‘আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে’

Narayanganj Building Collapse
৩ নভেম্বর ২০১৯, নারায়ণগঞ্জ শহরে খালের উপর নির্মিত একটি চারতলা ভবন হেলে নিহত স্কুলছাত্র মো. সোহায়ের (১০) মা রোজিনা বেগমসহ স্বজনদের আহাজারি। ছবি: স্টার

নিহত স্কুল ছাত্র সোহায়েরর বাবা শাহাবউদ্দিন দুই বছর আগে মারা যান। এরপর থেকে সোহায়েরকে নিয়ে ছোটভাই মো. রনির বাবুরাইলের উত্তর গোয়ালবন্দ এলাকার নিচতলা বাসায় বসবাস করছিলেন রোজিয়া বেগম। স্বামীর জমানো টাকা ও ভাইয়ের সহযোগিতায় ছেলেকে পড়ালেখা ও সংসার চলছিলো বলে জানায় মো. রনি।

আজ (৩ নভেম্বর) রাতে সরেজমিনে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিকালে ভবন হেলে পড়ে সোহায়ের নিহতের খবরের পর থেকেই ওই পরিবারের স্বজনদের মধ্যে চলছে শোকের মাতম। সন্তান হারিয়ে আহাজারি করছিলেন রোজিয়া বেগম।

সেসময় তিনি বলতে থাকেন, “ওর বাবা মারা যাওয়ার পর ছেলেকে নিয়ে বাঁচতে চাইছি। এখন ছেলেটাকেও নিয়ে গেছে। কতো স্বপ্ন ছিলো ছেলেটাকে মানুষের মতো মানুষ করবো। ওর মুখের দিকে তাঁকিয়ে সব দুঃখ ভুলে গেছিলাম। আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। আমি এখন কী নিয়ে বাঁচবো।… রাত হয়ে গেছে আমার ছেলেকে ঘরে নিয়ে আসো!”

বড় বোন সুমাইয়া আক্তার বলেন, “প্রতিদিন বিকাল সাড়ে ৩টায় বাসা থেকে বের হয়ে বাবুরাইলের ওই বাড়িতে পড়তে যেতো সোহায়ের। সে ভবনের নিচতলায় সোনিয়া নামের এক নারীর কাছে আরাবি শিখতো সে। ফিরতো বিকাল সাড়ে ৪টায়। কিন্তু, আজ বিকালে সে আর বাসায় ফিরে নাই। ভাই আমার ফিরেছে লাশ হয়ে।”

২ নভেম্বর ভবনের পিলারে দেখা দেয় ফাটল

নিখোঁজ ওয়াজিদের খালা আমেনা বেগম বলেন, “২ নভেম্বর বিকালেই ভবনের পিলারে ফাটল দেখতে পায় ওই বাড়ির লোকজন। সেসময় বাথরুমের পাইপ ভেঙে যায়। পরে মিস্ত্রী এনে সেটা ঠিক করা হয়। কিন্তু, তখনও তারা সর্তক হয়নি যে ভবন পড়ে যাচ্ছে। সর্তক হলে আজকে এ ঘটনা ঘটতো না।”

এদিকে ঘটনার পর থেকে বাড়ি মালিকদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানান, আজহার উদ্দিনের এক মামাতো বোনের বিয়ে থাকার কারণে দুপুরে সবাই সেখানে চলে যান। এরপর ভবন হেলে পড়ে গেলেও তাদের কেউ ঘটনাস্থলে আসেনি। এরপর থেকেই তাদের ব্যবহারের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে ৪ তলা ভবন ধসে স্কুলছাত্র নিহত

Comments