ঘূর্ণিঝড় বুলবুল

সুন্দরবনের সাড়ে ৪ হাজার গাছ উপড়ে গেছে

সিডর ও আইলার মতো আরেক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকে এবার আটকে দিয়েছে সুন্দরবন। বুলবুল যে শক্তি নিয়ে সুন্দরবনে আঘাত হানে, লোকালয়ে প্রবেশের সময় ওই শক্তি আর ছিলো না। ফলে লোকালয়ের ক্ষতি তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে। তবে ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের।
bulbul-sundarban.jpg
খুলনার সুন্দরবন সংলগ্ন কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী এলাকায় এভাবেই গাছ উপড়ে পড়তে দেখা গেছে। ছবি: দিপঙ্কর রায়/স্টার

সিডর ও আইলার মতো আরেক শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলকে এবার আটকে দিয়েছে সুন্দরবন। বুলবুল যে শক্তি নিয়ে সুন্দরবনে আঘাত হানে, লোকালয়ে প্রবেশের সময় ওই শক্তি আর ছিলো না। ফলে লোকালয়ের ক্ষতি তুলনামূলক অনেক কম হয়েছে। তবে ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের।

সম্প্রতি বুলবুলের প্রভাবে সুন্দরবনের কী ধরণের ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করেছে বন বিভাগ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনা থেকে ওই প্রতিবেদন বন বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষতির তথ্য জানা যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট স্টেশন ও ফাঁড়ির সাহায্যে করা ওই জরিপে দেখা গেছে, বুলবুলের প্রভাবে সুন্দরবনে চার হাজার ৫৮৯টি গাছ উপড়ে পড়েছে। বন বিভাগের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৬২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনের পশ্চিম বিভাগে।

ঝড়ের পর খুলনা আবহাওয়া দপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেছিলেন, “ঘূর্ণিঝড় বুলবুল প্রথম আঘাত হানে ভারতে। সেখান থেকে সাতক্ষীরার সুন্দরবনের ওপর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সুন্দরবনে আঘাতের সময় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার। তবে সুন্দরবন অতিক্রম করে লোকালয়ে প্রবেশের সময় ঝড়ের গতি কমে যায়। তখন ঝড়ের গতি ছিলো ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। ধারণা করা হচ্ছে, সুন্দরবনের কারণে ঝড়ের গতি কমে গেছে। আর এ কারণে লোকালয়ে মানুষের ক্ষতির পরিমাণ কম।”

বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনকে পূর্ব ও পশ্চিম এই ‍দুটি বিভাগে ভাগ করা হয়। সাতক্ষীরা ও খুলনার অংশ পশ্চিম বন বিভাগের আওতায়। আর বাগেরহাট ও বরিশাল অংশ পূর্ব বন বিভাগের মধ্যে।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ওই বিভাগে গাছ উপড়ে পড়েছে চার হাজার দুইটি। আড়পাঙ্গাশিয়া ও শিবসা নদীর দুই পাড়ের গাছ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন বিভাগ থেকে আর্থিকভাবে ওই গাছের টাকার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৪১ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। ওই বন বিভাগের বিভিন্ন ফরেস্ট অফিসের ক্ষতির পরিমাণ ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বশির আল মামুন বলেন, “ক্ষতির ধরণ দেখে মনে হয়েছে, ঝড় ওই দুই নদীর পাড়ে বেশি আছড়ে পড়েছে। তবে ঝড়ের সময় জলোচ্ছ্বাস না থাকায় কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষতি হয়নি।”

ঝড়ে পূর্ব বন বিভাগে গাছ উপড়ে পড়েছে ৫৮৭টি। ওই গাছের আর্থিক মূল্য ধরা হয়েছে আট লাখ ৬২ হাজার টাকা। অন্যদিকে বন বিভাগের অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

ওই বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, “ঝড়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পশ্চিম বিভাগে। যে গাছ পড়ে গেছে তার বেশিরভাগই স্টেশন ও ফাঁড়ির। তবে কিছু জেটি ও ওয়াচ টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক স্টেশন ও ফাঁড়ির অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে।”

বন বিভাগের খুলনা সার্কেলের প্রধান বন কর্মকর্তা মো. মঈনুদ্দিন খান বলেন, “ঝড়ের পর বন বিভাগে কর্মরত স্টেশন ও ফাঁড়ির কর্মকর্তাদের ক্ষতির পরিমাণ যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট বন বিভাগ ওই ক্ষতির তথ্য নিয়ে যাচাই করে সার্কেল অফিসে জমা দেয়। পরে ওই প্রতিবেদন প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।”

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago