সীমান্তে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের নির্দেশ

সীমান্তের ভেতরে অন্তত এক কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।
btrc logo

সীমান্তের ভেতরে অন্তত এক কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

গতকাল (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর দেশের চারটি মোবাইল ফোন অপারেটরকে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে।

দ্য ডেইলি স্টারকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, “এটি আমাদের মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নয়। এটি অন্য একটি মন্ত্রণালয় থেকে এসেছে এবং আমরা কেবল তা বাস্তবায়ন করেছি।”

টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জানান, তিন-চারটি মন্ত্রণালয়ের সম্মিলিত আলোচনার ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই বিষয়টিতে নেতৃত্ব দিয়েছে।

“আমাদের রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়টি সরকারের প্রধান বিবেচ্য বিষয় এবং সে কারণেই সরকার এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে,” বলে মন্তব্য করেন টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন গতকাল সন্ধ্যা ৭টা ৪৫ মিনিটে চারটি মোবাইল ফোন অপারেটর থেকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, অনতিবিলম্বে সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে হবে।

বিটিআরসি’র স্পেকট্রাম ম্যানেজমেন্ট বিভাগের উপ-পরিচালক মো. সোহেল রানা স্বাক্ষরিত চিঠিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সীমান্তে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রাখতে বলা হয়।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সীমান্তের এক কিলোমিটারের মধ্যে নেটওয়ার্ক বন্ধ করলে ৩২ জেলার অন্তত এক কোটি গ্রাহক এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

একটি মোবাইল ফোন অপারেটরের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, এর ফলে চারটি অপারেটরের অন্তত দুই হাজার মোবাইল টাওয়ার বন্ধ করতে হবে। আর যেহেতু অনেকগুলো টাওয়ার খুবই দুর্গম এলাকায় রয়েছে সে কারণে পুরোপুরিভাবে টাওয়ারগুলোর নেটওয়ার্ক বন্ধ করতে তাদের এক-দুই দিন সময়ও লাগতে পারে।

“সীমান্তের নানা জায়গায় আকা-বাঁকা আছে। সে কারণে দেশের অভ্যন্তরের তারা নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছিলেন। এখন এগুলো বন্ধ করে দিতে হলে অন্তত কয়েক কিলোমিটার জুড়ে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন থাকবে,” বলছিলেন নাম প্রকাশ করতে রাজি না হওয়া ওই কর্মকর্তা।

তার তথ্য মতে, দেশের মোবাইল টেলিকমের দুই দশকের ইতিহাসে তারা এমন গণহারে টাওয়ারে নেটওয়ার্ক বন্ধ করার মতো ঘটনা দেখেননি।

নানা সময়ে অনেক টাওয়ারে নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করা হলেও এতো বিস্তৃত এলাকায় একযোগে কখনো নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করা হয়নি বলেও জানান তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে বিটিআরসি’র এক পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, “হয়তো নিরাপত্তার বিষয়টিকে মাথায় নিয়ে পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবেই সরকার আগে থেকে সীমান্তের মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দিয়েছে।”

উল্লেখ্য, নাগরিকপঞ্জিকে (এনআরসি) কেন্দ্র করে ভারত থেকে অনেককে বাংলাদেশ পুশব্যাক করা হতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। তার প্রেক্ষিতেই এমন সিদ্ধান্ত বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।

তবে মোবাইল অপারেটরদের ধারণা, সীমান্তে বাংলাদেশি অপারেটরের নেটওয়ার্ক না থাকলেও ভারতীয় অপারেটরের নেটওয়ার্ক থাকবে। এমনকী ভারতীয় অপারেটররা এই সুযোগে আরও খানিকটা এগিয়ে এসে বাংলাদেশের মধ্যে নেটওয়ার্ক নিয়ে আসতে পারে।

তবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, “বরং আগে থেকেই প্রতিবেশীরা সীমান্ত থেকে তাদের নেটওয়ার্ক তুলে নিয়েছেন। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে অহেতুক আশংকার কিছু নেই।”

Comments

The Daily Star  | English

Yunus holds brief meeting with Malaysian PM at Dhaka airport

Following the meeting, they boarded the same car to travel to the bilateral venue

2h ago