রংপুরের জয়ে শেন ওয়াটসনের ঝড়
৫,১,৭ ও ২। বঙ্গবন্ধু বিপিএলে শেন ওয়াটসনের শেষ চারটি ইনিংস। অথচ বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে আনা এ অসি তারকার রংপুর র্যাঞ্জার্সের প্রত্যাশাটা ছিল খুব বড়। তবে পঞ্চম ম্যাচে এসে রানের দেখা পেয়েছেন। খেলেছেন ঝড়ো এক ইনিংস। তার ব্যাটে চড়েই সিলেট থান্ডারকে হারিয়ে নকআউট পর্বে খেলার স্বপ্ন টিকিয়ে রেখেছে রংপুর। সিলেটের মাঠেই স্বাগতিকদের ব্যর্থতার বৃত্তে আবদ্ধ রেখে ৩৮ রানের বিশাল জয় তুলে নেয় দলটি।
অথচ এদিন টসটা জিতেছিল সিলেটই। বেছে নেয় বোলিং। আগে ব্যাট করার সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগায় রংপুর। দুই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম ও অধিনায়ক শেন ওয়াটসন দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। ওপেনিং জুটিতেই আসে ৭৭ রান। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের শুরুটা করেছিলেন নাঈম। প্রথম দুই ওভারেই জোড়া বাউন্ডারিতে শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে হাত খোলেন ওয়াটসন। নাঈম হাসানের সপ্তম ওভারে দুটি করে চার ও ছক্কা মারেন ওয়াটসন। নাঈমকে ফিরিয়ে এ জুটি ভাঙেন নাঈম।
নাঈমের বিদায়ের পর ক্যামেরুন ডেলপোর্টকে নিয়ে ৬১ রানের আরও একটি দারুণ জুটি গড়েন অধিনায়ক। তাতে বড় সংগ্রহের পথে ছোটে দলটি। এরপর অবশ্য ইবাদত হোসেন ১৫তম ওভারে বল করতে এসে জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে রানের গতিতে কিছুটা লাগাম দিয়েছিলেন। তবে শেষ দিকে মোহাম্মদ নবি ও ফজলে মাহমুদও ঝড় তোলেন। আর শেষ ওভারে বেশ অনিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সান্তোকি। দেন ২৪ রান। সবমিলিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৯৯ রান সংগ্রহ করে দলটি।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৮ রানের ইনিংস খেলেন ওয়াটসন। ৩৬ বলে গড়া এ ইনিংসে ৬টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন অধিনায়ক। ৩৩ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪২ আসে নাঈম শেখের ব্যাট থেকে। ডেলপোর্ট ২৫ ও মোহাম্মদ নবি ২৩ রান করেন। শেষ দিকে ৮ বলে ১টি চার ও ছক্কায় ১৬ রান করেন ফজলে মাহমুদ। সিলেটের পক্ষে ২৮ রানের খরচায় ২টি উইকেট নেন ইবাদত।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা খুব একটা খারাপ ছিল না সিলেটের। ছোট ছোট জুটিতে ৩ উইকেটে ১২৭ রান তুলে ফেলেছিল দলটি। কিন্তু এরপর দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে তারা। ১৮ রানের ব্যবধানেই হারায় ৪টি উইকেট। ফলে বড় চাপে পড়ে যায় দলটি। অবশ্য এক প্রান্ত আগলে রেখে দলের আশা জিইয়ে রেখেছিলেন শেরফেন রাদারফোর্ড। তবে অনেকটা আলসেমি করে আউট হন এ তারকা। রান নিতে গিয়ে ব্যাট না দৌড়ে ঢুকতে গেলেও পা শূন্যে থাকায় রান আউট হয়ে যান এ ক্যারিবিয়ান।
এরপর বাকী ব্যাটসম্যানরা কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেছেন। ফলে পাঁচ বল বাকী থাকতেই ১৬১ রানে গুটিয়ে যায় দলটি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬০ রানের ইনিংস খেলেন রাদারফোর্ড। ৩৭ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় এ রান করেন এ ক্যারিবিয়ান। এছাড়া ৩০ রানের ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ মিঠুন। রংপুরের পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও লুইস গ্রেগরি।
এ জয়ে ১০ ম্যাচে ৫টি জয়ে ১০ পয়েন্ট হলো রংপুরের। উঠে এসেছে তালিকার পঞ্চম স্থানে। অন্যদিকে আগেই বিদায় নেওয়া সিলেটের এটি নবম পরজায়। ১০ ম্যাচে মাত্র ১টি ম্যাচ জিতেছে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রংপুর র্যাঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৯৯/৫ (নাঈম শেখ ৪২, ওয়াটসন ৬৮, ডেলপোর্ট ২৫, গ্রেগরি ১৫, নবি ২৩, ফজলে ১৬*, আল-আমিন ০*; সান্তোকি ১/৫৬, ইবাদত ২/৩০, রাদারফোর্ড ১/২৮, নাঈম ০/২১, মনির ১/২৫, গাজী ০/৩৪)।
সিলেট থান্ডার: ১৯.১ ওভারে ১৬১ (ফ্লেচার ১৯, মজিদ ৭, মিঠুন ৩০, রাদারফোর্ড ৬০, শফিক ১০, গাজী ১, রনি ০, সান্তোকি ৬, নাঈম ১২, ইবাদত ০*, মনির ০; সানি ০/১৮, মোস্তাফিজ ২/১৮, তাসকিন ২/৩৯, গ্রেগরি ২/২৭, নবি ১/২৭, ডেলপোর্ট ১/২৫)।
ফলাফল: রংপুর র্যাঞ্জার্স ৩৮ রানে জয়ী।
Comments