‘এক মধ্যরাতে স্বাধীনতা পেয়েছিলো ভারত, আর এক মধ্যরাতে তা হারালো’

বিরোধীদের আপত্তি, হইচই ও বিতর্কের মধ্য দিয়ে ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ৩১১টি এবং এর বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ৮০টি।
Asaduddin Owais
৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ভারতের এআইএমআইএম দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ছিঁড়ে ফেলেন। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

বিরোধীদের আপত্তি, হইচই ও বিতর্কের মধ্য দিয়ে ভারতের লোকসভায় পাস হয়েছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ৩১১টি এবং এর বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ৮০টি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, আজ (১০ ডিসেম্বর) ভোররাতে পাস হওয়া বিলটিতে বিজেপি ছাড়া বেশকিছু দল সমর্থন জানিয়েছে। লোকসভায় ভোটাভুটি চলাকালে সংযুক্ত জনতা দল, বিজু জনতা দল, শিবসেনা, এআইডিএমকে, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতিসহ বিভিন্ন দল নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে তাদের সমর্থন জানিয়েছে।

রাজ্যসভায় এই বিল পাশ করা এখন শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা ছাড়া আর কিছুই নয় বলেও সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রত্যেক সদস্যের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় জানান যে, লক্ষাধিক শরণার্থীদের দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্তি দেওয়ার একমাত্র রাস্তা হলো এই বিল। এই বিলের মাধ্যমেই শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানের কাজ অনেক সহজ হয়ে উঠবে। তার মতে এই বিল কোনোভাবেই অসাংবিধানিক নয়।

লোকসভায় বিলটি পাস হওয়ার পরে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেন, “‘আনন্দিত যে লোকসভায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল, ২০১৯ পাস হয়ে গেল সমৃদ্ধশালী ও ব্যাপক বিতর্কের মধ্যে। যে সাংসদরা ও দলগুলি এই বিলকে সমর্থন করেছেন আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। এই বিল ভারতের শতাব্দী প্রাচীন আত্তীকরণের তত্ত্ব ও মানবতাবাদী মূল্যবোধের অনুসারী।”

এর আগে অধিবেশনের শুরুতে অমিত শাহ জানান, এই বিল থেকে মুসলিম বা উত্তর-পূর্ব ভারতের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কেননা, এই বিলের লক্ষ্য সংখ্যালঘুদের সাহায্য করা।

তিনি বলেন, “নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, কারণ তারা সেখানে সংখ্যালঘু নয়। বিষয়টি এতোটাই সরল।”

নতুন দিল্লি ভারতকে “হিন্দু পাকিস্তান” বানাতে চাচ্ছে, একথাও নাকচ করে দিয়ে অমিত শাহ বলেন, “এটা ভুল কথা। ভারতে মুসলিমদের সংখ্যা ৯.৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৪.২ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা ২৩ শতাংশ থেকে কমতে কমতে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে।”

কংগ্রেস এই বিলের বিরোধিতা করেছে। দলের নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, “এই বিল সংবিধানবিরোধী। সংবিধানের সারমর্ম এবং বাবাসাহেব আম্বেদকর প্রস্তাবিত আদর্শের বিরোধী।”

একই দলের শশী থারুর বলেন, “বিজেপির চিন্তাভাবনা পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী মুহম্মদ আলি জিন্নাহর মতোই।”

১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনে বলা রয়েছে, এদেশে গত ১৪ বছরের মধ্যে ১১ বছর বসবাস করলেই কেউ এদেশের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারে। সংশোধনী বিলে এই সময়সীমাকে অ-মুসলিমদের জন্য পাঁচ বছর করতে চাওয়া হয়েছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, এই বিল সম্পর্কে বিরোধীরা যখন বলছেন, “এক মধ্যরাতে স্বাধীনতা পেয়েছিলো ভারত। আর এক মধ্যরাতে তা হারালো।” তখন অমিত শাহের দাবি, “আগামীকাল সোনালি সূর্য উঠবে।”

Comments

The Daily Star  | English
government changed office hours

Govt office hours 9am-3pm from Sunday to Tuesday

The government offices will be open from 9:00am to 3:00pm for the next three days -- from Sunday to Tuesday -- this week, Public Administration Minister Farhad Hossain said today

1h ago