সর্দি বনাম ফ্লু

ওষুধ এবং মুরগির স্যুপ, দুটোই সর্দি এবং ফ্লু আক্রান্ত অবস্থায় প্রয়োজনীয়, তাই না? তার অর্থ এই না যে এই দুটোই এক।
Sneeze
ছবি: সংগৃহীত

ওষুধ এবং মুরগির স্যুপ, দুটোই সর্দি এবং ফ্লু আক্রান্ত অবস্থায় প্রয়োজনীয়, তাই না? তার অর্থ এই না যে এই দুটোই এক।

আপনার কী হয়েছে তা আগে জানা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনার যদি ফ্লু হয়ে থাকে তাহলে তা ফুসফুসে সংক্রামক নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মক জটিলতা তৈরি করতে পারে। ফ্লুর লক্ষণ দেখা দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা করা গেলে খুব দ্রুত কাজ হয়। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ খেলে তা দ্রুত আপনাকে সুস্থ করে তুলবে।

ফ্লু: খুব দ্রুত আসে

যদি আপনার মনে হয় হঠাৎ করেই প্রচণ্ড পরিমাণে ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে এটা ফ্লু হতে পারে। গলা ব্যথা, জ্বর, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, কাশি ইত্যাদি ফ্লুর লক্ষণ। ফ্লু দুই থেকে পাঁচদিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে, এর ধকল কাটাতে এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় সময় লেগে যেতে পারে।

সর্দি ধীরে ধীরে আক্রান্ত করবে এবং ১০ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

জ্বর: সাধারণত ফ্লু হলে হয়

অনেকের সর্দি লাগলে হাল্কা জ্বরও আসে। ফ্লু হলে, জ্বরের তাপমাত্রা ১০০ থেকে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠতে পারে। বাচ্চাদের ফ্লু হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জ্বর আসে। যদিও বাচ্চাদের সাধারণ সর্দি লাগলেও জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ফ্লু: ক্লান্তি কয়েক সপ্তাহ থাকতে পারে

ফ্লু হলে বেশ ক্লান্তি লাগবে আপনার। এই ক্লান্তি এবং দুর্বলতা প্রায় তিন সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। প্রবীণ, মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি বা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মানুষদের ক্ষেত্রে এটি আরও দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

সর্দি লাগলে সাধারণত অল্প কয়েকদিনের জন্য খারাপ লাগবে।

সর্দি এবং ফ্লু: দুটোর ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা হতে পারে

সর্দি এবং ফ্লু উভয় ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা হতে পারে। তবে, ভাইরাসজনিত উপসর্গের সঙ্গে যদি মাথা ব্যথা ও সর্দি থাকে তাহলে তা ফ্লুর কারণে হতে পারে।

কাশি: সর্দি এবং ফ্লু উভয়েরই লক্ষণ

সর্দি এবং ফ্লু দুটিই শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত অসুস্থতা। এগুলো শ্বাসনালীতে প্রভাব ফেলে। তাই সর্দি এবং ফ্লু উভয় ক্ষেত্রেই কাশি হতে পারে।

নিউমোনিয়া মূলত ফুসফুসের সংক্রমণ রোগ। আপনার যদি টানা কাশি হয়, জ্বর ১০২ ডিগ্রী ফারেনহাইটের বেশি থাকে, ঠাণ্ডা লাগে, শ্বাসকষ্ট হয় বা বুকে ব্যথা অনুভূত হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তার দেখানো ভালো।

সর্দি: গলা ব্যথাসহ হতে পারে

উভয় ক্ষেত্রেই এটা প্রাথমিক লক্ষণ। সর্দি হলে নাক বন্ধ ও গলা ব্যথা হতে পারে। আবার গলার ব্যথা ফ্লুর কারণেও হতে পারে। তবে ফ্লু হলে ক্লান্তিসহ অন্যান্য লক্ষণগুলোও বুঝতে পারবেন।

নাক বন্ধ: ঠাণ্ডার কারণে হতে পারে

আপনি যদি জ্বরে না পড়ে শুধু নাক বন্ধ পান তাহলে এটা সর্দি হতে পারে। অবশ্য অনেক সময় ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও বলেন যে তাদের নাক বন্ধ হয়ে আসছে এবং হাঁচি হচ্ছে।

সর্দি এবং ফ্লু উভয়ের কারণে সাইনাস ইনফেকশন হতে পারে। ঘন হলুদ বা সবুজ রঙের সর্দি বের হতে পারে। এছাড়াও সাইনাসের সংক্রমণে কপাল, গাল এবং নাকের সংযোগস্থলে ব্যথাসহ মাথা ব্যথা হতে পারে।

ফ্লু: যতো দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ শুরু করুন

যদি আপনি ফ্লু হওয়ার দুদিনের মধ্যে অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ শুরু করেন তাহলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। অতিরিক্ত কাশি এবং দম বন্ধ হয়ে আসার অনুভূতিও কমে যাবে। ওষুধের লেবেল এবং নির্দেশাবলী মন দিয়ে পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন যে ওষুধগুলো কী কাজ করে এবং কীভাবে খেতে হয়।

হাত ধোয়া জরুরি

আপনি যদি সর্দি বা ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে হাত সব সময় পরিষ্কার রাখুন। এতে অন্য কেউ আপনার দ্বারা ফ্লুতে আক্রান্ত হবেন না। হাত ধোয়ার সময় সাবান ও গরম পানি ব্যবহার করতে পারলে ভালো। সাবান এবং গরম পানি দিয়ে কমপক্ষে বিশ সেকেন্ড দুই হাত ভালোভাবে ঘষে ধুতে হবে। আঙ্গুলের এবং নখের চারপাশও খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। অ্যালকোহল দেওয়া হ্যান্ড স্যানিটাইজারও এক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।

ঠাণ্ডা এবং ফ্লুর এই মৌসুমে বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। বিশেষ করে, যদি আপনার কাশি বা হাঁচি হয়। এতে নিজে ভালো থাকার পাশাপাশি অপরকে সংক্রামিত করার ঝুঁকি থাকবে না।

সূত্র: ওয়েবএমডি

Comments

The Daily Star  | English

Power supply may not improve anytime soon

The power supply situation has further deteriorated across the country as another power plant has completely shut and there is no sign of increasing generation in the immediate future.

12h ago