সালতামামি ২০১৯: দুর্নীতি দমন কমিশন

রাঘব বোয়ালরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে

২০১৯ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যক্রম মূলত নিম্ন ও মধ্য স্তরের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো।

২০১৯ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কার্যক্রম মূলত নিম্ন ও মধ্য স্তরের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে মামলা করার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো।

একজনের দায়ে আরেকজনকে অভিযুক্ত করা, ঘুষ কেলেঙ্কারিতে দুদক কর্মকর্তা ফেঁসে যাওয়া, প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া এবং রাজনৈতিক নেতা ও সরকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বছর জুড়ে আলোচনায় ছিলো দুদক।

একজনের অপরাধে আরেকজনকে অপরাধী করার মাশুল গুণতে হয়েছিলো পাটকল শ্রমিক জাহালমকে। কোনো অন্যায় বা দুর্নীতি না করে তিন বছর কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন জাহালম।

বছরের মাঝামাঝি সময়ে কমিশন পুনরায় আলোচনায় আসে দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের ঘুষ নেওয়ার বিষয় প্রকাশ্যে এলে।

জুলাইয়ে দুদক সেই পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করে এবং পরবর্তীতে বরখাস্ত করে। পুলিশের ডিআইজি মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অপরাধে এই মামলা করা হয়।

ডিআইজি মিজান এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, তিনি বাছিরকে ঘুষ দিয়েছিলেন যাতে তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে।

অবৈধ ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান দুদককে তার হারানো ইমেজ কিছুটা পুনরুদ্ধারের সুযোগ করে দেয়।

দুর্নীতি দমন কমিশন একজন ব্যবসায়ী, সরকারী কর্মকর্তা এবং ক্ষমতাসীন দলের বেশ কয়েকজন বিতর্কিত নেতা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করে। প্রায় ৪৪৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের জন্য এসব মামলা করা হয়েছে।

বেশ কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ৩৬২ কোটি টাকা এবং প্রায় ৭৮ কোটি টাকার সম্পদও জব্দ করেছে দুদক।

মজার ব্যাপার হলো, গত বছর বাংলাদেশ জুট মিল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) কাঁচা পাট কিনতে সরকারের কাছে ৪৪৬ কোটি টাকা চেয়েছিলো। বিজেএমসি টাকার অভাবে পাট কিনতে সরকারের দ্বারস্থ হয়ে যে পরিমাণ টাকা চেয়েছিলো, প্রায় তারই কাছাকাছি পরিমাণ টাকার অবৈধ সম্পদ পাওয়া যায় ক্যাসিনো বিতর্কিতদের কাছে।

বিজেএমসির প্রত্যাশা ছিলো এই পাট দিয়ে তারা তাদের উৎপাদন চালিয়ে যেতে পারবে। এই আবেদনের বিপরীতে তারা প্রায় ৮০ কোটি টাকা পেয়েছিলো। ফলে উৎপাদন কমাতে হয়।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পরে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ কয়েকবার ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী দুর্নীতিবাজ প্রায় ১৮৭ জনের অবৈধ সম্পদ তদন্তের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তিনি জানান, এর জন্য তারা একটি তালিকা তৈরি করেছেন।

কমিশন সিঙ্গাপুরের দুর্নীতি তদন্ত ব্যুরোকে চিঠি দিয়ে গত পাঁচ বছরে যারা সেদেশের ক্যাসিনোয় জুয়া খেলেছে তাদের তথ্য চেয়েছিলো।

এছাড়াও, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট থেকেও প্রায় দেড় শতাধিক ব্যক্তির ব্যাংকিংয়ের তথ্যও চেয়েছিলো দুদক।

তাদের তালিকায় ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, পঙ্কজ দেবনাথ এবং নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনও রয়েছেন।

তবে সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা করা হয়নি।

দুদকের একটি সূত্র বলেছে, “আমরা সতর্কতার সঙ্গে এগোচ্ছি। আমরা আইন প্রণেতাদের বিরুদ্ধে যেকোনো ব্যবস্থা নেওয়ার আগে তথ্য যাচাই-বাছাই করছি।”

(সংক্ষেপিত, পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে এই Big fish still off anti-graft radar লিংকে ক্লিক করুন)

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi migrant workers in gulf countries

Can we break the cycle of migrant exploitation?

There has been a silent consensus on turning a blind eye to rights abuses of our migrant workers.

8h ago