না. গঞ্জে বিএনপির র‌্যালিতে পুলিশের লাঠিচার্জ: আহত ১০, আটক ৪, লাঞ্ছিত ২ পুলিশ

১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, নারায়ণগঞ্জে বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দলের পৃথক র‌্যালিতে বাধা দিয়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। ছবি: স্টার

বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ (১৬ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দলের পৃথক র‌্যালিতে বাধা দিয়ে লাঠিপেটা ও ব্যানার ফেস্টুন ছিনিয়ে নেওয়া অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।

এতে অন্তত ১০ কর্মী আহত হয়েছেন এবং চার কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এছাড়াও, র‌্যালিতে বাধা দেওয়ায় পরিদর্শকসহ দুই পুলিশ সদস্যকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ বেলা সাড়ে ১১টায় শহরের খানপুর এলাকা থেকে মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজলের নেতৃত্বে র‌্যালি বের হয়। সেসময় র‌্যালি থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও জিয়াউর রহমানের নামে বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।

র‌্যালিটি চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভের সামনে পৌঁছালে পুলিশ তাতে বাধা দেয়। পরে বাধা উপেক্ষা করে বিজয় স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নেতাকর্মীরা। শ্রদ্ধা জানানো শেষে র‌্যালি নিয়ে যাওয়া পথে মিশনপাড়া মোড়ে পিছন থেকে ধাওয়া দিয়ে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। এতে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তখন মিছিল থেকে তিনজনকে আটক করে পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন মহানগর ছাত্রদলের কর্মী রাকিব হোসেন (৩০), মো. মামুন (২০) এবং স্বপন মিয়া (২০)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, বেলা পৌনে ১১টায় শহরের ২নং রেল গেট এলাকায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে ‘প্রজন্ম ৭১ দল’ ব্যানারে র‌্যালি বের হয়। এতে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া উপস্থিত ছিলেন। সেসময় সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন ব্যানার কেড়ে নিলে তার উপর চড়াও হয় নেতাকর্মীরা। তারা পরে ধাওয়া করে জয়নালকে লাঞ্ছিত করে ও পোশাক ধরে টানাটানি করতে থাকে। এক পর্যায়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য আসলে মিছিলকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেসময় স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী কামরুলকে (৩৭) আটক করে পুলিশ।

অন্যদিকে বেলা ১১টায় শহরের চাষাঢ়ায় বলাকা পেট্রোল পাম্পের সামনে নারায়ণগঞ্জ জেলা শ্রমিক দল র‌্যালি বের করে। এতে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদারসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সেসময় সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম বাধা দিয়ে ব্যানার কেড়ে নিলে তার উপর চড়াও হয় নেতাকর্মীরা। তারা এসআই সাইফুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য গিয়ে লাঠিচার্জ করে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “শান্তিপূর্ণ র‌্যালিতে কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। লাঠিচার্জে মহানগর যুবদল সদস্য তুহিন, ছাত্রদল কর্মী হৃদয়, জাহিদসহ অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন। এছাড়াও চারজনকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়ে ব্যানার কেড়ে নেয় পুলিশ। এতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের বাক-বিতণ্ডা হয়। পরে নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ডেইলি স্টারকে বলেন, “শহরে পৃথকস্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তা বন্ধ করে মিছিল ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছিলো তাই পুলিশ বাধা দেয়।”

এসময় পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নাল আবেদীন ও উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলামকে বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঞ্ছিত করে। এজন্য তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। সেসময় চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

The Daily Star  | English
NCP will not accept delay in Teesta master plan

Won’t accept any implementation delay: Nahid

National Citizen Party Convener Nahid Islam yesterday said his party would not accept any delay or political maneuver over implementing the Teesta master plan.

7h ago