‘পাকিস্তান চলে যাও’- পুলিশের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড়

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে মন্তব্য করে এবার আলোচনায় এসেছেন দেশটির একজন পুলিশ কর্মকর্তা। উত্তর প্রদেশের মিরাটে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে পাকিস্তান চলে যাওয়ার কথা বলেছেন সেখানকার পুলিশ সুপার।
উত্তর প্রদেশের মিরাটে পুলিশ সুপারের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে আলোচনা। ছবি: এনডিটিভি

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে মন্তব্য করে এবার আলোচনায় এসেছেন দেশটির একজন পুলিশ কর্মকর্তা। উত্তর প্রদেশের মিরাটে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের হুমকি দিয়ে পাকিস্তান চলে যাওয়ার কথা বলেছেন সেখানকার পুলিশ সুপার। তার সাম্প্রদায়িক বক্তব্যকে কেন্দ্র করে এখন হৈচৈ শুরু হয়েছে ভারতে।

এর আগে আন্দোলনকারীদের ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সপ্তাহখানেক আগেই একটি জনসভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, যারা এই আইনের বিরোধিতা করছে তাদের পোশাক দেখেই চেনা যায়।

প্রধানমন্ত্রীর এই বিতর্কিত মন্তব্যের পর এবার পুলিশের দিক থেকেও শোনা গেল সাম্প্রদায়িক বক্তব্য।

আইনের বিরোধিতাকারীদের শক্ত হাতে দমন করতে প্রথম দিন থেকেই তৎপর ছিল ভারতের পুলিশ। শুধুমাত্র মিরাটেই ছয় জন বিক্ষোভকারী গুলিতে নিহত হয়েছেন যাদিও পুলিশ বলছে তারা নাকি বিক্ষোভে গুলি চালায়নি। গতকাল শুক্রবার জুম্মার নামাজের পরও বিক্ষোভ হয়েছে সেখানে। এর পরই শহরের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের উদ্দেশে কথা বলেন পুলিশ সুপার অখিলেশ নারায়ণ সিং। ২ মিনিটেরও কম ওই ভিডিওতে অখিলেশ মুসলিমদের উদ্দেশে হিন্দিতে কথা বলেন যার অর্থ দাঁড়ায় এরকম, “কোথায় যাবেন? এই এলাকাটা তো আমি ঠিক করে ফেলব।” উপস্থিত লোকজন নামাজ শেষ করে ফেরার কথা জানালে তিনি আবার বলেন, “সে ঠিক আছে। নাহলে আপনাদের যারা কালো আর নীল ব্যাজ পরে আছেন, তাদের পাকিস্তানে চলে যেতে বলুন।”

সাম্প্রদায়িক মন্তব্য অব্যাহত রেখে ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, “দেশে থাকতে মন না চাইলে চলে যাও ভাইয়া। থাকবে এখানে আর মন থাকবে অন্য কোথাও!”

ভিডিওতে দেখা যায় অখিলেশ সিং এবং অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা তারপর এগিয়ে যেতে শুরু করেন। বেশ ক্ষুব্ধ দৃষ্টিতেই অফিসার কমপক্ষে তিনবার ওই মুসলিমদের কাছে ফিরে এসে বলেন, “সব বাড়ির সবাইকে আমি জেলে পুরে দেব।”  একেবারে শেষে তাকে বলতে শোনা যায়, “আমি সবাইকে শেষ করে দেব।"

এই ভিডিওর ব্যাপারে গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করা হলে নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন,  “সেখানে অসামাজিক কিছু মানুষ পাকিস্তানপন্থী বক্তব্য দিচ্ছিলেন। আমরা সবাই ওখানে দেখতে এসেছিলাম কারা কারা পাকিস্তানপন্থী বক্তব্য রাখছে।”

উত্তর প্রদেশে গুলিতে ২১ জন নিহত হওয়ার পরও পুলিশের পক্ষে সাফায় দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ। বিক্ষোভের কারণে রাজ্যের আর্থিক যে ক্ষতি হয়েছে তা বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকেই আদায় করার ঘোষণা দিয়েছে তার সরকার। এর মধ্যে ৪৯৮ জনকে তারা সনাক্ত করার কথা বলেছে যাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। সূত্র: এনডিটিভি

Comments

The Daily Star  | English

How Islami Bank was taken over ‘at gunpoint’

Islami Bank, the largest private bank by deposits in 2017, was a lucrative target for Sheikh Hasina’s cronies when an influential business group with her blessing occupied it by force – a “perfect robbery” in Bangladesh’s banking history.

8h ago