তামিম-থিসারায় প্রথম জয় পেল ঢাকা
রান খরা কাটিয়ে ছন্দে ফিরলেন তামিম ইকবাল খান। ছয় মাস করলেন ফিফটি। তার সঙ্গে ঝড় তুললেন লঙ্কান তারকা থিসারা পেরেরা। আর বল হাতে তো রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। ছয় মাস পর উইকেটের দেখা পেলেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাও। তাতে সবমিলিয়ে দারুণ এক জয় পেয়েছে ঢাকা প্লাটুন। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সকে ২০ রানে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু বিপিএলে প্রথম জয়ের দেখা পেয়েছে মাশরাফির দল।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮০ রান করে ঢাকা প্লাটুন। জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬০ রানের বেশি করতে পারেনি কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স।
তবে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা খারাপ করেনি কুমিল্লা। ভানুকা রাজাপাকসার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ওপেনিং জুটিতে আসে ৩২ রান। এরমধ্যে ২৯ রানই করেন রাজাপাকসা। তাকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন অধিনায়ক মাশরাফি। তাতে কাটান দীর্ঘদিনের উইকেট খরা। এর আগের পাঁচটি ইনিংসে কোন উইকেট পাননি অধিনায়ক। সবশেষ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জনি বেয়ারস্টোর উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। এরপর দ্রুত আরেক ওপেনার ইয়াসির আলিকে ফেরান মেহেদী হাসান।
তবে তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে নিয়ে দলের হাল ধরেন ডেভিড মালান। গড়েন ৫০ রানের জুটি। সৌম্যকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন পাকিস্তানি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। আর জুটি ভাঙতেই ফের চাপে পড়ে যায় দলটি। ১২ রানের ব্যবধানে হারায় ৩টি উইকেট। তবে কুমিল্লার আশা জিইয়ে রেখে এক প্রান্ত আগলে ধরে রাখেন মালান। সঙ্গী হিসেবে পান তরুণ মাহিদুল ইসলাম অংকনকে। ষষ্ঠ উইকেটে ৪৪ রান যোগ করেছিলেন এ দুই ব্যাটসম্যান। এ জুটিও ভাঙেন ওয়াহাব।
এরপরই কুমিল্লা পরে থিসারার বোলিং তোপে। একাই ৫টি উইকেট তুলে নেন এ লঙ্কান পেসার। খরচ করেন মাত্র ৩০ রান। এছাড়া ২টি উইকেট নেন ওয়াহাব। কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন মালান। এছাড়া মাহিদুল ৩৭ ও সৌম্য সরকার ৩৫ রান করেন।
এদিন টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে ঢাকা। শুরুতেই ধাক্কা খায় দলটি। খালি হাতে ফিরে যান ওপেনার এনামুল হক বিজয়। এরপর খুব বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মেহেদী হাসানও। তবে এক প্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। এভিন লুইসকে নিয়ে দেখে শুনে ব্যাট চালিয়ে ইনিংসে মেরামত করেন তিনি। তৃতীয় উইকেটে স্কোরবোর্ডে ৭৫ রান যোগ করেন এ দুই ব্যাটসম্যান। পরে থিসারা পেরেরার সঙ্গে ৪৮ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়ে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন তামিম।
দাসুন শানাকার বলে আউট হওয়ার আগে ৫৩ বলে ৭৪ রান করেছেন তামিম। এ রান করতে ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা মেরেছেন এ ওপেনার। এর আগে ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করেন তিনি। তবে শুরুটা ধীরে করেন তামিম। ব্যক্তিগত ৪ রানে জীবনও পান। এরপর নিজেকে আরও গুটিয়ে নেন। প্রথম ২৬ বলে রান ছিল মাত্র ১৭। পরে ধীরে ধীরে খোলস ভাঙেন। খেলেন কার্যকরী এক ইনিংস।
বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন থিসারাও। মাত্র ১৭ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ফলে শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১৮০ রানের সংগ্রহ করে ঢাকা। কুমিল্লার পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন শানাকা ও সৌম্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৮০/৭ (বিজয় ০, তামিম ৭৪, মেহেদী ১২, ইভান্স ২৩, থিসারা ৪২*, আফ্রিদি ৪, ওয়াহাব ০, মাশরাফি ৯; মুজিব ১/১৫, আল-আমিন ০/২৯, হায়দার ১/২৯, শানাকা ২/৪৮, সৌম্য ২/৩৯, সানজামুল ০/১৫)।
কুমিল্লা ওয়ারিয়র্স: ২০ ওভারে ১৬০/৯ (রাজাপাকসা ২৯, ইয়াসির ৩, সৌম্য ৩৫, মালান ৪০, সাব্বির ৪, শানাকা ০, মাহিদুল ৩৭, হায়দার ০, সানজামুল ১, মুজিব ৪*, আল-আমিন ২*; মাশরাফি ১/২৭, মেহেদী ১/২৮, শুভাগত ০/১৪, হাসান ০/১৭, ওয়াহাব ২/১৬, আফ্রিদি ০/২৪, থিসারা ৫/৩০)।
ফলাফল: ঢাকা প্লাটুন ২০ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: থিসারা পেরেরা (ঢাকা প্লাটুন)।
Comments