'এর চেয়ে শকিং আর কিছু হতে পারে না'
সব কিছুই ঠিক ছিল। দল ঘোষণার পর মাঠের অনুশীলনও শুরু। ভারত সফরে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বেই যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু হুট করেই বদলে গেল সব। যদিও গত কয়েক দিন অনুশীলন ও প্রস্তুতি ম্যাচে সাকিবের অনুপস্থিতিতে নানা গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু পরিস্থিতি যে এতোটা ভয়ানক হবে তা আজকের আগে ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি কেউ। ভাবেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। সংবাদ সম্মেলনে তাই হতাশা লুকাতে পারলেন না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় এক গণমাধ্যমের বরাতে জানা গিয়েছিল নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব। এরপর সারাদিনের অপেক্ষা আইসিসির সিদ্ধান্তের জন্য। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত এলো সন্ধ্যার পর। তাতে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ সাকিব, তবে শর্ত সাপেক্ষে কমবে এক বছরের সাজা। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এ এক বছর পার করাই যে বড় চ্যালেঞ্জের। কারণ গত ১৩ বছরে দেশের সেরা পারফর্মার যে এ অলরাউন্ডারই।
সাজা ঘোষণার ঘণ্টা খানেক পর সাকিবকে সঙ্গে নিয়েই বিসিবিতে আসেন পাপন। জানান নিজের হতাশার কথা, 'আমরা শকড। এরচেয়ে শকিং আর কিছু হতে পারে না। আমি বহুবার বলেছি যে দুটো খেলোয়াড়ের বিকল্প আমাদের নাই। একটা অধিনায়ক বলতাম মাশরাফি আর খেলোয়াড় হিসেবে সাকিব। সাকিবের খেলতে না পারাটাই আমাদের জন্য প্রথম শকড। সামনে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ। ভারতে টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। এবং টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হচ্ছে। সব কিছুর পরিকল্পনা কিন্তু সাকিবকে ঘিরে। আপনারা জানেন ওকে অধিনায়ক করার কারণ কি ছিল।'
সাকিবের উপর বেজায় খেপেছেন পাপন, তবে আবার খুশি হয়েছেন আকুকে সব ধরণের সাহায্য করায়। পাপনের ভাষায়, 'রাগও হয়েছে, কেন জানালো না (আইসিসিকে)। তবে এটাও বলতে চাই, যে সাকিব স্বীকার করেছে এবং আকসুকে (আকু) পুরোপুরি সহযোগিতা করেছে।'
তবে আগে থেকে বিসিবি কিছুই জানত না বলেও জানান পাপন, 'এখানে একটা আপনাদের স্পষ্ট বলে দিতে চাই, সাকিবই সাক্ষী। বিসিবি বা আমাদের কেউ কিচ্ছু জানতাম না। এই যে পুরো তদন্ত চলছে জানুয়ারি থেকে আমরা কিছুই জানতাম না। আকসু ইউনিট একটা স্বাধীন ইউনিট আইসিসির। আমার জানা মতে ওরা সাকিবের সঙ্গেই কেবল যোগাযোগ করেছে। আমরা কেবল ফলাফলটা জানতে পেরেছি।'
সাকিবই প্রথম বিসিবিকে জানিয়েছেন বলে জানালেন তিনি, 'সাকিবই আমাকে প্রথম বলেছে। এই দুই তিনদিন আগে। যেদিন ধর্মঘট প্রত্যাহার হলো তারপরে সে আমাকে জানিয়েছিল। আজকে বিকেলেও আমরা শাস্তি কি হবে তা জানতাম না। সাকিবই জানিয়েছে, ওর কাছ থেকে শুনেছি।'
এক বছরের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন নতুন করে কোনো অপরাধে না জড়ালে পরবর্তী এক বছরের শাস্তি পেতে হবে না সাকিবকে। সেক্ষেত্রে আগামী ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আবার ফিরতে পারবেন ক্রিকেটে। তবে এ সময়টা বেশ কঠিনই যাবে সাকিবের। আর সব চাপ সামলে নিয়ে আবার ক্রিকেট ফিরবেন বলেই বিশ্বাস করেন বিসিবি সভাপতি এবং সবসময় পাশে থাকার অঙ্গীকারও করেন তিনি, 'আমার দৃঢ় বিশ্বাস। আমাদের সবার সাকিবের পাশে থাকা উচিত। ওর খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। আমরা এটাই বলতে চাই ভেঙে পড়ার কোন কারণ নেই। আকসুর সঙ্গে যে সাহায্য সহযোগিতা করার কথা সে করে যাক। আমরা ওর সঙ্গেই থাকব। যখন যে সমর্থন করা দরকার আমরা ওর পাশে থাকব।'
Comments