বাবার দাফন শেষে ফেরার পথে মারা গেলেন মা

স্বামীর দাফন শেষে জাহেরা খাতুন (৪৮) তার চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গত রাতে উদয়ন এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পৌছানোর পর ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস সজোরে এসে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহেরা খাতুন নিহত হন।
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন মো. ইমন। ছবি: শাহীন মোল্লা

চট্টগ্রামে জাহাজ ভাঙার কাজ করতেন মো. মুসলিম। বৃহস্পতিবার কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হলে ছেলেরা তার লাশ কবর দিতে নিয়ে গিয়েছিল মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গ্রামের বাড়িতে। বাবার শেষ বিদায়ে মাকেও সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন তারা। গত রাতে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে চট্টগ্রামে ফেরার পথে দুর্ঘটনায় এবার মাকেও হারালেন তারা।

স্বামীর দাফন শেষে জাহেরা খাতুন (৪৮) তার চার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে গত রাতে উদয়ন এক্সপ্রেসে উঠেছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পৌছানোর পর ঢাকা অভিমুখী তূর্ণা নিশীথা এক্সপ্রেস সজোরে এসে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রানটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই জাহেরা খাতুন নিহত হন। আহত হন ইমন ও পরিবারের আরও চার জন। অন্য একটি কামরায় থাকায় বড় ধরনের কোনো ক্ষতি ছাড়াই বেঁচে যান এক জন।  ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) চিকিৎসাধীন ইমন এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা জানিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারকে।

ইমনের (১৮) হাত ও কোমরের হাঁড় ভেঙে গেছে। তার বড় বোন শাহিদা আক্তার সুমি (২৬) ও তার নানি সুরাইয়া খাতুনেরও শরীরের একাধিক হাঁড় ভেঙেছে। একই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। আর সাত বছরের ছোট বোন সাজেদা আক্তার মিমের চিকিৎসা চলছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে। অন্য কামরায় থাকা তার বড় ভাই সুমন হাসপাতালে মিমের দেখাশোনা করছেন।

ইমন জানান, শ্রীমঙ্গলে দাদা-দাদির কবরের পাশেই বাবার দাফন সম্পন্ন করেন তারা। চট্টগ্রামে ফিরতে বড়ভাই সুমন ছাড়া আর সবাই তারা সর্বশেষ ‘ঝ’ বগিতে উঠেছিলেন। তূর্ণা নিশ্চিথা ট্রেনটি এসে এই বগিতেই ধাক্কা দেয়।

চট্টগ্রামের ভাটিয়ালি বিজয়সরণি কলেজের একাদশ শ্রেণির এই ছাত্র বলেন, রাত ৩টা নাগাদ, হঠাৎ প্রচণ্ড ধাক্কা তার পর শরীরে তীব্র যন্ত্রণা অনুভূত হয়। তিনি বুঝতে পারেন ভারী কিছুর নিচে চাপা পড়েছেন তিনি। ভারী জিনিসটি সরানোর চেষ্টা করতেই বুঝতে পারেন মেঝেতে তার বোন পড়ে রয়েছেন। সেও যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। কিন্তু চাপা পড়ে যাওয়ায় সে কোনো সাহাজ্য করতে পারেনি। পরে কিছু লোক তার সহায়তায় এলেও তিনি উঠে দাঁড়াতে পারছিলেন না।

কাতর কণ্ঠে বলেন, কিছুক্ষণ পরই অন্য কামরায় থাকা তার ভাই এসে তাদের উদ্ধার করেন। কিন্তু মা তখন আর জীবিত ছিলেন না।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago