এক স্টেডিয়ামে দুই মাঠ
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের মিডিয়া ভবনের ঠিক পেছনেই ছিল সুউচ্চ টিলা। ওই টিলার চূড়ায় উঠলে দেখা যেত মাঠের খেলাও। সেটি এখন আর নেই। ওই জায়গায় মিডিয়া ভবনকে সেতু দিয়ে জোড়া লাগিয়েছে আরেকটি ভবন, তার সামনেই তৈরি হচ্ছে সবুজ গ্যালারি দিয়ে ঘেরা আরেকটি মাঠ। আউটার স্টেডিয়াম নামে পরিচিতি পেলেও পুরো খেলা চালানোর মতো ব্যবস্থা নিয়ে গড়ে উঠছে গ্রাউন্ড-২।
এমনিতে দেশের সবচেয়ে সুন্দর ক্রিকেট ভেন্যু হিসেবে তকমা পেয়েছে লাক্কাতুরা চা বাগান ঘেরা সিলেটের মাঠ। শুরুতে যে পরিকল্পনা ছিল তার কিছুটা অদল-বদল হয়েছে। প্রকৃতির কিছু ক্ষতিসাধনও হয়েছে। তা পুষিয়ে দিতেই যেন দেখা মিলল তৈরি হতে যাওয়া পরিকল্পিত এই অবকাঠামোর।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও স্থানীয় সংগঠক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ঘুরে ঘুরে দেখালেন সমস্ত কর্মযজ্ঞ। একই স্টেডিয়াম চত্বরে মিডিয়া বক্সের দুই পাশে নির্দিষ্ট মাপের দুটি মাঠ, বিশ্বেই এমনটা খুব বেশি নেই।
নগরীর বাদাম বাগিচা এলাকার মিডিয়া গেট দিয়ে ঢুকতেই চোখ পড়বে তৈরি হচ্ছে নতুন মাঠ। গড়ে চারপাশে ৭০ মিটারের মতো সীমানা এই মাঠে, মাঝে তৈরি হচ্ছে কয়েকটি উইকেট। এই মাঠে কোনো কংক্রিটের গ্যালারি থাকছে না। কেটে ফেলা সুউচ্চ টিলাকে চারপাশে ছড়িয়ে দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সবুজ গ্যালারি, সবুজায়নের জন্য লাগানো হবে আরও গাছ। এক পাশের সবুজ গ্যালারির আদল অনেকখানি দৃশ্যমান, কাজ চলছে অন্য পাশেও। মিডিয়া বক্সের সঙ্গে সেতু দিয়ে যে ভবন যুক্ত করা হয়েছে, সেখানে খেলা চালিয়ে নেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে দুটি ড্রেসিং রুম, খেলোয়াড়-আম্পায়ার-স্কোরারদের জন্য ডাইনিং রুম ও হসপিটালটি বক্স ইত্যাদি। এই ভবনের ছাদে থাকছে সাংবাদিকদের জন্য বসে খেলা দেখার ব্যবস্থা।
দুই মাঠের মাঝামাঝি জায়গায় ৩০ জন খেলোয়াড়ের আবাসনের সুবিধা নিয়ে তৈরির অপেক্ষায় আছে একটি ডরমিটরিও। বিসিবি পরিচালক শফিউল আলম জানালেন, মূলত স্থানীয় লিগের খেলা নির্বিঘ্নে চালাতে কাজে লাগবে নতুন গ্রাউন্ড, ‘সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে গ্রাউন্ড-১, গ্রাউন্ড-২ এইভাবেই আমরা নামকরণ করছি। এখানে জাতীয় লিগের প্রথম শ্রেণির ম্যাচ আয়োজনের সমস্ত সুবিধা থাকবে। এছাড়া সিলেটে স্থানীয় লিগের জন্য মাঠ ফাঁকা পাওয়া যায় না। এটি হয়ে গেলে এখানে সব খেলা দেওয়া যাবে। আশা করছি, আগামী জুন মাসের মধ্যে মাঠটি প্রস্তুত হয়ে যাবে।’
সংস্কার হয়েছে মূল মাঠের সবুজ গ্যালারিরও। নামে সবুজ হলেও তৈরির পর থেকেই সবুজের আধিক্য এখানে ছিল কম। খাড়া টিলা থাকায় দর্শকদের বসাও আরামদায়ক ছিল না। সেটি ঠিক করতে খাড়া আদল কমিয়ে আনা হয়েছে, তাতে সবুজ গ্যালারি এখন একেবারেই ন্যাড়া। তবে নাদেল জানালেন এখানে শিগগিরই ঘাস লাগিয়ে সবুজায়নের ব্যবস্থা করবেন তারা।
Comments