‘রাজাকার যদি মুক্তিযোদ্ধা হয়, তাহলে আমাদের মধ্যে পার্থক্য কী থাকছে?’
“আমরা সম্মান কিংবা সনদ পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করিনি। যুদ্ধ করেছি, দেশ ও মানুষের স্বাধীনতার জন্য। কিন্তু আজকে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর আসল মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাচ্ছে রাজাকার আর রাজাকার হয়ে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা। এমন ঘটনা দেখে লজ্জায় মরে যেতে করতে ইচ্ছে করে।”
আজ (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ লাইনে চাঁদপুর জেলা পুলিশের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মহাপরিচালক ও তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নকারী মমিন উল্যাহ পাটোয়ারী (বীর প্রতীক)।
তিনি বলেন, “যারা সত্যিকারের মুক্তিযোদ্ধা তাদের নিয়ে সিনেমা লেখা সম্ভব। যদি ভালো মানের লেখক হয়, তাহলে একাধিক সিনেমা করাও সম্ভব। অদ্ভুত লাগে এখন, রাজাকার হয়ে যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা আর মুক্তিযোদ্ধা হয়ে যাচ্ছে রাজাকার। বর্তমানে এসব বিষয়ে একজন আরেকজনকে দোষারোপ করছেন।
“আমি ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মহাপরিচালক থাকা অবস্থায় সারাদেশের একটি মুক্তিযোদ্ধার তালিকা করেছিলাম তাদের সম্মাননা দেওয়ার জন্য। তখন আমরা দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহায়তায় ১ লাখ ৫৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধার নাম পেয়েছিলাম।”
“কিন্তু, বিএনপি সরকার এসে সেটি আরও ৫০ হাজার বাড়িয়েছিলো। কিন্তু, এখন এটি কী করে পাঁচ লাখে রূপ নিয়েছে তা আমার বুঝে আসছে না। তাতেও আপসোস নেই। মুক্তিযোদ্ধা বাড়ছে, বাড়ুক। দেশের মানুষ যদি কিছু পায় তাহলে সমস্যার কিছু নেই। কিন্তু রাজাকার যদি মুক্তিযোদ্ধা হয়, তাহলে আমাদের মধ্যে পার্থক্য কী থাকছে?”
সম্মাননা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুর রহমান। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সম্মাননা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহ আলম, মুক্তিযোদ্ধা শহীদ উল্যাহ মাস্টার, চাঁদপুর প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক লক্ষণ চন্দ্র সূত্রধর প্রমুখ।
Comments