বিক্ষোভে উত্তাল আসামে কারফিউ, সেনা মোতায়েন

‘বিল বাতিল না করা পর্যন্ত কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবো না’

আসামের ১০টি জেলায় গতকাল (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ নাগরিকরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বিক্ষোভকারীদের। সেনাবাহিনীকে রাস্তায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১১ ডিসেম্বর ২০১৯, ভারতের নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন আসামের সাধারণ নাগরিকরা। ছবি: সংগৃহীত

আসামের ১০টি জেলায় গতকাল (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ নাগরিকরা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে বিক্ষোভকারীদের। সেনাবাহিনীকে রাস্তায় থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, বিক্ষোভ চলাকালে গুয়াহাটি বিমানবন্দরে আটকা পড়েছিলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোওয়াল। তিনি যখন আটকা পড়েন, সেসময় রাজ্যসভায় বিতর্ক চলছিলো নাগরিকত্ব বিল নিয়ে। এরপর, কোনো রকমে মুখ্যমন্ত্রীকে শহরের ভিতর দিয়ে নিয়ে যান তার নিরাপত্তারক্ষীরা।

কোনো দল বা ছাত্র সংগঠন ধর্মঘটের ডাক না দিলেও সচিবালয়ের সামনে রাজ্যে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভরত ছাত্ররা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শূন্যে গুলি ছোঁড়ে ‍পুলিশ। এছাড়াও ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। আগুন ধরিয়ে দেওয়ায় ব্যবহার করা হয় জলকামান। ছাত্রনেতারা জানিয়েছেন, সচিবালয়ের সামনে পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন বহু বিক্ষোভকারী।

রাজ্যের গুয়াহাটি, ডিব্রুগড় এবং জোরহাট এলাকায় কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।

সচিবালয় ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ। বিক্ষোভকারীরা সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দিলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়।

পিটিআই জানিয়েছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের জন্য তৈরি করা মঞ্চও ভেঙে দেয় বিক্ষোভকারীরা। সরকারি ব্যানার এবং পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং সচিবালয়ের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

এক ছাত্রনেতাকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানিয়েছে, “এটি সর্বানন্দ সোনোওয়ালের নেতৃত্বাধীন একটি বর্বরের সরকার। নাগরিকত্ব বিল বাতিল না করা পর্যন্ত আমরা কোনো চাপের সামনে মাথা নত করবো না।”

ডিব্রুগড়ে বিলের প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিশ। পাথর ছোঁড়ায় এক সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

গতকাল সকাল থেকেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে জোরহাট, গোলাঘাট, তিনসুকিয়া, বঙ্গাইগাঁও, নওগাঁও শোণিতপুরসহ বিভিন্ন জেলায়।

মুখ্যমন্ত্রীর শহর চাবুয়ায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদে একটি মোটরসাইকেল রালিও করা হয়।

গতকাল বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করার সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আবারো বলেন যে, তিনি উত্তর-পূর্বের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের বুঝিয়েছেন যে, এই বিল প্রায় গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। তিনি বিক্ষোভ-আন্দোলন থেকে সবাইকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান।

আরও পড়ুন:

‘হিন্দু পাকিস্তান’

ভারতের রাজ্যসভায় পাস নাগরিকত্ব সংশোধন বিল

প্রতিবেশী দেশের অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথে ভারত

অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে ভারতের লোকসভায় বিল পাস

Comments

The Daily Star  | English
Yunus meets Malaysian PM Anwar Ibrahim

Anwar Ibrahim to consider issue of Bangladeshi workers

Malaysian Prime Minister Anwar Ibrahim today promised to consider the issue of 18,000 Bangladeshi workers who missed a deadline to enter Malaysia saying that they need workers, but not "modern slaves"

4h ago