আমলা অনুভব করছিলেন, তার সময়টা শেষ
ফিটনেসে ঘাটতি নেই, মানসিকভাবেও চাঙা। তার যে সামর্থ্য, হাশিম আমলা অনায়াসে আরও বছর দুয়েক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে যেতেই পারতেন। কিন্তু বিশ্বকাপের পর এই ব্যাটসম্যান অনুভব করলেন, তার সময়টা শেষ। আচমকাই তাই দিয়ে দেন অবসরের ঘোষণা। তার মতে, সবকিছুরই একটা সময় আছে। তিনি থামতে চেয়েছিলেন এমন ভালো সময়েই।
অবসর পরবর্তী এই দক্ষিণ আফ্রিকান খেলে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ। ক্যারিয়ারের এই ধাপও রোমাঞ্চ দিচ্ছে তাকে। গেল অগাস্টে অবসর নেওয়ার পর আমলা খেলেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টেন লিগে, এবার ফাঁকা সময় পেয়ে বিপিএল খেলতে চলে এসেছেন বাংলাদেশে। আগামীকাল শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) খুলনা টাইগার্সের হয়ে সিলেটেই শুরু হবে আমলার বিপিএল ক্যারিয়ার। তার আগের দিন সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ফাঁকে কথা বলেছেন নিজের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে।
দেড় যুগের ক্যারিয়ারে নয় হাজারের উপর টেস্ট রান, আট হাজার ছাড়ানো ওয়ানডে রান। নান্দনিক ব্যাটিংয়ের পসরা সাজানোর পাশাপাশি ছিলেন ধারাবাহিকতার প্রতিচ্ছবি। দশ হাজার টেস্ট রান তো নাগালের মধ্যেই ছিল। চাইলে কি আরও কদিন চালিয়ে যাওয়া যেত না? আমলা পরিসংখ্যান সরিয়ে এক্ষেত্রে শুনেছেন নিজের মনের কথা, ‘নাহ, আমার সময় শেষ হয়ে গেছে। সব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারই একটা সময় এটি অনুভব করে। বিশ্বকাপের পর আমি কিছুটা সময় নিয়েছি, কাছের মানুষদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। শরীর যদিও বলছে, আরও কয়েক বছর খেলতে পারি, মানসিকভাবেও চাঙা আছি, কিন্তু সবকিছুরই একটা সময় আছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হিসেবে ভালো সময় কাটিয়েছি। তবে একটা পর্যায়ে থামতেই হয়। আমি কৃতজ্ঞ যে এত সময় ধরে খেলতে পেরেছি এবং ভালো সময়েই থামতে চেয়েছি।’
ওয়ানডেতে দ্রুততম ছয় হাজার ও সাত হাজার রানের রেকর্ড আছে, দ্বিতীয় দ্রুততম আট হাজার রানের রেকর্ড আমলার। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সাদা পোশাকেই বেশি ঝলমল করতেন আমলা। নয় হাজারের উপর রান করেছেন, ২৮ সেঞ্চুরি আছে। সেসব পেছনে পড়ে আছে। আমলার অবশ্য নেই কোনো খেদ, ‘না, টেস্ট ক্রিকেট মিস করছি না। যেটা বললাম যে একটা পর্যায়ে উপলব্ধি হয় যে যথেষ্ট খেলেছি। আমার কোনো আক্ষেপ নেই। ক্যারিয়ার নিয়ে খুবই খুশি, খৃবই কৃতজ্ঞ। খেলাটায় আমার যে অভিজ্ঞতা, সেটি ভাগাভাগি করতে সবসময়ই উপভোগ করি। এখন সময় নতুন অধ্যায়ের।’
খুলনা টাইগার্সে আমলা পাচ্ছেন স্বদেশী রবি ফ্রাইলিঙ্ক আর রাইলি রুশোকে। দলে আছেন অনেক দিনের চেনা মুশফিকুর রহিম। তাদের সঙ্গে বিপিএলে সময়টা দারুণ উপভোগ্য হওয়ার আশায় ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান, ‘আমি উপভোগ করছি। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়ই রোমাঞ্চকর। যতটা সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছি, আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। আমি সেজন্য কৃতজ্ঞ। এখন আরেকটি অধ্যায়। বিপিএল খেলার সুযোগ পেয়েছি। এত বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততার কারণে সেভাবে সুযোগ হয়ে ওঠেনি। এবার সময় এসেছে এবং এখানে আসতে পেরে ভালো লাগছে।’
Comments