মুশফিকের ফিফটির পর শহিদুলের ৪ উইকেট

mushfiq
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

মোস্তাফিজুর রহমানের তোপ সামলে খুলনা টাইগার্সকে বড় সংগ্রহ এনে দেন মুশফিকুর রহিম ও নাজিবউল্লাহ জাদরান। এরপর রান তাড়ায় জ্বলে উঠতে পারেননি রংপুর রেঞ্জার্সের কেউই। বিপিএলে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা শেন ওয়াটসনকে অধিনায়ক করেও ভাগ্য বদলাতে পারেনি তারা। শহিদুল ইসলামের দুর্দান্ত বোলিংয়ের জবাব দিতে না পেরে তারা থেমেছে অনেক দূরে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ৫২ রানে জিতেছে মুশফিকের দল। আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৮২ রান তোলে খুলনা। জবাবে রংপুর খুড়িয়ে খুড়িয়ে ৯ উইকেটে ১৩০ রান করে। ষষ্ঠ ম্যাচে এটি খুলনার চতুর্থ জয়। অন্যদিকে, ধুঁকতে থাকা রংপুরের এটি সমান ম্যাচে পঞ্চম হার। এরই মধ্যে তিনবার অধিনায়ক পাল্টেছে তারা।

লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারে থেকেই শুরু হয় রংপুরের দুর্দশা। রবি ফ্রাইলিঙ্কের বলে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দেন আগের রাতে ঢাকায় পা রেখে দলনেতার দায়িত্ব পাওয়া ওয়াটসন। এই অস্ট্রেলিয়ান অভিজ্ঞ ক্রিকেটার করেন ১০ বলে ৫ রান। ঝড় তোলার ইঙ্গিত দেওয়া আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে ফিরতি ক্যাচে আউট করেন মোহাম্মদ আমির। গতিতে পরাস্ত এই বাঁহাতি ৩ চার ও ১ ছয়ে করেন ৯ বলে ২০ রান।

ক্যামেরন ডেলপোর্টকে থিতু হতে দেননি শফিউল ইসলাম। লং অফে অনেকটা দৌড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন শহিদুল। ছটফট করতে থাকা ফজলে মাহমুদ রাব্বিকে নিজের প্রথম বলেই ফেরান শহিদুল। শুরু করেন নিজের উইকেট উৎসব। বিশাল সব ছক্কা হাঁকিয়ে রংপুরকে আশা দেখাচ্ছিলেন লুইস গ্রেগরি। কিন্তু তাকে মাথাব্যথার কারণ হতে দেননি তানভির ইসলাম। ২৬ বলে ১ চার ও ৩ ছয়ে ৩৪ রান করেন গ্রেগরি। এরপর রংপুরের ইনিংস আর বেশি দূর যায়নি।

১৫তম ওভারে তরুণ পেসার শহিদুল করেন জোড়া শিকার। আসর জুড়ে নিষ্প্রভ মোহাম্মদ নবি এদিনও হতাশ করেন লং অনে ক্যাচ দিয়ে। বোল্ড হন আটে নামা জহুরুল ইসলাম। নিজের পরের ওভারে আবারও রংপুরের ইনিংসে আঘাত করেন ডানহাতি শহিদুল। বিদায় করেন ১৩ বলে ১৬ রান করা সাদমান ইসলামকে।

এরপর তানভিরের দ্বিতীয় শিকার হন রানের খাতা খুলতে না পারা সঞ্জিত। ফলে ২৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারায় রংপুর। শেষদিকে মোস্তাফিজ ১১ বলে ২১ রানে অপরাজিত থেকে কেবল দলের হারের ব্যবধানই কমান। শহিদুল ২৩ রানে নেন ৪ উইকেট। তানভির ২ উইকেট পান ২৯ রানে।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে খুলনার শুরুটা হয় দারুণ। ইনিংসের প্রথম দুটি ডেলিভারিতে মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে ফাইন লেগ দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। একই ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে দুটি দর্শনীয় শটে বাউন্ডারি আদায় করে নেন মেহেদী হাসান মিরাজও। তাতে প্রথম ওভারেই আসে ১৮ রান।

কিন্তু পরের ওভারে জোড়া ধাক্কা খায় দলটি। গতি আর স্যুয়িংয়ের সমন্বয়ে মোস্তাফিজুর রহমান ওভারের শেষ দুই বলে ফেরান মিরাজ ও রাইলে রুশোকে। ৭ বলে ১২ করে মিরাজ হন জহুরুল হকের গ্লাভসবন্দি। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা রুশো গোল্ডেন ডাক মেরে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেন শেন ওয়াটসনকে।

পঞ্চম ওভারে আক্রমণে আসা গ্রেগরিকে ছক্কা মেরে অভ্যর্থনা জানান শামসুর রহমান শুভ। কিন্তু চতুর্থ বলেই পাল্টা জবাব দিয়ে তাকে সাজঘরে পাঠান এই অলরাউন্ডার।

৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেললেও রানের চাকা সচল রাখেন শান্ত ও খুলনার অধিনায়ক মুশফিক। আগের ম্যাচগুলোতে হতাশ করা বাঁহাতি শান্ত এদিন টিকে ছিলেন অনেকটা সময়। তাকে বিদায় করে ৩৯ রানের জুটি ভাঙেন নবি। ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ করেন শান্ত।

এরপর মুশফিক ও নাজিবউল্লাহর জুটিতে খুলনার সংগ্রহ পেরিয়ে যায় ১৮০ রান। মুশফিক এক পাশে হাল ধরে রাখেন, অন্য পাশে চড়াও হন নাজিবউল্লাহ। পঞ্চম উইকেটে তারা যোগ করেন ৮২ রান। ব্যক্তিগত ২০ রানে ওয়াটসনের হাতে জীবন পাওয়া নাজিবউল্লাহ ফেরেন ইনিংসের ১৯তম ওভারে। গ্রেগরির দ্বিতীয় শিকার হয়ে। ২৬ বলের ঝড়ো ইনিংসে ৪১ রান করেন তিনি। মারেন ৬ চার ও ১ ছক্কা।

আসরে তৃতীয় ফিফটি তুলে নেওয়া মুশফিক শেষ ওভারে মোস্তাফিজের ডেলিভারিতে আউট হন ৪৮ বলে ৫৯ রানে। ৪ চারের সঙ্গে ২ ছক্কা হাঁকান তিনি। দুর্দান্ত মোস্তাফিজ ৪ ওভারে ৩ উইকেট নেন ২৮ রানে। গ্রেগরি ২ উইকেট পান ৩৬ রান খরচায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৮২/৭ (শান্ত ৩০, মিরাজ ১২, রুশো ০, শামসুর ১৩, মুশফিক ৫৯, নাজিবউল্লাহ ৪১, ফ্রাইলিঙ্ক ৯, শহিদুল ০*, আমির ১*; মুগ্ধ ০/৩৪, মোস্তাফিজ ৩/২৮, নবি ১/১৬, গ্রেগরি ২/৩৬, ডেলপোর্ট ০/৪০, সঞ্জিত ০/২৬)

রংপুর রেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৩০/৯ (ওয়াটসন ৫, নাঈম ২০, ডেলপোর্ট ৯, গ্রেগরি ৩৪, ফজলে মাহমুদ ৪, নবি ৭, সাদমান ১৬, জহুরুল ১, সঞ্জিত ৫*, মুগ্ধ ০, মোস্তাফিজ ২১*; আমির ১/১৪, ফ্রাইলিঙ্ক ১/২৩, মিরাজ ০/২০, শফিউল ১/১৪, তানভির ২/২৯, শহিদুল ৪/২৩)।

ফল: খুলনা টাইগার্স ৫২ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শহিদুল ইসলাম।

Comments

The Daily Star  | English

Cops gathering info on polls candidates

Based on the findings, law enforcers will assess security needs in each constituency and identify candidates who may pose risks.

14h ago