ডাব চুরির অভিযোগে গাছে বেঁধে শিশু নির্যাতন

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় ডাব চুরির অভিযোগে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ বিশ্বাস শামীমকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে ওই শিশুর পরিবার।
Manikganj toture
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ডাব চুরির অভিযোগে শিশুটিকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় ডাব চুরির অভিযোগে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ বিশ্বাস শামীমকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে ওই শিশুর পরিবার।

এ ব্যাপারে থানা-পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর বাবা সাইফুল বিশ্বাস বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছেন।

বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদালত দায়িত্ব দিয়েছেন শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে।

অভিযুক্ত অলি আহমেদ মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় শিশুটির পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

গত ১৮ অক্টোবর রাতে শামীমকে নির্যাতন করা হলেও ঘটনাটি গণমাধ্যমকে জানানো হয় আজ (২৬ নভেম্বর)। নির্যাতিত শিশুর বাবাকে মামলা তুলে নেওয়া ‘হুমকি’ দেওয়ার পর ঘটনাটি আলোচনায় আসে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, শামীম ও তার বাবার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, ঘটনাটি গত ১৮ অক্টোবর। মায়ের নির্দেশে সেদিন রাত নয়টার দিকে শামীম বাড়ির কাছে দোকানে মশার কয়েল কিনতে যায়। সেখানে দেখা হয় প্রতিবেশী ও সম্পর্কে দাদা অলি আহমেদের (৪০) সঙ্গে।

জরুরি কথা আছে বলে অলি আহমেদ তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়ির লোকজন একটি গানের আসরে যাওয়ায় অলি আহমেদের বাড়িতে তখন কেউ ছিলো না।

কথাবার্তার এক পর্যায়ে অলি আহমেদ শামীমকে বলাৎকারের চেষ্টা করে। শামীমের চিৎকার এবং যৌন নিপীড়ন করতে ব্যর্থ হয়ে অলি আহমেদ তাকে মারধর শুরু করে। পরে উঠানের একটি গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে তাকে মারধর করে। শামীমের চিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসলে তার বিরুদ্ধে ডাব চুরির অভিযোগ তোলে অলি আহমেদ।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সাইফুল বিশ্বাস তার ছেলেকে সেখান থেকে উদ্ধার করে শিবালয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। দুদিন চিকিৎসার পর শামীমকে বাড়িতে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে শিবালয় থানায় অভিযোগ করতে গেলে সাইফুল ইসলামকে ফিরিয়ে দিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয় বলে জানান নির্যাতনের শিকার শামীমের বাবা। বাধ্য হয়ে ২৭ অক্টোবর সাইফুল বিশ্বাস বাদী হয়ে কোর্টে মামলা করেন। আদালত শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা ও শিবালয় উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “গত ২০ নভেম্বর বাদী, ভুক্তভোগী শিশুসহ পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়। এছাড়াও শিশুটির নির্যাতনের ছবি, তাকে হাসপাতালে ভর্তি ও ছাড়পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে।”

“প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে,” উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আগামী দুই-একদিনের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আদালতে পেশ করা হবে বলে।”

নির্যাতিত শিশুর পিতা সাইফুল বিশ্বাস বলেন, “অলি আহম্মেদ প্রভাবশালী ব্যক্তি। মামলা করায় এখন সে ও তার পরিবারের লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।”

অলি আহম্মেদ যৌন নির্যাতন চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করেন। ডাব চুরি করায় শামীমকে গাছে বেঁধে মারধর করেছেন বলে স্বীকার করেন। শিশুটির পরিবারকে কোনো হুমকি দেননি বলে দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে, শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “এই ধরনের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করতে কেউ তার থানায় আসেননি।” থানায় সিসি ক্যামেরা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কেউ যদি চায় তা চেক করে দেখতে পারেন।”

Comments

The Daily Star  | English
Islami Bank's former managing director Abdul Mannan

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago