শানাকার ঝড়ে উড়ে গেল রংপুর
বঙ্গবন্ধু বিপিএলের প্রথম দিনটা দর্শক খরাতেই কেটেছে। তবে স্বল্প সংখ্যক দর্শক যারা গাঁটের টাকা খরচ করে উচ্চ মূল্যের টিকেট কিনে মাঠে এসেছিলেন, তাদের টাকার ষোলোআনাই উশুল হয়েছে। আর তা করে দিয়েছেন লঙ্কান তারকা দাসুন শানাকা। ব্যাট হাতে এদিন মিরপুরে ঝড় তুলেছেন। তার ব্যাটেই রংপুর র্যাঞ্জার্সের বিপক্ষে বড় জয় মিলেছে কুমিল্লা ওয়ারিয়ার্সের। ১০৫ রানের জয়ে শুভ সূচনা করল দলটি।
নিজেদের ইনিংসের শেষ তিন ওভারে ৬৫ রান তোলে কুমিল্লা। তার প্রায় পুরোটাই আসে শানাকার ব্যাট থেকে। ম্যাচের পার্থক্য গড়ে যায় এখানেই। লড়াকু স্কোর মিলে যায় কুমিল্লার। অথচ এক সময় মনে হয়েছিল একশ রান কিংবা তার সামান্য কিছু বেশি করতে পারে তারা। তার ঝড়েই প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে কুমিল্লা। জবাবে কুমিল্লার বোলারদের তোপে পড়ে দলটি। ৪৮ বল বাকী থাকতে ৬৮ রানেই গুটিয়ে যায় রংপুর।
এদিন টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কুমিল্লা। কিন্তু ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় তারা। এরপর সৌম্য সরকার ও ভানুকা রাজাপাকসার জুটিতে আসে ৪১ রান। তাতে প্রাথমিক চাপ কাটে। কিন্তু ছয় রানের ব্যবধানে এ দুই ব্যাটসম্যান বিদায় নিলে ফের চাপে পড়ে তারা। এরপর ডেভিড মালান ও সাব্বির রহমান ৩৮ রানের জুটি গড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দলটি। কিন্তু এরপর মাত্র চার রানের ব্যবধান তিনটি উইকেট হারিয়ে বড় বিপদে পড়ে যায় তারা। এরপর শানাকার ঝড়। আবু হায়দার রনির সঙ্গে ৩৫ ও সানজামুল ইসলামের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৪৯ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক। ফলে লড়াকু সংগ্রহই পায় দলটি।
মাত্র ৩১ বলে ৭৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন শানাকা। ৩টি চারের সঙ্গে ৯টি ছক্কা মারেন এ ব্যাটসম্যান। এছাড়া সৌম্য ২৬ ও মালান ২৫ রান করেন। রংপুরের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন সঞ্জিত শাহা, মোস্তাফিজুর রহমান ও লুইস গ্রেগোরি।
লক্ষ্য তাড়ায় আবু হায়দার রনির ওভারে দুটি ছক্কা মেরে ইঙ্গিতটা ভালোই দিচ্ছিলেন মোহাম্মদ শাহজাদ। কিন্তু স্বদেশী মুজিব উর রহমানের পরের ওভারেই বিদায় নেন তিনি। এরপর হুড়মুড় করেই যেন ভেঙে পড়ে তাদের ইনিংস। দলীয় ৩৩ থেকে ৩৪ রানে যেতেই হারায় তিনটি উইকেট। এরপরও তেমন কেউ দায়িত্ব নিতে পারেননি। অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি ফিরে যান ব্যক্তিগত ১১ রানে।
তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে আশা জিইয়ে রেখেছিলেন মোহাম্মদ নাঈম। ব্যক্তিগত ১৭ রানে তাকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সৌম্য সরকার। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরও এটা। কার্যত তখনই শেষ হয়ে যায় তাদের জয়ের আশা। সবমিলিয়ে মাত্র তিন জন ব্যাটসম্যান ছুঁতে পেরেছেন দুই অঙ্কের কোটা। তার উপর জাকির হাসান ইনজুরিতে পড়ায় ব্যাটিং করতে পারেননি।
কুমিল্লার পক্ষে ১৪ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন আল-আমিন। ২টি করে উইকেট পান সৌম্য ও সানজামুল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
কুমিল্লা ওয়ারিয়ার্স: ২০ ওভারে ১৭৩/৭ (ইয়াসির ০, রাজাপাকসা ১৫, সৌম্য ২৬, মালান ২৫, সাব্বির ১৯, শানাকা ৭৫*, মাহিদুল ২, হায়দার ৬, সানজামুল ০*; নবি ১/১৪, জুনায়েদ ০/৪৭, সঞ্জিত ২/২৬, মোস্তাফিজ ২/৩৭, তাসকিন ০/২৩, গ্রেগোরি ২/২৫)।
রংপুর র্যাঞ্জার্স: ১৪ ওভারে ৬৮ (শাহজাদ ১৩, নাঈম ১৭, জহুরুল ৫, ফজলে ১, গ্রেগোরি ০, নবি ১১, সঞ্জিত ০, জুনায়েদ ৩, তাসকিন ১, মোস্তাফিজ ৮*; মুজিব ১/৭, হায়দার ১/১৯, আল-আমিন ৩/১৪, শানাকা ০/৬, সৌম্য ২/১২, সানজামুল ২/৪, সাব্বির ০/৪)।
ফলাফল: কুমিল্লা ওয়ারিয়ার্স ১০৫ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: দাসুন শানাকা (কুমিল্লা ওয়ারিয়ার্স)।
Comments