জাবিতে সহকারী প্রক্টরের হাতে শিক্ষার্থী লাঞ্ছিত [ভিডিওসহ]

দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ধর্মঘট পালন করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

আজ (৩০ অক্টোবর) সকালে আন্দোলনের একজন সংগঠক ও জাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নাজির আমিন চৌধুরী জয়ের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলাভবনের গেটে অবস্থান নেয়। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে সেখানে যান সহকারী প্রক্টর এবং নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মহিবুর রৌফ শৈবাল।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এসময় সহকারী প্রক্টর শৈবালের নেতৃত্বে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের ওপর হামলা করেন এবং জয়কে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।

এ ঘটনার একটি ভিডিও দ্য ডেইলি স্টারের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা গেছে- পুরাতন কলাভবনের গেটে শিক্ষার্থীদের জটলা। মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জয়। হঠাৎ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে নিয়ে সেখানে হাজির হন সহকারী প্রক্টর শৈবাল। এক হাতে মোবাইল ফোনে ভিডিও করতে করতে তিনি ও অন্যরা জয়ের জামা ধরে তাকে টেনে-হিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেন। এসময় জয়কে উদ্দেশ্য করে শৈবালকে বলতে শোনা যায়- ‘চলো, চলো, লেটস মুভ’। এরপর জয়কে জোরপূর্বক ধরে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা অপর একজনের কাছে সোপর্দ করেন তিনি।

বিষয়টি জানাজানি হলে, ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এতে উত্তাল হয়ে পড়েছে জাবি ক্যাম্পাস।

এ ঘটনায় আন্দোলনের মুখপাত্র ও দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “কিছুক্ষণ আগেই জানতে পারলাম, পুরাতন কলাভবনে একজন সহকারী প্রক্টরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা এখানে এসে দেখলাম শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে, তারা মিছিল করছে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। তখন একটা ভিডিও দেখলাম, হামলার ভিডিওটি দেখে অত্যন্ত মর্মাহত হলাম। ভিডিওতে দেখলাম সহকারী প্রক্টর শৈবাল এগিয়ে এসে একজন শিক্ষার্থী ও ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জয়কে টেনে-হিঁচড়ে মাটিতে শুইয়ে ফেলেছেন। ভিডিওটি দেখার পরই আমি শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে জানালাম যে, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কী করে এরকম একটি কাজ করতে পারেন।”

তিনি আরও বলেন, “একজন মাস্তান শিক্ষক তো আমরা চাই না। শিক্ষক এরকম হামলা করবে, তার নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর এরকম হামলা হতে পারে, এটি অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক। আমরা অবশ্যই এর বিচার চাই।”

হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো নিজে আহত হওয়ার দাবি করেছেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শৈবাল বলেন, “আমি তাদের ওপর কোনো হামলা করিনি। ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি জয়কে জামার কলার নয়, ঘাড় ধরে গেট থেকে সরিয়ে এনেছিলাম। এসময় নীচে থেকে কেউ একজন আমার তলপেটে ৮-১০টি লাথি মারে।”

তিনি আরও বলেন, “এতে আমি গুরুতর আহত হই। পরে সেখান থেকে দূরে সরে আমি দেখি আমার ইউরিন লাইনে আঘাত লেগেছে। এখন আমি সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছি।”

Comments

The Daily Star  | English

Corruption, zero-sum politics and democratic decline

Governments that score low in corruption indexes are more prone to use force and violence to control and suppress dissensions and protests.

4h ago