দেশি কোচ ইস্যুতে পাপনের সঙ্গে একমত নন সুজন
বাংলাদেশ দলে যখনই কোনো কোচের পদ খালি হয়, তখনই বিকল্প হিসেবে বিদেশি কোচের দিকেই নজর থাকে বিসিবির। মাঝে-মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে দেশি কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলেও পূর্ণ মেয়াদে ছিলেন না কেউই। কারণ বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের মতে, স্কিলে বিদেশিদের থেকে দেশের কোচরা অনেক পিছিয়ে। কিন্তু বিসিবি সভাপতির এ মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন দুবার অস্থায়ী ভিত্তিতে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব পালন করা বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন। তার মতে, বিদেশিদের মতো তারাও সমান দক্ষ।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ শার্ল ল্যাঙ্গাফেল্ট দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাওয়ায় দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাস না পেরোতেই কাজ ছাড়ছেন তিনি। অথচ আগামী বছর অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তি ছিল তার। স্বাভাবিকভাবেই তার চলে যাওয়ায় আবারো গুঞ্জন উঠেছে কে হচ্ছেন বাংলাদেশের নতুন পেস বোলিং কোচ। দেশি আরও অনেকের মতো এ পদ পেতে আগ্রহ রয়েছে সুজনেরও। কিন্তু বিসিবি সভাপতি দেশিদের উপর আস্থা পান না।
কিন্তু পাপনের মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন সুজন, ‘পাপন ভাই কেন বলেছেন আমি জানি না। আমি মনে করি না স্কিলের দিক থেকে দেশিরা পিছিয়ে আছে। ক্রিকেট আসলে ফিক্সড টেকনিক্যাল একটা খেলা। এটাতে কাভার ড্রাইভ, স্কয়ার-কাট যখন মারবে, তখন একই টেকনিকে সব ব্যাটসম্যান মারে। কেউ কিন্তু অন্যভাবে মারতে পারবে না, এটা কিন্তু আপনি বলতে পারবেন না। হতে পারে উনি হয়তো বোঝাতে চেয়েছেন যে কাগজে-কলমে আমরা পিছিয়ে আছি। হতে পারে গেম প্ল্যানিং... সেখানে কিন্তু আমাদের ছেলেরা যথেষ্ট ভালো কাজ করছে। স্কিলের দিক থেকে আমি মনে করি না কেউ পিছিয়ে আছি আমরা।’
স্কিল থাকা সত্ত্বেও দেশিরা সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানালেন বিসিবির এ পরিচালক, ‘আমাদের স্কিল জানা আছে। সুযোগ পাচ্ছি না আমরা। আপনি একটা কোচকে কীভাবে যাচাই করবেন, আপনি তো একটা সিরিজ দিয়ে যাচাই করতে পারেন না। বাংলাদেশ দল যদি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলে আপনি কি একজন কোচকে যাচাই করতে পারবেন? একটা সময় ধরে কাজ করলে আপনি যাচাই করতে পারবেন। দল কেমন, কাদের বিপক্ষে খেলছেন, কী পরিকল্পনা, কোন কন্ডিশনে খেলছেন- সবকিছুই কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কোচের জন্য। একজন কোচ নিয়োগ দিয়ে তার ওপর বিশ্বাস রাখাটা খুব জরুরি এবং তাকে সে সময়টা দেওয়া উচিত।’
দেশি কোচদের সুযোগ দেওয়ার যুক্তিতে খুলনা টাইগার্সের কোচ জেমস ফস্টারের উদাহরণ টেনে সুজন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যারা ভালো কোচিং করাচ্ছে তাদের এখন একটা সুযোগ দেওয়া যেতেই পারে। আমি জেমস ফস্টারের কথাই বলি, মাত্রই খেলা ছাড়লেন। ২০১৮ সালে। এক বছরের মধ্যেই কিন্তু বিপিএলের হেড কোচ হচ্ছেন। সে সুযোগটা কিন্তু আমাদের ছেলেদের নেই। বিসিবির উচিত স্থানীয় কোচদের তুলে এনে কাজের সুযোগ করে দেওয়া, সেটা জাতীয় দল হতে পারে এইচপিতে হতে পারে।’
ল্যাঙ্গাফেল্ট চলে যাওয়ায় পেস বোলিং কোচের শূন্য পদে আগ্রহ দেখিয়েছেন সুজন। তবে অন্তর্বর্তী নয়, পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব চান তিনি।
Comments