জাজাইয়ের ফিফটিতে বিধ্বস্ত মাশরাফির ঢাকা
বোলাররা মামুলি রানে বেঁধে ফেললেন প্রতিপক্ষকে। এরপর সহজ লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতেই জয়ের ভিত পেল রাজশাহী রয়্যালস। ঝড় তোলা লিটন দাস সাজঘরে ফিরলেও হজরতউল্লাহ জাজাই একপ্রান্ত আগলে রাখলেন। আফগানিস্তানের ওপেনারের হাফসেঞ্চুরিতে তারকাখচিত ঢাকা প্লাটুনকে উড়িয়ে আসরে শুভ সূচনা করল রাজশাহী।
বঙ্গবন্ধু বিপিএলে বৃহস্পতিবারের (১২ ডিসেম্বর) প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জিতেছে আন্দ্রে রাসেলের দল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৪ রান তোলে মাশরাফি বিন মর্তুজার ঢাকা। জবাবে ১৮.২ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে রাজশাহী।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে জাজাই অপরাজিত থাকেন ৪৭ বলে ৫৬ রানে। শুরুতে টাইমিং পেতে সংগ্রাম করলেও ধীরে ধীরে খোলস ছাড়েন এই বাঁহাতি। তার ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ৩ ছয়। রাজশাহীর ইনিংসের শুরুতে লিটনের সঙ্গে ৫০ বলে ৬২ রানের জুটি গড়েন তিনি। এরপর শোয়েব মালিক নিয়ে ৬০ বলে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ৭৪ রান।
লিটন ২৭ বলে ৩৯ রান করেন ৪ চার ও ২ ছয়ে। নবম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারার পর দ্বিতীয় বলেও উড়িয়ে মারতে গিয়ে কুপোকাত হন তিনি। তার উইকেটটি নেন মিনহাজুল আবেদিন আফ্রিদি। মালিক ৩৬ বলে ৩৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তিনি মারেন ৩ চার ও ১ ছয়। ঢাকার দলনেতা মাশরাফি ১৫৯ দিন পর মাঠে নেমে ৩ ওভারে দেন ১৮ রান। পাননি উইকেট।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার ব্যাটসম্যানরা গড়তে পারেননি কোনো ভালো জুটি। কারও কাছ থেকে আসেনি বড় ইনিংস। ফলে ধুঁকতে হয়েছে দলটিকে। শেষ তিন ওভারে ওয়াহাব রিয়াজ-মাশরাফিরা মেরেকেটে ৩৮ রান তোলায় অবশ্য ভদ্রস্থ সংগ্রহ পায় তারা।
ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় ঢাকা। দুই মাস পর মাঠে নামা তারকা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল হন ব্যর্থ। ৫ রান করে ফেরেন আবু জায়েদ রাহীর শিকার হয়ে। তিনে নামা লরি ইভান্সকে সাজঘরে পাঠান ফরহাদ রেজা।
তৃতীয় উইকেটে ৩৯ রানের জুটিতে প্রতিরোধ গড়েন এনামুল হক বিজয় ও জাকের আলী। তাদের ব্যাটিংয়ে লড়াই করার পুঁজি পাওয়ার আভাস ছিল। তবে ২১ রান করে জাকের রানআউট হয়ে গেলে মড়ক লাগে ঢাকার ইনিংসে। মিডল অর্ডারে হাল ধরতে পারেননি কেউ। ১৩ বলের মধ্যে স্কোরবোর্ডে মাত্র ৫ রান যোগ করতে ৪ উইকেট হারায় তারা।
দ্বাদশ ওভারের শেষ বলে থিসারা পেরেরাকে আন্দ্রে রাসেলের ক্যাচে পরিণত করেন তাইজুল ইসলাম। পরের ওভারের প্রথম বলে আউট হন এনামুল। দলের পক্ষে ৩৩ বলে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ১ চার ও ২ ছয়। শহিদ আফ্রিদিকে আসা-যাওয়ার মধ্যে রাখেন রবি বোপারা। ১ বল খেলে রানের খাতা খুলতে পারেননি পাকিস্তানের আগ্রাসী ব্যাটার।
শেষদিকে ওয়াহাব ১২ বলে ১৯ ও ঢাকার অধিনায়ক মাশরাফি ১০ বলে ২ ছক্কায় অপরাজিত ১৮ রান করেন। রাজশাহীর হয়ে ২ উইকেট নেন পেসার আবু জায়েদ। তবে তিনি ছিলেন বেজায় খরুচে। ইনিংসের শেষ ওভারে ২০ রানসহ মোট ৪৩ রান দেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৩৪/৯ (তামিম ৫, এনামুল ৩৮, ইভান্স ১৩, জাকের ২১, থিসারা ১, আরিফুল ৫, আফ্রিদি ০, মেহেদী ৬, ওয়াহাব ১৯, মাশরাফি ১৮*, মাহমুদ ০*; রাসেল ০/৮, আবু জায়েদ ২/৪৩, তাইজুল ১/২৩, ফরহাদ ১/১৪, কাপালি ১/১৮, মিনহাজুল ০/১২, বোপারা ১/১৫)
রাজশাহী রয়্যালস: ১৮.২ ওভারে ১৩৬/১ (জাজাই ৫৬*, লিটন ৩৯, মালিক ৩৬*; মাশরাফি ০/১৮, মাহমুদ ০/৩৫, মেহেদী ১/২৩, ওয়াহাব ০/২৬, আফ্রিদি ০/২৫, থিসারা ০/৬)।
Comments