মিথিলা-সৃজিতের নতুন জীবন

রাফিয়াত রশীদ সবার কাছে মিথিলা নামেই পরিচিত। একাধারে তিনি অভিনয় শিল্পী, লেখক, একজন এনজিও কর্মী, একজন মা এবং মাঝে মাঝে কণ্ঠশিল্পীও বটে। গত রাতে তিনি পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধবদের উপস্থিতিতে ভারতের চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে কলকাতায়। নিজের জীবনের নতুন অধ্যায় সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের কাছে।
রাফিয়াত রশীদ মিথিলা ও সৃজিত মুখার্জি। ছবি: সংগৃহীত

রাফিয়াত রশীদ সবার কাছে মিথিলা নামেই পরিচিত। একাধারে তিনি অভিনয় শিল্পী, লেখক, একজন এনজিও কর্মী, একজন মা এবং মাঝে মাঝে কণ্ঠশিল্পীও বটে। গত রাতে তিনি পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুবান্ধবদের উপস্থিতিতে ভারতের চলচ্চিত্র পরিচালক সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে কলকাতায়। নিজের জীবনের নতুন অধ্যায় সম্পর্কে তিনি কথা বলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের কাছে।

বিয়ের জন্য অভিনন্দন!

অনেক ধন্যবাদ!

সৃজিত সম্পর্কে কিছু বলুন। আপনারা এক হলেন কীভাবে?

সৃজিত এবং আমি প্রথম ফেসবুকে যুক্ত হয়েছি। আমাদের কিছু কমন বন্ধু ছিলো। তাদের মাধ্যমেই ধীরে ধীরে কাছে আসা। পরে, আমরা অর্ণবের মিউজিক ভিডিওতে একসঙ্গে কাজ করেছি। এই মিউজিক ভিডিওটি তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ম্যাচ-কাট প্রোডাকশনে তৈরি হয়েছিলো। আমরা নিয়মিত যোগাযোগ করতাম এবং শেষ পর্যন্ত সেটা প্রেমে পরিণতি পায়।

নতুন শুরুর ভাবনা কী?

আমি আনন্দের সঙ্গে জীবন কাটতে চাই, জীবনকে উপভোগ করতে চাই। এখনই কলকাতায় যাচ্ছি না। আমার ক্যারিয়ারে খুব একটা পরিবর্তন আসবে না।

IMG-0460.JPG
সেলফি। ছবি: সংগৃহীত

এই মুহূর্তের পরিকল্পনা কী?

সুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি আমার পিএইচডি শুরু করতে যাচ্ছি। আগামী সপ্তাহে আমরা দুজনেই জেনেভা যাবো। ওখানে কাজ শেষ করে গ্রিসে হানিমুনে যাবো, অল্প সময়ের জন্য।

মিডিয়াতে এখন কী কাজ করছেন?

বিজ্ঞাপনে কাজ করছি। পাশাপাশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ফটোশুট করছি। এ বছর কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের পণ্যের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলাম। আর নিয়মিত বাংলাভিশনে ‘আমার আমি’ সেলিব্রিটি টকশো উপস্থাপনা করছি। টেলিভিশনে সাধারণত ঈদ বা বিশেষ দিবস কেন্দ্রিক নাটকেই আমি কাজ করি। তবে এখন কিছু ওয়েব সিরিজে কাজ করার কথাও ভাবছি। যেকোনো কিছুতেই রাজি হওয়ার আগে আমাকে অনেক চিন্তা করতে হয়। কারণ, আমার চাকরি আছে। সেই সঙ্গে চাকরির জন্য অনেকটা সময় দেশের বাইরেও থাকতে হয়।

আপনার কর্মজীবন সম্পর্কে কিছু জানতে চাই...

আমি ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের হয়ে কাজ করি। এটা ব্র্যাকের আন্তর্জাতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে। বর্তমানে বাংলাদেশের বাইরে ১১টি দেশে কাজ করছে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল। আমি আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট (ইসিডি) প্রোগ্রামের প্রধান হিসাবে উগান্ডা, তানজানিয়া এবং লাইবেরিয়াতে নাটকের মাধ্যমে শিক্ষা প্রচার করছি। আমাকে অনেক দেশে যেতে হয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ, প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ এবং কর্মশালা পরিচালনার জন্য। আমি আমার কাজ নিয়ে এতোটাই আগ্রহী এবং এতোটাই সময় দেই যে, আমার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধব মজা করে বলে- আমি ব্র্যাককেই বিয়ে করেছি।

IMG-0462.JPG
মিথিলা-সৃজিত। ছবি: সংগৃহীত

যেসব মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন, তাদের নিয়ে কিছু বলুন?

পূর্ব আফ্রিকাতে এই মুহূর্তে আমার একটি প্রকল্প চলছে, যেখানে তরুণ যেসব মেয়েরা পড়ালেখা ছেড়ে দিয়েছিলো, তাদের লেখাপড়ায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তারা যাতে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করতে পারে, সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারণেই তারা পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। আর্থিক সংকট এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ। এক বছর বা তারও বেশি সময় আগে যারা পড়াশুনা ছেড়েছে, তাদের আমরা বিশেষভাবে যত্ন নেই। যাতে তারা পিছিয়ে পড়া সময়টা পুষিয়ে নিতে পারে। আমরা তাদের কর্মদক্ষতামূলক প্রশিক্ষণও দেই। এর মধ্যে সাধারণত চুল কাটা, কম্পিউটার পরিচালনার মতো কয়েকটি প্রশিক্ষণ আছে। উগান্ডা এবং তানজানিয়ায় এই প্রোগ্রামটি বেশ ভালো চলছে। শুরুতে লাজুক থাকলেও কয়েক মাসের মধ্যেই মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে।

সম্প্রতি বাচ্চাদের জন্য বই লিখেছেন, প্রতিক্রিয়া কেমন পেলেন?

সবসময়ই বাচ্চাদের সাহিত্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আমার ছিলো। এ বছর ১ থেকে ৫ বছর বয়সী বাচ্চাদের জন্য আমার লেখা দুটি বই  ব্র্যাক থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ২০২০ সালের বইমেলায় প্রকাশ করা জন্য আমি একটি বই নিয়ে কাজ করছি। বইটির প্রচ্ছদের জন্য কাজ করছেন জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট মোর্শেদ মিশু। লেখক অনিক খান বইটির সম্পাদনায় আমাকে সহায়তা করছেন।

আপনি একজন কন্যার মা, কাজ করছেন তরুণীদের নিয়ে। আপনার দৃষ্টিতে আদর্শ বাংলাদেশ কেমন?

মেয়েরা-নারীরা যখন রাস্তায় হাঁটতে ভয় পাবেন না, জনসম্মুখে এবং বাড়িতে মানসিক বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হবেন না, যখন তারা সম্মানিত হবেন, সমান অধিকার পাবেন, নারীরা যখন বড় স্বপ্ন দেখতে পারবেন এবং পরিবার ও সমাজ তাদের সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে, তখনই তা হবে আমার আদর্শ বাংলাদেশ।

Comments

The Daily Star  | English
two new murder cases filed against Sheikh Hasina

Hasina made accused in another ICT case

Another complaint has been filed with the International Crimes Tribunal (ICT) against former prime minister Sheikh Hasina over the killing of Farhan Faiyaz, a 17-year-old student of Dhaka Residential Model College (DRMC), during the student movement in the city's Mohammadpur area on July 18.

56m ago