দোয়েল ল্যাপটপ আবারো উৎপাদনে
বন্ধ হয়ে যাওয়া ল্যাপটপের উৎপাদন আবার শুরু করে সরকারি কোম্পানি টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) বলতে গেলে অনেকটা ঘুরেই দাঁড়িয়েছে।
নানাভাবে ধাক্কা খেয়ে ২০১৭ সালে দোয়েল ল্যাপটপের উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ১৪ হাজার ৩৫০টি ল্যাপটপ সংযোজন করে টেশিস। এর মধ্যে ১৩ হাজার ৮২৫টি দোয়েল ল্যাপটপ বিক্রি করেছে তারা। সব মিলে ৫৭ কোটি টাকার ল্যাপটপ।
নতুন করে শুরু করতে গিয়ে তাদেরকে অবশ্য অনেক কিছুই বদলে নিতে হয়েছে। ২০১১ সালের অক্টোবরে যখন দোয়েল ল্যাপটপ বাজারে দেওয়া হয়েছিলো তারপর সব মিলে ১১টি মডেলের ল্যাপটপ উৎপাদন বা সংযোজন করে তারা।
কিন্তু, সংযোজিত ল্যাপটপগুলোর মান সেই অর্থে খুব একটা ভালো ছিলো না। সে কারণে নানা দিকের নানা সমালোচনার পর একটা পর্যায়ে গিয়ে উৎপাদনই বন্ধ করে দিতে হয় টিএসএস-কে।
এর মধ্যে দোয়েল ল্যাপটপের মডেল সংখ্যা ১১ থেকে নামিয়ে চারটি নিয়ে আসা হয়। তারপরেই ঘুরে দাঁড়ানোর গল্পের শুরু।
২০১০ সালে দশ হাজার টাকায় ল্যাপটপ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টেশিস-এর শুরু হয় ল্যাপটপ প্রকল্পের। এক বছরের মাথায় ২০১১ সালের অক্টোবরে এসে প্রথম বাজারে আসে দোয়েল ল্যাপটপ।
২০১৭ সাল পর্যন্ত সব মিলে ৬৩ হাজার ২৪৫টি ল্যাপটপ সংযোজন করে তারা। তার মধ্যে বিক্রিও হয় ৫৮ হাজার ৭৫০টি ল্যাপটপ। তবে শুরুর দিকে সাড়া ফেললেও ধরে ধরে এর গতি কমে আসতে থাকে সে কারণে ২০১৪ সালের পর থেকে বছরে মাত্র কয়েক হাজার করে ল্যাপটপ বিক্রি হচ্ছিলো।
তবে দোয়েলের ক্রেতাদের মধ্যে সব সময়ই সরকারি কোম্পানি বা সংস্থাই ছিলো এগিয়ে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, টেলিকম বিভাগ, আইসিটি বিভাগ এবং সামরিক বাহিনী থেকেও অনেক ল্যাপটপ নিয়েছে।
“নানা সময় আমরা নানা সমালোচনার মধ্য দিয়ে গেছি। কিন্তু, এখন আমরা লড়াই করছি বিদেশি ল্যাপটপের সঙ্গেও,” বলছিলেন টেশিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফখরুল হায়দার চৌধুরী।
তিনি জানান, টেশিস’র এখন দুটি প্রডাকশান লাইন আছে। তবে অর্ডার কম হওয়ায় তারা একটি লাইনেই কাজ করছেন। তবে দক্ষ কর্মীর স্বল্পতাও তাদের জন্যে বড় চ্যালেঞ্জ বলে জানান, ফখরুল হায়দার।
বিক্রয়োত্তর সেবা বাড়াতে টেশিস তাদের সেলস পয়েন্ট অনেকগুলো বাড়িয়েছে। সবগুলো বিভাগীয় শহরে নিজেদের উপস্থিতির বাইরে ঢাকায় সেলস পয়েন্টের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলেও জানান ফখরুল হায়দার।
ট্যাক্স কাঠামোতে পরিবর্তন করার কারণে টেশিসের বাইরেও ওয়াল্টনসহ আরও কয়েকটি কোম্পানি দেশে ল্যাপটপ সংযোজনের কারখানা স্থাপন করেছে।
ল্যাপটপে শুরু থেকে তেমন সুবিধা না করতে পারলেও টেশিস মোবাইল চার্জার, মোবাইল ব্যাটারি, ইলেকট্রিক স্মার্ট মিটার, পিবিএক্স ফোন সিস্টেমসহ আরও নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন এবং সংযোজন করছে টেশিস।
Comments