তামিমের ফিফটি, আসিফের ঝড়ের পর ওয়াহাবের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং

wahab
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

তামিম ইকবাল পুরো ২০ ওভার ব্যাট করে পেলেন হাফসেঞ্চুরি। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে বিপদ থেকে বাঁচিয়ে আসিফ আলি তুললেন ঝড়। এরপর বল হাতে তোপ দাগলেন ওয়াহাব রিয়াজ। একের পর এক ক্যাচ নিয়ে রেকর্ড গড়লেন বদলি উইকেটরক্ষক জাকের আলি। ছন্দে থাকা রাজশাহী রয়্যালসকে গুঁড়িয়ে ঢাকা প্লাটুন পেল দারুণ জয়।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) মাশরাফি বিন মর্তুজারা ৭৪ রানে জিতেছেন আন্দ্রে রাসেলদের বিপক্ষে। ঢাকার ৫ উইকেটে ১৭৪ রানের জবাবে বল বাকি থাকতে রাজশাহী অলআউট হয় ১০০ রানে।

আট ম্যাচে এটি ঢাকার পঞ্চম জয়। অন্যদিকে, সাত ম্যাচে রাজশাহীর এটি দ্বিতীয় হার।

তামিম করেন অপরাজিত ৬৮ রান। আসিফের ব্যাট থেকে আসে হার না মানা ৫৫ রান। ওয়াহাব ৩.৪ ওভারে ৫ উইকেট নেন ৮ রানে। এনামুল হক বিজয়ের পিঠে ব্যথার কারণে গ্লাভস হাতে মাঠে নামা জাকের ধরেন ছয়টি ক্যাচ।

লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য উড়ন্ত সূচনা পায় রাজশাহী। প্রথম ওভারে মাশরাফিকে ফাইন লেগ-মিড উইকেট দিয়ে চার-ছক্কা মেরে ১৮ রান তোলেন আফিফ। পরের ওভারে স্কয়ার লেগে লিটন ছক্কা হাঁকান মেহেদী হাসানকে। তৃতীয় ওভারে হাসান মাহমুদকে চার-ছয়ে মাঠছাড়া করেন আফিফ। ৩ ওভার শেষ তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৯ রান।

দারুণ জমজমাট একটি লড়াই দেখতে পাওয়ার প্রত্যাশার সেখানেই ইতি। চতুর্থ ওভারে বল হাতে নিয়ে সব এলোমেলো করে দেন ওয়াহাব। মেডেনসহ নেন ৩ উইকেট। তার প্রথম ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে পরাস্ত হন লিটন। তিনে উঠে আসা অলক কাপালি খোঁচা মেরে ফিরে যা ২ বল পর। ৩ বল পর শোয়েব মালিকের গ্লাভস ছুঁয়ে বল জমা পড়ে বদলি উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। সবগুলো ক্যাচই নেন জাকের আলি।

সঙ্গী হারিয়ে ছটফট করতে থাকা আফিফের ইনিংস শেষ হয় লুইস রিসকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে অনেক ওপরে উঠে যাওয়া ক্যাচটিও ধরেন জাকের। আফিফ করেন দলের সর্বোচ্চ ২৩ বলে ৩১ রান। এরপর আসিফের দুর্দান্ত থ্রোতে রবি বোপারাও ফেরেন দ্রুত।

রাজশাহী এরপর তাকিয়ে ছিল দলনেতা রাসেলের দিকে। কিন্তু তিনিও বিপদের দিনে ত্রাতা হতে পারেননি। ১১তম ওভারে মাহমুদের দারুণ শেষ ডেলিভারিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পঞ্চম ক্যাচটি নেন জাকের। গড়ে ফেলেন বিপিএলের এক ম্যাচে উইকেটরক্ষক হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড। আগের কীর্তি ছিল রনি তালুকদারের। তিনি ২০১৫ বিপিএলে নিয়েছিলেন চারটি ক্যাচ।

১৩তম ওভারে ফিরেই আবার উইকেটের দেখা পান পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসার ওয়াহাব। ফেরান নাহিদুল ইসলামকে। এই ক্যাচটি নিয়ে বিপিএলের এক ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ছয়টি ডিসমিসালের রেকর্ডও নিজের করে নেন জাকের, যিনি ছিলেন না একাদশেই!

রাজশাহীর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে কামরুল ইসলাম রাব্বিকে বোল্ড করে ৫ উইকেট পূরণ করেন ওয়াহাব। ২৪৩ টি-টোয়েন্টিতে এটি তার দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংও বটে।

এর আগে ভালো শুরু না পেলেও স্কোর বোর্ডে ১৭৪ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ দাঁড় করায় ঢাকা। ৮৪ রানে ৫ উইকেট খুইয়ে ফেলা দলটি অবিচ্ছিন্ন ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে পায় ৪৬ বলে ৯০ রান। তামিম-আসিফ মিলে শেষ ৫ ওভারে যোগ করেন ৬২ রান।

ঢিলেঢালা ব্যাটিংয়ে ৪৪ বলে ফিফটি পূরণ করা তামিম ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলেন। শেষ দিকে গতি বাড়িয়ে ৫২ বলে ৬৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। মারেন ৪ চার ও ৩ ছয়। পাকিস্তানি আসিফ অবশ্য শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী। তিনি হাফসেঞ্চুরি পান ২৪ বলে। সমান ৪টি করে চার-ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২৮ বলে ৫৫ রানে।

রানের লাগাম নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারার পেছনে রাজশাহীর দায়ও কম নয়। তামিম-আসিফ দুজনই একবার করে জীবন পান। ব্যক্তিগত ২৩ রানে আসিফের ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ঠিক ৫০ রানে ব্যাট করতে থাকা তামিমের ক্যাচ ফেলে দেন আফিফ।

রাজশাহী অধিনায়ক রাসেল ব্যবহার করেন সাত বোলার। ১৩তম ওভারে পর পর দুটি ডেলিভারিতে আরিফুল হক ও মাশরাফিকে ফেরানো ফরহাদ রেজা সবচেয়ে সফল। তবে তিনি ছিলেন বেজায় খরুচে। ৩ ওভারে দেন ৪৪ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা প্লাটুন: ২০ ওভারে ১৭৪/৫ (তামিম ৬৮*, এনামুল ১০, রিস ৯, মেহেদী ২১, আরিফুল ৭, মাশরাফি ০, আসিফ ৫৫*; রাসেল ১/৩৭, ইরফান ০/২৯, আফিফ ০/১২, মালিক ১/১৩, রাব্বি ০/২১, বোপারা ১/১৭, ফরহাদ ২/৪৪)

রাজশাহী রয়্যালস: ১৬.৪ ওভারে ১০০ (লিটন ১০, আফিফ ৩১, কাপালি ০, মালিক ০, বোপারা ১০, নাহিদুল ১৪, রাসেল ৭, ফরহাদ ০, তাইজুল ৮, রাব্বি ৭, ইরফান ১*; মাশরাফি ০/৩০, মেহেদী ০/৮, মাহমুদ ১/২৪, ওয়াহাব ৫/৮, রিস ১/১১, শাদাব ১/৯)

ফল: ঢাকা প্লাটুন ৭৪ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: ওয়াহাব রিয়াজ।

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh women retain SAFF glory

Bangladesh retained the title of SAFF Women's Championship with a 2-1 win against Nepal in an entertaining final at the Dasharath Stadium in Kathmandu today. 

14m ago