি গোয়েন্দাদের ইসমাইল জানান, বাগদাদি সবার নজর এড়িয়ে মাঝেমধ্যেই সবজি বোঝাই মিনিবাসে চেপে চলাফেরা করেন। সেসময় তিনি তার কমান্ডারদের সঙ্গে কথাও বলেন, নির্দেশনা দেন বিভিন্ন অভিযানের।
নাম প্রকাশ না করে একজন ইরাকি গোয়েন্দা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, “বাগদাদির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইসমাইল গোয়েন্দাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। আইএস প্রধানের অবস্থান ও চলাফেরা সম্পর্কে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিলো তা একটু একটু করে কাটতে শুরু করে।”
ইসমাইলের কথায় ইরাকের গোয়েন্দারা জানতে পারে বাগদাদির অবস্থান ও প্রতিবেশী সিরিয়ায় তার সহচরদের সঙ্গে বৈঠক করার সময়সূচি। সেসব তথ্য যাচাই করে ইরাক কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’কে সঙ্গে নিয়ে বাগদাদির আশেপাশে আরও গোয়েন্দা কর্মকর্তা নিয়োগ করার।
সেই ইরাকি গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, “চলতি বছরের মাঝামাঝি আমরা বাগদাদিকে সিরিয়ার ইদলিবে দেখতে সক্ষম হই। সেখানে আমরা তাকে তার পরিবারের সদস্য ও তিন ঘনিষ্ঠ সহচরকে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরতে দেখি।”
ইদলিবের এক বাজারে এক সিরীয় চর বাগদাদির সহযোগী ইসমাইলকে দেখতে পান। তারপর, তাকে অনুসরণ করে খোঁজ পাওয়া যায় বাগদাদির। সেই সংবাদ দ্রুত চলে যায় সিআইএর কাছে। গোয়েন্দারা স্যাটেলাইট ও ড্রোন দিয়ে গত পাঁচ মাস সেই এলাকা নজরদারির মধ্যে রাখে।
দুদিন আগে বাগদাদি তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি মিনিবাসে চড়ে সেই এলাকা থেকে পাশের একটি গ্রামে যাওয়ার চেষ্টা করে। “সেটিই ছিলো তার জীবনের শেষ মুহূর্ত,” যোগ করেন নাম প্রকাশ না করা সেই ইরাকি গোয়েন্দা।
Comments