খুলনায় অনশনে অসুস্থ অর্ধ শতাধিক পাটকল শ্রমিক

ক্রমান্বয়ে বাড়ছে খুলনায় আমরণ অনশনে অসুস্থ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের সংখ্যা। আজ (১২ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শ্রমিক নেতারা জানান, আগামী ১৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় পাট মন্ত্রণালয়ে আন্দোলনরত পাটকল শ্রমিকদের সঙ্গে পাটমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুলনার কর্মসূচি স্থগিত করার অনুরোধ করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। কিন্তু, শ্রমিকরা তা মানেননি।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে তারা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
আন্দোলনে থাকা পাটকলগুলো হচ্ছে, ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল ও ইস্টার্ন জুট মিল, কার্পেটিং জুট মিল ও জেজেআই জুট মিল।
আন্দোলনকারীরা জানান, শ্রমিকরা নিজেদের কাঁথা-কম্বল নিয়ে অনশনে নেমেছেন। সমস্যার সমাধান করতে যদি মরতে হয় তবুও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চলবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শ্রমিকরা ঘরে ফিরবে না।
আজ সকালে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান বলেন, শীতে এবং অনাহারে থাকায় প্রায় শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ২৫/২৬ জনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের অনশনস্থলে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গতরাতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের বাসায় শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রতিমন্ত্রী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করার প্রস্তাব দেন। ১৫ তারিখ ঢাকার মিটিংয়ে শ্রমিকদের দাবি পূরণ করা হবে। কিন্তু, শ্রমিক নেতারা মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানান।
এদিকে, অনশন কর্মসূচির কারণে পাটকলগুলোতে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। একইসঙ্গে বিআইডিসি সড়কের দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। পাটকল শ্রমিকদের আন্দোলনে খুলনার শিল্পাঞ্চল উত্তাল হয়ে পড়েছে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে গোটা শিল্পাঞ্চলে।
উল্লেখ্য, ১১ দফা দাবিতে গত ১৭ নভেম্বর ছয়দিনের কর্মসূচির ডাক দিয়েছিলো রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ।
Comments