বিটিসিএলের ‘মিউজিক্যাল চেয়ার’: ১১ বছরে ১৯ এমডি

সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিতে (বিটিসিএল) গত ১১ বছরে ১৯ জন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ পেয়েছেন।
btcl logo

সরকারি মালিকানাধীন বাংলাদেশে টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিতে (বিটিসিএল) গত ১১ বছরে ১৯ জন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নিয়োগ পেয়েছেন।

এই ১৯ জনের কয়েকজন আবার একাধিক বার এই শীর্ষ পদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরমধ্যে মাহফুজউদ্দিন একাই তিনবার এমডি ছিলেন।

বিটিসিএলের ইস্কাটন অফিসের নাম ফলকে এক বা একাধিকবার এমডির দায়িত্ব পালন করা মোট ২৫ জনের নাম রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য এভাবে ঘন ঘন এমডি পরিবর্তন করা কখনোই কাম্য নয়। তাছাড়া এসব এমডিরা সরকারি আদেশ পালনে এতোটাই ব্যস্ত ছিলেন যে, বিটিসিএলের উন্নয়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার তেমন সুযোগ পাননি তারা।

তাদের মতে, নেতৃত্ব ঘাটতির কারণে বিটিসিএল লাভজনক কোম্পানি থেকে লোকসানের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।

কোম্পানির জন্মের সময় ২০০৮-০৯ অর্থবছরে বিটিসিএলের মোট আয় ছিলো ১,৬৮৯.৩৬ কোটি টাকা এবং মোট লাভ ছিলো ১০৬.১৫ কোটি টাকা। কিন্তু, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কোম্পানিটি ৩৮৯.৩৯ কোট টাকা লোকসান দিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন বোর্ড (বিটিটিবি) একটি কোম্পানি হিসেবে সরকারিভাবে বিটিসিএলের যাত্রা শুরু হয়।

সম্প্রতি টেলিকমিউনিকেশন সচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন মো. নূর-উর-রহমান। একইসঙ্গে তিনি বিটিসিএল’র চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।

মো. নূর-উর-রহমান বলেন, “কয়েক মাসের জন্য একটি কোম্পানি চালানো বেশ কঠিন। তবুও আমাদের লক্ষ্য সামনের দিনগুলোতে ভালো কিছু করার।”

দ্য ডেইলি স্টারের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ এবং ২০১০ সালে চারবার এমডি পরিবর্তন করা হয় বিটিসিএলে। এছাড়া ২০১৪ সালে তিনবার এমডি পরিবর্তন করে সরকারের মালিকানাধীন এই কোম্পানি। আর চলতি বছরে এ পর্যন্ত তিনবার এমডি পরিবর্তিত হয়েছে।

অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠানটিতে কমপক্ষে ১৯ জন ভারপ্রাপ্ত বা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। কেউ কেউ মাত্র কয়েক সপ্তাহের জন্য এই পদে ছিলেন।

উদাহরণস্বরূপ, আবসার আলম দুবার দায়িত্ব পালন করেছেন। দ্বিতীয় মেয়াদে তিনি ২০১০ সালের ২৮ নভেম্বর থেকে একই সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছরে তিনি মাত্র পাঁচ মাসের জন্য ভারপ্রাপ্তের দায়িত্বেও ছিলেন।

শুধুমাত্র ২০১১ এবং ২০১৭ সালে বিটিসিএল এই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দেয়নি।

বিটিসিএলের কর্মকর্তারা জানান, সরকার কখনো এই কোম্পানির বাইরের কাউকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়নি, কিছু কিছু আমলা ব্যতীত।

চলতি বছরের ৩ নভেম্বর নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. রফিকুল মতিন।

বিটিসিএল চেয়ারম্যান নূর-উর-রহমান বলেন, “…সরকার নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দিয়েছেন। আশা করি, নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্যদের চেয়ে আলাদা হবেন…।”

জানা গেছে, নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুলের সঙ্গে আরও কয়েকজন উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অবসরে যাওয়ার আগে তারা কয়েক বছরের জন্য একসঙ্গে কাজের সুযোগ পাবেন।

মো. রফিকুল মতিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, “পূর্বসূরিদের চেয়ে আমরা বেশি সময় পাবো। এই সময়কে কাজে লাগিয়ে এই কোম্পানিকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই।”

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago