সাকিবের শাস্তি কম হয়েছে, বলছেন সাবেক বিশ্ব তারকারা
জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েও তা গোপন করায় সাকিব আল হাসানকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য সব রকমের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি। তবে সাকিব শাস্তি পেলেও তার প্রতি কোনো সমবেদনা নেই মাইকেল ভনের। ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়কের মতো নিউজিল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার স্কট স্টাইরিসও মনে করেন, সাকিবকে কম শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি জানিয়েছে, ২০১৮ সালে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে তিনবার জুয়াড়ির কাছ থেকে ‘প্রস্তাব’ পেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু কোনোবারই তা আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী ইউনিটকে বা দুর্নীতি দমনের সঙ্গে যুক্ত অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে জানাননি তিনি।
প্রথম এক বছরের নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন নতুন করে কোনো অপরাধ না করলে পরবর্তী এক বছরের শাস্তি পেতে হবে না বাংলাদেশের সাবেক টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিবকে। সেক্ষেত্রে আগামী ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন তিনি। তবে এই সময়ের মধ্যে আবার কোনো অপরাধ করলে স্থগিত নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
সাকিবকে আইসিসি সাজা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে ক্রিকেট অঙ্গনে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন বিশ্বের বেশ কয়েকজন সাবেক তারকা ক্রিকেটার।
পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটসম্যান ও ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা টুইটারে লিখেছেন, সাকিবের শাস্তি থেকে শেখার আছে অনেক কিছু, ‘সুতরাং, সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞা সকল ক্রীড়াপ্রেমী এবং ক্রীড়াবিদদের জন্য একটি শিক্ষা: যদি আপনি খেলাকে অসম্মান করেন এবং বিদ্যমান নিয়ম-নীতিকে সরিয়ে দিয়ে খেলার ঊর্ধ্বে যাওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে চমৎকারভাবে পতনের জন্য তৈরি থাকুন। দুঃখজনক।’
ভন টুইট করেছেন, ‘সাকিব আল হাসানের জন্য বিন্দুমাত্র কোনো সমবেদনা নেই। বিন্দুমাত্রও না। এই যুগে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে সবসময় উপদেশ দেওয়া হয়ে থাকে তারা কী করতে পারবেন আর কী করতে পারবেন না এবং সঙ্গে সঙ্গে কোন বিষয়টি সম্পর্কে রিপোর্ট করতে হবে। ২ বছর যথেষ্ট না। আরও বেশি হওয়া উচিত ছিল।’
স্টাইরিসও একই সুরে লিখেছেন, ‘(নিষেধাজ্ঞা) এক বছর স্থগিত? কেন? কমপক্ষে দুই বছরের জন্য বিদায় (করা উচিত ছিল)।’
আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী আইনে বলা আছে, কোনো ক্রিকেটার যদি কোনো জুয়াড়ির কাছ থেকে ম্যাচ পাতানোর বা স্পট ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পান, তাহলে দ্রুতই তা আইসিসিকে বা সংশ্লিষ্ট বোর্ড কর্মকর্তাদের জানাতে হবে। না জানালে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী, এই ধারা ভঙ্গের সাজা সর্বনিম্ন ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা।
সাকিবের খেলা উপভোগ করেন এবং তাকে ফের মাঠে দেখতে চান- এমন প্রত্যাশার কথা জানানোর পাশাপাশি ভারতের প্রখ্যাত ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী আইনের ধারার প্রতি ইঙ্গিত করে টুইট করেছেন, ‘আমার (টুইটার অ্যাকাউন্টের) টাইমলাইনে অনেকেই বলছেন যে সাকিবের শাস্তিটা অনেক কঠিন হয়ে গেছে। বিপরীত দিক থেকে দেখলে, তিনি খুবই সৌভাগ্যবান যে এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে আবার মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি।’
Comments