৯ বার হামলার শিকার নুর, বিচার হলে পুনরাবৃত্তি হতো না: বিশিষ্টজনদের বিবৃতি
ডাকসুর ভিপি ও তার সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা।
তারা বলেছেন, সংবাদপত্রের তথ্যমতে ডাকসুর ভিপি হওয়ার আগে এবং পরে নুরুল হক ও তার সহযোগীরা ৯ বার প্রভাবশালী একটি ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচবার হামলা হয়েছে ঢাবি ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকায়। কিন্তু হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তখন ব্যবস্থা নিলে এ ধরণের বর্বর ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ করা যেত বলে আমরা মনে করি।
গণমাধ্যমে দেওয়া এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন: অ্যাড. সুলতানা কামাল, হামিদা হোসেন, খুশী কবির, বিচারপতি (অব.) নিজামুল হক নাসিম, অ্যাড. রাণা দাশগুপ্ত, অ্যাড. তবারক হোসেইন, জিয়াউদ্দিন তারিক আলী, ড. ইফতেখারুজ্জামান, শাহীন আনাম, জাকির হোসেন, অ্যাড. জেড আই খান পান্না, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, শীপা হাফিজা, শামসুল হুদা, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, রঞ্জন কর্মকার, সালেহ আহমেদ, শরীফ জামিল, রীতা দাশ রায়, রোকেয়া রফিক, শিরিন হক, সরদার জাহাঙ্গীর হোসেন।
তারা বলেন যে, বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে ন্যক্কারজনক এই পরিস্থিতি প্রতিরোধে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রত্যাশিত ভূমিকা পালনে দৃশ্যত ব্যর্থ হয়েছেন। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দলীয় প্রভাবমুক্ত হয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের ভিত্তিতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা বিস্মৃত হওয়ার আগেই আরেকটি বর্বর হামলার ঘটনা ঘটল।”
“আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, দেশে ভিন্ন মতের মানুষদের ওপর নির্যাতন ও হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের দ্বারা সাধারণ ও প্রান্তিক মানুষ নির্যাতিত হচ্ছেন। অথচ কিছুদিন আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ধরনের নিষ্ঠুর ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে যেসব বর্বর হামলার ঘটনা ঘটছে তাতে আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার ভেতরে যে ক্ষতগুলো তৈরি হয়েছে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটছে বলে আমরা মনে করি। এই ঘটনাগুলো বন্ধের জন্য কেবল একটি ঘোষণা বা বিচ্ছিন্ন কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ যথেষ্ট নয়। এই ক্ষত নিরাময়ের জন্য ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা জরুরি।”
বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, “গতকালের ঘটনার প্রেক্ষিতে গণমাধ্যম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রক্টর ও উপাচার্যের দলীয় পক্ষপাতদুষ্ট বক্তব্য হতাশাজনক ও বিব্রতকর। দেশবাসী এধরণের গুরুত্বপূর্ণ পদধারীদের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীলতার দৃষ্টান্ত দেখতে চায়।”
বিবৃতিদাতাদের পক্ষে খুশী কবির গণমাধ্যমে এই বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
Comments