প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে গবেষণায় বাংলাদেশে আবারও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের নারী দল

National-Geographic-1.jpg
ছবি: ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক

‘সি টু সোর্স: গঙ্গা’র বর্ষা পরবর্তী অভিযানের জন্য আবারও বাংলাদেশ ও ভারতে এসেছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের নারী পরিচালিত গবেষক দল।

এটি বৈশ্বিক ‘প্ল্যানেট অথবা প্লাস্টিক?’র উদ্যোগের অংশ, যা পদ্মা নদীতে অভিযানের দ্বিতীয় ধাপ এবং এটি বৈশ্বিকভাবে প্লাস্টিক সংকট সনাক্তকরণ ও সমাধানের কাজের অংশ।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক জানিয়েছে, গত অক্টোবর মাসের শেষ দিকে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ফেলো জেনা জ্যামবেক এবং হিথার কোল্ডেওয়ে’র যৌথ নেতৃত্বে বৈজ্ঞানিক এবং প্রকৌশলীদের নিয়ে গঠিত একটি দল পদ্মা নদীতে দীর্ঘ দুই মাস ব্যাপী একটি অভিযান শুরু করে। এসময় তারা পদ্মা নদীর বঙ্গোপসাগর থেকে হিমালয় পর্যন্ত সর্বমোট ২ হাজার ৫৭৫ কিলোমিটার অংশে অভিযান পরিচালনা করে।

পদ্মা নদীর বাংলাদেশ এবং ভারতীয় অংশে পরিচালিত এই অভিযানটি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ‘সি টু সোর্স’ অভিযানের দ্বিতীয় ধাপ, যার মাধ্যমে এই নদীতে বর্ষা পরবর্তী সময়ে প্লাস্টিক দূষণ কার্যক্রমের সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্যগুলো শনাক্ত করা হবে।

‘সি টু সোর্স: গঙ্গা’ অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো বৈশ্বিকভাবে বিশেষজ্ঞ সম্প্রদায় যেনো প্লাস্টিক দূষণ নামক সার্বজনীন এই সমস্যার সমাধানে একযোগে কাজ করে। অভিযান চলাকালীন, এই দলটি নদী এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় বর্ষা পরবর্তী সময়ে প্লাস্টিক দূষণের মাত্রা পরিমাপ করবে। এছাড়াও এ সময়ে তারা কিছু মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করবে এবং এই সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু কর্মশালা পরিচালনা করবে।

ওয়াইল্ডলাইফ ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়া (ডব্লিউআইআই), ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলোজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াইল্ড টিম এবং ইসাবেলা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় অভিযানটি পরিচালনার মূল লক্ষ্য হলো- প্লাস্টিকের বর্জ্য কীভাবে উৎস থেকে সমুদ্রে যায়, তা লিপিবদ্ধ করা এবং প্লাস্টিকের প্রবাহ এবং গঠন সম্পর্কে যে জ্ঞানের ঘাটতি রয়েছে তা পূরণ করা। ভারতে টাটা ট্রাস্টও এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছে।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ফেলো ও অনুসন্ধানকারী ‘সি টু সোর্স: গঙ্গা’ অভিযানের বৈজ্ঞানিক দলের উপনেতা হিথার কোল্ডেওয়ে বলেন, “সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। প্রতি বছর ৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্লাস্টিক নদীর সঙ্গে যুক্ত হয়, যা বর্জ্য পদার্থগুলোকে সমুদ্রে নিয়ে যেতে পরিবাহক বেল্ট হিসেবে কাজ করে। আমাদের এই অভিযানের মূল লক্ষ্য হলো- জনগণ এবং প্লাস্টিক কীভাবে পদ্মা নদী এবং সমুদ্রের সঙ্গে সংযুক্ত তা বোঝা এবং আমাদের ডাটা ব্যবহার করে সচেতনতা তৈরি এবং এর সমাধানের পথ বের করা।”

নদী অভিযানের প্রথম ধাপ চলতি বছরের মে থেকে জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। এই অভিযানের সময় দলটি প্লাস্টিক দূষণের সমাধান সম্পর্কে নয়টি কর্মশালা পরিচালনা করে। এছাড়াও তারা প্লাস্টিক সম্পর্কিত ধারণা এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে ২৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে এবং পরিবেশ থেকে ৩০০ এর বেশি নমুনা সংগ্রহ করে। মেরিন ডেব্রিস ট্র্যাকার অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ৫৬ হাজার এরও বেশি বর্জ্য পদার্থের টুকরাকে লিপিবদ্ধ করে। তারা স্থল ও পানিতে ৩ হাজার কাঠের পচনশীল ‘ড্রিফট কার্ড’ এবং ১০টি ‘বোতল ট্যাগ’ ব্যবহার করে প্লাস্টিক বর্জ্যের গতিবিধি লক্ষ্য করে।

দলটির অভিযানের সকল অভিজ্ঞতা তাৎক্ষণিকভাবে জানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এজন্য ওয়েবে NatGeo.org/plastic অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টুইটার এবং ইন্সটাগ্রামে #ExpeditionPlastic এই হ্যাশট্যাগটি ব্যবহার করে ফলো করতে হবে। ‘প্লানেট অথবা প্লাস্টিক?’-কে সমর্থন জানাতে, একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য অঙ্গীকার বদ্ধ হতে: natgeo.com/plasticpledge ওয়েবসাইট ভিজিট করতে বলা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

G7 expresses support for Israel, calls Iran source of instability

Israel and Iran attacked each other for a fifth straight day on Tuesday

2h ago